মেয়েকে কাজে পৌঁছে দিয়ে ফেরা হলো না বাবার

মেয়ে কারখানায় চাকরি করেন। প্রতিদিন ভোরে নিজেই কাজে যান। তবে শীতকালে খুব ভোরে অন্ধকার থাকায় মেয়েকে কারখানা পর্যন্ত এগিয়ে দেন বাবা। কিন্তু শনিবার নিজের আর ফেরা হলো না। গাড়ি চাপায় মারা যান আমজাদ আলী(৫৫)।

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের এমসিবাজার এলাকায় আজ সকাল ৬টার দিকে গাড়ি চাপায় মারা যান আমজাদ আলী (৫৫)। তাঁর বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার ইশ্বরগঞ্জ উপজেলার চরহোসেনপুর গ্রামে।

শুধু গাজীপুরই নয়, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে আজ শনিবার সকালে ও যশোরের চৌগাছায় গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় সড়ক দুর্ঘটনায় দুজন নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে আজকেসহ ৬৮৭ দিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়াল ৫ হাজার ৯৫৭জনে। প্রথম আলোর প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর

শ্রীপুর: মেয়ে সুমা আক্তারসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নিয়ে এমসিবাজার এলাকার একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন আমজাদ আলী। সুমা এমসিবাজার এলাকার সাদ-সান টেক্সটাইলে চাকরি করেন। আজ সকাল ৬টার দিকে আমজাদ তাঁর মেয়েকে কারখানার ফটক পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে আসেন। ফেরার পথে ময়মনসিংহগামী মুরগিবাহী একটি গাড়ি তাঁকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়।
মাওনা হাইওয়ে থানার উপপরিদর্শক(এসআই) হরিদাস পাল জানান, ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ঘাতক গাড়িটি থানা হেফাজতে আছে। চালককে আটক করা সম্ভব হয়নি।

সীতাকুণ্ড: কুমিরা বাইপাসের কাজীপাড়া এলাকায় একটি কিন্ডার গার্টেনের শিশুদের বহনকারী মাইক্রোবাসটি মহাসড়কের পাশে দাঁড়ানো ছিল। সেসময় মাইক্রোবাসটিতে কোনো শিশু শিক্ষার্থী ছিল না। চালক মো. হাসান (৩৫) গাড়িটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করছিলেন। সকাল পৌনে আটটার দিকে ঢাকামুখী একটি মাইক্রোবাস বেপরোয়া গতিতে এসে দাঁড়িয়ে থাকা স্কুল বাসটিকে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনস্থল থেকে হাসান খালের পাড়ে ছিটকে পড়ে। আহত হয়েছে অপর মাইক্রোবাসে থাকা অন্তত ছয়জন যাত্রী। নিহত হাসান সীতাকুণ্ডের কুমিরা ইউনিয়নের রহমতনগর গ্রামের বাসিন্দা। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা হাসানকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও অন্যদের নগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক হাসানকে মৃত ঘোষণা করে।
কুমিরা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক আবু আবদুল্লাহ বলেন, দুর্ঘটনাকবলিত গাড়ি দুটিকে উদ্ধার করা হয়েছে।

যশোর: চৌগাছায় উপজেলায় ইঞ্জিনচালিত ভ্যানের সঙ্গে মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে এক মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন মোটরসাইকেলের অপর আরোহী। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় চৌগাছা উপজেলার পলুয়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত আরোহীর নাম সবুজ হোসেন (২৬)। গুরুতর আহত মোটরসাইকেল আরোহীর নাম সোহাগ হোসেন (২৮)। তাঁরা দুই ভাই।
সবজু ও সোহাগ যশোরের চৌগাছা উপজেলার পলুয়া গ্রামের শওকত হোসেনের ছেলে।
চৌগাছার পাশাপোল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান অবাইদুল ইসলাম সবুজ জানান, শুক্রবার সন্ধ্যায় ওই দুই ভাই একটি মোটরসাইকেলে করে বাড়ির দিকে যাচ্ছিলেন। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে তাঁরা পলুয়া এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ইঞ্জিনচালিত ভ্যানের সঙ্গে মোটরসাইকেলটির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে দুই ভাই গুরুতর আহত হন। স্থানীয় লোকজন তাঁদের উদ্ধার করে যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ডাক্তার কল্লোল কুমার সাহা বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই সবুজ মারা যান। অপরজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।