চাপে পড়ে দ্রুত মামলা হয়, তদন্ত এগোয় না

>
  • দেশজুড়ে আলোচিত ১২টি সড়ক দুর্ঘটনার মধ্যে বিচার শুরু মাত্র ১টির
  • তদন্তে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন মামলার বাদী ও ভুক্তভোগীদের
  • আলোচিত ১২টি সড়ক দুর্ঘটনার মামলায় মোট আসামি ২৬ জন (২ জন মৃত)
  • তাঁদের মধ্যে ১৩ জনকে এখনো গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি
  • ছয়টি ঘটনাতেই চালক বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালাচ্ছিলেন
  • দুটি গাড়ির চালক মুঠোফোনে কথা বলছিলেন
  • বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে ২০১৬ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে ২৪,৯৫৪

আড়াই মাস আগে পঞ্চগড় সদর উপজেলার দশমাইল এলাকায় বাস-ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে প্রাণ হারান ১০ জন। এ ঘটনায় যথারীতি মামলা হয়। কিন্তু দুর্ঘটনার এত দিন পরও পুলিশ বাসচালককে শনাক্ত করতে পারেনি, ট্রাকচালকের শুধু নাম জানতে পেরেছে। এই অবস্থায় সড়ক দুর্ঘটনায় করা মামলার তদন্ত কতটা আন্তরিকতার সঙ্গে পুলিশ করছে, সে প্রশ্ন উঠেছে।

গত বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৬ অক্টোবর পর্যন্ত আট মাসে দেশজুড়ে আলোচিত ১২টি সড়ক দুর্ঘটনার মামলার তথ্য পর্যালোচনা করেছে প্রথম আলো। দেখা গেছে, চাপের মুখে এসব ঘটনায় দ্রুত মামলা হয়েছে ঠিকই, কিন্তু তদন্ত এগোচ্ছে না। ১২টির মধ্যে শুধু একটি মামলার বিচার শুরু হয়েছে। অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে দুটি মামলায়। যদিও এই দুই মামলার বাদীরা বিষয়টি জানেন না। অভিযোগপত্র দেওয়ার আগে বাদীকে জানানোর নিয়ম থাকলেও তা মানা হয়নি। বাকি ৯টি মামলার তদন্ত কবে শেষ হবে, তা দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তারা স্পষ্ট করে কিছু বলতে পারেননি।

১২টি মামলার মধ্যে যেটির বিচার চলছে, সেই দুর্ঘটনা গত বছরের ২৯ জুলাইয়ের। সেদিন রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কের কুর্মিটোলা এলাকায় বাসচাপায় প্রাণ হারায় দুই কলেজশিক্ষার্থী আবদুল করিম (রাজীব) ও দিয়া খানম (মীম)। এই দুর্ঘটনার পর স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা নিরাপদ সড়কের দাবিতে রাস্তায় নেমে আসে। তখন সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে বলা হয়, শিশুরা ‘চোখ খুলে’ দিয়েছে। আর ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া বলেছিলেন, শিক্ষার্থীরা পুলিশকে একটি নৈতিক ভিত্তির ওপর দাঁড় করিয়ে দিয়েছে।

কিন্তু সড়ক দুর্ঘটনার মামলার তদন্তের অগ্রগতি খুঁজতে গিয়ে নৈতিক ভিত্তির ওপর আসলেই পুলিশ দাঁড়িয়েছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কারণ, আসামিদের গ্রেপ্তার ও অভিযোগপত্র জমা দেওয়ায় পুলিশ ‘ধীরে চলো’ নীতিতে চলছে। ফলে এসব মামলার বিচারও শুরু হচ্ছে না।

পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, ১২টি দুর্ঘটনার মামলায় মোট আসামি ২৬ জন (২ জন মৃত)। তাঁদের মধ্যে ১৩ জনকে এখনো গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। আর গ্রেপ্তার করা ১১ জনের মধ্যে জামিনে ৫ জন। পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, জামিনে বেরিয়ে যাওয়ার পর থেকে পলাতক রয়েছেন ২ জন।

এসব দুর্ঘটনায় ভুক্তভোগী ছয়জনের সঙ্গে কথা বলেছে প্রথম আলো। তাঁরা প্রত্যেকে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। মামলার অগ্রগতি সম্পর্কেও তাঁদের কোনো তথ্য পুলিশ উদ্যোগী হয়ে কখনো জানায়নি। সড়ক দুর্ঘটনার বিচার কর্তৃপক্ষ আসলেই চায় কি না, তা নিয়েও হতাশায় ভুগছেন তাঁরা।

দুর্ঘটনার মামলার তদন্তের গাফিলতি সম্পর্কে জানতে চাইলে নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন প্রথম আলোকে বলেন, এটা খুব দুঃখজনক। যাঁরা সড়ক দুর্ঘটনায় স্বজন হারিয়েছেন বা যাঁরা পঙ্গু হয়েছেন, বিচারটা তাঁদের জন্য সান্ত্বনা। এটা মনে রাখা দরকার। সড়ক দুর্ঘটনার বিচার দ্রুত হওয়‌া খুব জরুরি।

আলোচিত দুর্ঘটনাগুলোর কারণ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ছয়টি ঘটনাতেই চালক বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালাচ্ছিলেন, দুটি গাড়ির চালকের লাইসেন্সের ত্রুটি ছিল, ফিটনেস সনদ ছিল না দুটির, তিনটির রুট পারমিট ছিল না, একটি ট্রাকের নকশায় ত্রুটি ছিল, দুটি গাড়ির চালক মুঠোফোনে কথা বলছিলেন। এর মধ্যে ঢাকার ভেতরে ঘটেছে আটটি দুর্ঘটনা (৩ এপ্রিল থেকে ২৯ জুলাইয়ের মধ্যে ঘটেছে)। বাকি চারটি দুর্ঘটনা ঘটেছে নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুরে (২৫ ফেব্রুয়ারি), কুষ্টিয়ায় (২৮ আগস্ট), নাটোরের বনপাড়ায় (২৫ আগস্ট) ও পঞ্চগড়ের দশমাইল (২৬ অক্টোবর) এলাকায়।

গত ডিসেম্বরে প্রকাশিত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৬ সালে বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ২৪ হাজার ৯৫৪ জন মারা গেছে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান তৃতীয়।

অবশ্য সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর হার কমিয়ে আনার অঙ্গীকার করেছে সরকার। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ইশতেহারে আওয়ামী লীগ অঙ্গীকার করেছে, ‘নিরাপদ সড়ক আইন, ২০১৮’ প্রণয়ন করা হয়েছে। এই আইন প্রয়োগের মাধ্যমে দুর্ঘটনা ন্যূনতম পর্যায়ে নামিয়ে আনার জন্য সর্বাত্মক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। এ ছাড়া নিরাপদ সড়কের জন্য লাইসেন্সবিহীন চালকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ, ফিটনেসবিহীন গাড়িকে পারমিট না দেওয়া, চালকদের লাইসেন্স প্রদানে যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করার কথা বলেছে দলটি।

দুই বাসের ফাঁকে আটকে পড়েছিল কলেজছাত্র রাজীব হোসেনের ডান হাত। বাসের চাপে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল হাতটি। দুই সপ্তাহ পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। ফাইল ছবি
দুই বাসের ফাঁকে আটকে পড়েছিল কলেজছাত্র রাজীব হোসেনের ডান হাত। বাসের চাপে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল হাতটি। দুই সপ্তাহ পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। ফাইল ছবি



হাত হারানো রাজীবের মৃত্যুর তদন্ত কবে শেষ?

গত বছরের ৩ এপ্রিল সরকারি তিতুমীর কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী মো. রাজীব হোসেন স্বজন পরিবহন ও বিআরটিসি বাসের চাপায় হাত হারান। দুই সপ্তাহ পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। ওই ঘটনায় রাজীব নিজেই বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় মামলা করেছিলেন। স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে আদালত রাজীবের ঘটনাটি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন একটি বিশেষজ্ঞ কমিটিকে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্ঘটনা গবেষণা প্রতিষ্ঠানের পরিচালক মো. মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি দল দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধান করে প্রতিবেদন জমা দিয়ে দিয়েছেন। তাঁরা বলেছেন, স্বজন পরিবহনের বাসের চালক মো. খোরশেদের দায় এই মৃত্যুর জন্য বেশি, তবে বিআরটিসি বাসের চালক ওয়াহেদ আলী দায় এড়াতে পারেন না। দুই গাড়িচালকের কারোরই ভারী যানবাহন চালানোর অভিজ্ঞতা ছিল না।

ঘটনার দিন বাংলামোটর থেকে দুটি বাস প্রতিযোগিতা করছিল। সার্ক ফোয়ারার কাছে বিআরটিসির বাসটি সিগন্যালে দাঁড়ায়। তখন সড়কদ্বীপের সঙ্গে বাসটির দূরত্ব যখন চার-পাঁচ ফুট, তখন ওই জায়গায় ঢুকে যাওয়ার চেষ্টা করে স্বজন পরিবহনের গাড়িটি। তাতেই বিআরটিসি বাসে দাঁড়িয়ে থাকা রাজীব হাত হারান, হাত যখন দুই বাসের মাঝখানে, তিনি তখন স্বজন পরিবহনের সামনে পড়ে ছিলেন। দুই আসামিকেই পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। তাঁরা এখনো কারাগারে। কিন্তু শাহবাগ থানার পুলিশ অভিযোগপত্র জমা দিতে পারেনি।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আফতাব আলীর বদলির পর তদন্তের দায়িত্ব নিয়েছেন ইদ্রিস আলী। তিনি বলেন, সব কাজ শেষ। দ্রুতই অভিযোগপত্র দেওয়া হবে। তবে রাজীবের খালা জাহানারা বেগম বলেন, এই প্রতিশ্রুতি তিনি বহুদিন ধরে শুনছেন। কিন্তু শিগগিরই মানে কবে তা কেউ বলে না।

দুর্ঘটনায় আহত হওয়া ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক দেলাওয়ার হোসেনের মামলাটিরও তদন্ত করছে শাহবাগ থানা। গত বছরের ১৬ এপ্রিল তাঁর পায়ের ওপর দিয়ে বাস চালিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে চালক নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে। নজরুল জামিনে। অভিযোগপত্র চূড়ান্ত করতে পারেনি পুলিশ।

দুর্ঘটনায় ঢাকা ট্রিবিউন-এর কর্মকর্তা নাজিমউদ্দীনের মৃত্যু (১৭ মে) ও আয়েশা খাতুনের পঙ্গু হওয়ার (৫ এপ্রিল) মামলার অভিযোগপত্র দিয়েছে বলে পুলিশ দাবি করেছে। সে খবর মামলার বাদী নাজিমউদ্দীনের ভায়রা মো. আলিম কিংবা আয়েশা খাতুনের স্বামী তানজির আহমেদ জানেন না।

যাত্রাবাড়ীতে মেয়র হানিফ উড়ালসড়কে রেন্ট এ কারের চালক রাসেল সরকারের ওপর গ্রিন লাইনের চালক বাস উঠিয়ে দিয়েছিলেন গত ২৮ এপ্রিল। পা কাটা গেছে তাঁর। কৃত্রিম পা লাগিয়েছেন রাসেল। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি পঙ্গু হয়ে বেকার হয়ে গেলাম। বিচারটা হলো না। আইও (তদন্ত কর্মকর্তা) তো ফোনই ধরে না।’

বড় অল্প সময়ে পুতুল খেলার দিন ফুরিয়ে গেল আকিফার। ফাইল ছবি।
বড় অল্প সময়ে পুতুল খেলার দিন ফুরিয়ে গেল আকিফার। ফাইল ছবি।



কুষ্টিয়ার আকিফার মৃত্যুতে হত্যা মামলা, তিন আসামিই পলাতক

কুষ্টিয়ায় আট মাসের শিশু আকিফা মায়ের কোলে চড়ে রাস্তা পার হওয়ার সময় গঞ্জেরাজ ফয়সাল পরিবহনের ধাক্কায় গুরুতর আহত হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ৩১ আগস্ট মারা যায় সে। ওই ঘটনায় আকিফার বাবা হারুন অর রশিদ কুষ্টিয়া মডেল থানায় মামলা করেন। ঘটনার দু-এক দিনের মাথায় ফয়সাল গঞ্জেরাজ পরিবহনের মালিক ইউনুস মাস্টার গ্রেপ্তার হন। এরপর গাড়িচালক খোকন আত্মসমর্পণ করেন। গাড়ির সুপারভাইজার জয়নালকে পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারেনি।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সুমন কাদেরি প্রথম আলোকে বলেন, মালিক ও চালক দুজনেই গ্রেপ্তার হয়ে জেলে যান। জামিন পেয়ে দুজনেই বেরিয়ে যান। পরে গাড়ির চালক আবারও গ্রেপ্তার হন। দ্বিতীয় দফা জামিন পাওয়ার পর থেকে তিনি পলাতক, বাসের মালিকও পলাতক। অভিযোগপত্র কবে দেবেন বলতে পারেননি।

ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁর টিপুরদী এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় দুমড়েমুচড়ে যাওয়া বাস। ফাইল ছবি।
ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁর টিপুরদী এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় দুমড়েমুচড়ে যাওয়া বাস। ফাইল ছবি।



সোনারগাঁয়ের সড়ক দুর্ঘটনার আসামি ধরা পড়েননি, নাটোরে এক দিনও জেল খাটেননি

গত ২৬ ফেব্রুয়ারি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের টিপুরদিতে থেমে থাকা কনটেইনারবাহী গাড়ির সঙ্গে ধাক্কা লাগে কুমিল্লাগামী বাসের। দুর্ঘটনায় ১০ যাত্রী নিহত হন। তাঁদের অভিযোগ, চালক অনবরত উচ্চ স্বরে মুঠোফোনে কথা বলছিলেন। প্রথমে একটি রিকশাকে ধাক্কা দিয়ে উল্টে ফেলে দেন তিনি, তার ১০-১৫ মিনিটের মাথায় ধাক্কা দেন কনটেইনারকে। এই ঘটনায় আসামি একজন, বাসটির চালক। দুর্ঘটনার পর এখনো চালককে গ্রেপ্তার করা যায়নি।

গত বছরের ২৫ আগস্ট নাটোরের বনপাড়ায় বাস ও লেগুনার সংঘর্ষে লেগুনার চালক ও সহকারীসহ ১৫ জন নিহত হন। মহাসড়কে লেগুনা চলাচল নিষিদ্ধ হলেও চলছিল। ওই ঘটনায় লেগুনাস্ট্যান্ডের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, মৃত লেগুনাচালক ও তাঁর সহকারীসহ সাতজনের নামে মামলা হয়। জীবিত আসামিরা আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনে আছেন। এই মামলায় কবে অভিযোগপত্র দেওয়া হবে, তা নিশ্চিত করে বলতে পারেননি বনপাড়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল আলিম শিকদার।

এ ছাড়া গত ২৬ অক্টোবর পঞ্চগড়ের দশমাইল এলাকায় বাস-ট্রাকের সংঘর্ষে ১০ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় আসামি দুই চালক। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হাইওয়ে থানার উপপরিদর্শক রফিকুল ইসলাম জানান, দুই চালককে অজ্ঞাত দেখিয়ে মামলা হয়েছিল। ট্রাকচালক রফিকুল ইসলাম রাজীবের নাম জানা গেছে, বাসচালককে শনাক্ত করা যায়নি। তদন্ত এখনো চলছে।

বিচার হলে সতর্ক হতো সবাই
সড়ক দুর্ঘটনার বিচার হলে রাস্তায় একটা ইতিবাচক প্রভাব পড়ত বলে মনে করেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক মো. মিজানুর রহমান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, যেকোনো অপরাধের বিচার হওয়া দরকার। বিচার হলে গাড়িচালকেরাও সতর্ক হতেন। তা ছাড়া সড়ক দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে গাড়ির মালিকেরা অনেক সময় চালকদের ফিটনেসবিহীন গাড়ি চালাতে বাধ্য করেন, চালকের লাইসেন্স থাকুক বা না থাকুক, সেটাও পরোয়া করেন না। দুর্ঘটনায় কার দায় কতটুকু, সেটা নির্ধারণ করে বিচার হওয়া দরকার।

[প্রতিবেদনে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেছেন নাটোরের নিজস্ব প্রতিবেদক মোক্তার হোসেন, কুষ্টিয়ার তৌহিদী হাসান, সোনারগাঁয়ের মনিরুজ্জামান মনির ও পঞ্চগড়ের রাজিউর রহমান]