রেলের দুর্নীতির বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেবেন মন্ত্রী

নূরুল ইসলাম সুজন
নূরুল ইসলাম সুজন

নতুন রেলপথমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম বলেছেন, রেলওয়ের দুর্নীতির কোনো অভিযোগ পাওয়া গেলে এর বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আজ সোমবার রেলওয়ের জন্য ৪০টি ব্রডগেজ ইঞ্জিন (লোকোমোটিভ) কেনার জন্য চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এ কথা বলেন।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে রেলমন্ত্রী বলেন, ‘ট্রেনের টিকিট কালোবাজারির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি। দুর্নীতি যদি পাওয়া যায়, তাহলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেব। এ ব্যাপারে আমাদের নির্বাচনী ইশতেহার আছে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে “জিরো টলারেন্স”। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এই নির্দেশ আমরা অক্ষরে অক্ষের পালন করব।’

মো. নূরুল ইসলাম বলেন, রেলকে যুগোপযোগী উন্নয়নে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হবে। মানুষকে রেলের মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত সেবা দেওয়ার জন্য সর্বোত্তম চেষ্টা করা হবে। ইঞ্জিন পাওয়া শুরু করলে অধিক পরিমাণে বিভিন্ন রুটে ট্রেন চালানো সম্ভব হবে এবং এর মাধ্যমে বেশি করে রাজস্ব আহরণ করা যাবে।

ট্রেনের নতুন কোচ পরিচ্ছন্ন রাখা হবে, উল্লেখ করে রেলমন্ত্রী বলেন, লোকবল-সংকটে সেবা বিঘ্নিত হচ্ছে। দ্রুত লোকবল নিয়োগের ব্যবস্থা করা হবে। রেল খাতকে একটি উন্নত দেশের কাতারে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে তিনি কাজ করবেন। নতুন কোচগুলোকে পয়োনিষ্কাশনের পরিবেশবান্ধব ব্যবস্থা করার জন্য ইতিমধ্যেই সংশ্লিষ্ট লোকজনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে জানানো হয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মেসার্স প্রোগ্রেস রেল নামে একটি প্রতিষ্ঠান থেকে নতুন ৪০টি ব্রডগেজ ইঞ্জিন কেনা হবে । বাংলাদেশ রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (আরএস) মো. শামসুজ্জামান এবং প্রোগ্রেস রেলের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট প্যাট্রিক ও ডনেল চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। অনুষ্ঠানে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোফাজ্জেল হোসেন, মহাপরিচালক মো. কাজী রফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন। চুক্তি অনুযায়ী ২৪ থেকে ৩৬ মাসের মধ্যে সব ইঞ্জিন সরবরাহ করবে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান।এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে ১ হাজার ১২৩ কোটি ৫ লাখ টাকায় ৪০টি ইঞ্জিন কেনা হচ্ছে। ৩ হাজার ২৫০ অশ্বশক্তির প্রতিটি ইঞ্জিন সর্বোচ্চ ১৩০ কিলোমিটার গতিতে চলতে পারবে।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বাংলাদেশে বর্তমানে রেলওয়েতে ৯৪টি ব্রডগেজ ইঞ্জিন রয়েছে। এর মধ্যে ৫৫ টির অর্থনৈতিক আয়ুষ্কাল ২০ বছর শেষ হয়ে গেছে। এ জন্য দ্রুত নতুন ইঞ্জিন পাওয়া খুবই প্রয়োজন।

২০১৮ সাল থেকে এ পর্যন্ত নতুন ১২০টি নতুন ইঞ্জিন কেনার চুক্তি স্বাক্ষর করেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে গত মে মাসে স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী ১০টি মিটারগেজ ইঞ্জিন কেনা হবে দক্ষিণ কোরিয়া থেকে। এর পর অক্টোবর মাসে দক্ষিণ কোরিয়ার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হুন্দাই রোটেমের সঙ্গে আরও ৭০টি মিটারগেজ লোকোমোটিভ কেনার চুক্তি করা হয়।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, একই নির্মাতা প্রতিষ্ঠান থেকে আরও ২০টি ইঞ্জিন কেনার প্রক্রিয়া প্রায় চূড়ান্ত হয়ে গেছে।