গণিত হোক সব ভালোর হাতিয়ার

>

উৎসবমুখর পরিবেশে বাছাইয়ে সাত সহস্রাধিক শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণ। বাছাইয়ে বিজয়ীরা অংশ নেবে আঞ্চলিক পর্বে।

গণিত হোক সব ভালো কাজের হাতিয়ার। অনেকের কাছে গণিত যদিও ভয়ের বিষয়; কিন্তু গণিতের বিকল্প কিছু নেই। যারা গণিতে আগ্রহী না, তাদের গণিতভীতি দূর করতেই এই গণিত অলিম্পিয়াডের আয়োজন। গণিতের প্রতি আকর্ষণ হোক এ উৎসবের অঙ্গীকার। ফেনীতে গতকাল শুক্রবার আনন্দমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত গণিত অলিম্পিয়াডের বাছাইয়ে প্রধান অতিথি এসব কথা বলেন অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে।

গতকাল সকালে ফেনীসহ ১৩টি জেলায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে আনন্দমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘ডাচ্-বাংলা ব্যাংক–প্রথম আলো গণিত উৎসব ২০১৯’। শিক্ষার্থীদের পদচারণে মুখর হয়ে ওঠে উৎসবস্থল। ‘গণিত শেখো, স্বপ্ন দেখো’ স্লোগান সামনে রেখে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এ উৎসব। শিক্ষার্থীদের গাণিতিক মেধার উৎকর্ষ বৃদ্ধি ও ২০১৯ সালে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠেয় ৬০তম আন্তর্জাতিক গণিত অলিম্পিয়াডের (আইএমও) জন্য বাংলাদেশ দল নির্বাচনের লক্ষ্যে দেশব্যাপী আয়োজন করা হচ্ছে এই উৎসবের। প্রথমে ৬৪টি জেলায় বাছাই অলিম্পিয়াড হচ্ছে। এর ফলাফল ঘোষণা করা হবে ম্যাথ অলিম্পিয়াডের ওয়েবসাইটে (www.matholympiad.org.bd) ।

বাছাইপর্বের বিজয়ীদের নিয়ে আগামী ফেব্রুয়ারিতে ১২টি শহরে আঞ্চলিক পর্ব হবে। মার্চে ঢাকায় হবে জাতীয় উৎসব। ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের পৃষ্ঠপোষকতা ও প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ গণিত অলিম্পিয়াড কমিটির আয়োজনে ১৭তম বারের মতো এই আয়োজন চলছে।

ঢাকার বাইরে প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:

ফেনী সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় মাঠে গণিত উৎসবের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মো. ওয়াহিদুজজামান। সকাল সাড়ে নয়টায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হলেও সকাল আটটা থেকেই প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে শিক্ষার্থীরা উৎসবস্থলে সমবেত হতে থাকে। নয়টার মধ্যে মাঠ কানায় কানায় ভরে ওঠে। চারটি ক্যাটাগরিতে অনুষ্ঠিত গণিত পরীক্ষায় ৮০০ শিক্ষার্থীর মধ্যে ১২৪ জনকে আঞ্চলিক গণিত উৎসবের জন্য নির্বাচিত করা হয়।

নোয়াখালীর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় প্রাঙ্গণে গণিত উৎসবে ৫৩০ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়। পরে এক ঘণ্টার মেধা যাচাই পরীক্ষা নেওয়া হয় তাদের। পরবর্তী সময়ে ফলাফল জানানো হবে।

খাগড়াছড়ি সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে উৎসবে অংশ নেয় ৩২১ শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে আঞ্চলিক পর্বের জন্য নির্বাচিত হয় ৫৫ জন।

রংপুর জিলা স্কুলে গণিত অলিম্পিয়াডের বাছাইপর্বে অংশ নেয় ৮০৫ শিক্ষার্থী। গণিত পরীক্ষা শেষে ৫৫৭ শিক্ষার্থীকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।

সিলেটে উৎসব হয় নগরের পাঠানটুলা দ্বিপক্ষীয় উচ্চবিদ্যালয়ে। প্রায় ৮০০ শিক্ষার্থী ঘণ্টাব্যাপী গণিত পরীক্ষায় অংশ নেয়। ৩০০ জনকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।

খুলনা নগরের সরকারি করোনেশন মাধ্যমিক বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে উৎসবে অংশ নেয় ৭ শতাধিক শিক্ষার্থী। প্রায় ৩০০ জনকে আঞ্চলিক পর্বের জন্য বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।

মেহেরপুর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত গণিত উৎসবে ৪৭০ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়। পরে গণিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয় ১১২ জন।

বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে উৎসবে এক হাজার শিক্ষার্থী অংশ নেয়। গণিতের ওপর বাছাই পরীক্ষার ফলাফল ম্যাথ অলিম্পিয়াডের ওয়েবসাইটে ঘোষণা করা হবে।

নওগাঁ কেডি সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে উৎসবে তিন শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেয়। তাদের মধ্যে ৮০ জনকে আঞ্চলিক পর্বের জন্য বাছাই করা হয়।

সিরাজগঞ্জে কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজ চত্বরে উৎসবে অংশ নেয় ৪৭০ শিক্ষার্থী। অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রথম আলোর সদ্য প্রয়াত সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি এনামুল হকের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। বাছাইপর্বের ফলাফল ম্যাথ অলিম্পিয়াডের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে।

রাজশাহী কলেজের কলাভবনে বাছাই অলিম্পিয়াডে অংশ নেয় ১ হাজার ১০৯ শিক্ষার্থী। অলিম্পিয়াডে এই প্রথমবারের মতো একটি সরকারি অগ্রণী প্রকল্পের অংশ হিসেবে পাঁচটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪০ জন শিক্ষার্থীও অংশ নিয়েছে।

লালমনিরহাট সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় প্রাঙ্গণে গণিত উৎসবে মেতেছিল ২১৪ শিক্ষার্থী। পরে গণিত পরীক্ষায় ১১৪ জনকে উত্তীর্ণ ঘোষণা করা হয়।

গোপালগঞ্জ সরকারি শেখ হাসিনা বালিকা স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রাঙ্গণে উৎসবে ৪৫০ শিক্ষার্থী অংশ নেয়। তাদের মধ্যে ৯৭ জনকে আঞ্চলিক উৎসবের জন্য বাছাই করা হয়েছে।