এরশাদের 'অবর্তমানে' জাপার নেতৃত্বে কে

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। ফাইল ছবি
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। ফাইল ছবি
>

• এরশাদের ‘অবর্তমানে’ দলের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব কে পালন করবেন, তা নিয়ে ধোঁয়াশা
• এরশাদ এখন খুবই অসুস্থ
• তিনি সিঙ্গাপুর গেলে কি চেয়ারম্যান পদে বদল আসবে

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ‘অবর্তমানে’ দলের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব কে পালন করবেন, তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। এরশাদ ১ জানুয়ারি এক চিঠিতে তাঁর অবর্তমানে জাপার চেয়ারম্যান পদে তাঁর ভাই জি এম কাদেরের নাম ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু এই ‘অবর্তমান’ শব্দটি স্পষ্ট নয় বলছেন জাপার একাধিক নেতা।

এরশাদ এখন খুবই অসুস্থ। ৫ জানুয়ারি থেকে তিনি সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তিনি উঠে দাঁড়াতে পারেন না বলে জানিয়েছেন দলের একজন নেতা। আগামী শুক্রবার উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁর সিঙ্গাপুরে যাওয়ার কথা। তিনি সিঙ্গাপুর গেলে কি চেয়ারম্যান পদে বদল আসবে? দলীয় নেতাদের কাছে তা স্পষ্ট হয়নি। এদিকে এরশাদের অবর্তমানে জাপার চেয়ারম্যান পদটি পেতে চান রওশন এরশাদ।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে দলের কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদের গতকাল রোববার রাতে প্রথম আলোকে মুঠোফোনে বলেন, ‘হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার আগে নিশ্চয়ই তাঁর “অবর্তমানে” শব্দের ব্যাখ্যা দিয়ে যাবেন। তখন বোঝা যাবে, অবর্তমানে বোঝাতে তিনি আসলে কী বুঝিয়েছেন।’

গত ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের পর এরশাদের নেওয়া দুটি সিদ্ধান্ত নিয়ে জাপায় ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। সিদ্ধান্ত দুটি হলো: এক. এরশাদের অবর্তমানে জি এম কাদেরের চেয়ারম্যান হওয়া। দুই. জাপা বিরোধী দলে থাকবে। দলটির কেউ মন্ত্রী হতে পারবেন না।

এ বিষয়ে কাদের বলেন, ‘একটি সংসদ প্রকৃত বিরোধী দল ছাড়া চলতে পারে না। সংসদ হতে হবে জবাবদিহিমূলক। সে কারণে আমরা সরকারে ও বিরোধী দলে একসঙ্গে থাকতে পারি না। এটা নিয়ে হাসাহাসি হয়। আমরা বিরোধী দলে থেকে সরকারের ভুলত্রুটি ধরিয়ে দিতে চাই। এতে সরকারকেও সহায়তা করা হয়। জনগণের পক্ষে থেকে সরকারকে আমরা নজরদারিতে রাখতে চাই।’

এই দুই সিদ্ধান্ত রওশনপন্থী হিসেবে পরিচিত অংশকে ক্ষুব্ধ করেছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ৩ জানুয়ারি জাপার ২১ সাংসদকে নিয়ে বনানী কার্যালয়ে রুদ্ধদার বৈঠকে বসেন রওশন এরশাদ ও জি এম কাদের। বৈঠকে সরকারে থাকা না-থাকা নিয়ে আলোচনায় হট্টগোলের সৃষ্টি হয়। অধিকাংশ সাংসদ সরকারি দলে থাকার পক্ষে মত দেন।

দলের বিরোধ সম্পর্কে জানতে চাইলে জি এম কাদের বলেন, দলে যদি কেউ নিজেকে ‘রওশনপন্থী’ হিসেবে ঘোষণা দেন, তাহলে এটি দলীয় শৃঙ্খলার পরিপন্থী। দলের একটি কাঠামো রয়েছে। সেখানে সবাইকে দলের গঠনতন্ত্র মেনেই চলতে হবে। তবে দলে কোন্দল থাকার কথা অস্বীকার করেন তিনি।