টিআইবির প্রতিবেদন মনগড়া ও একপেশে: হাছান মাহমুদ

হাছান মাহমুদ। ফাইল ছবি
হাছান মাহমুদ। ফাইল ছবি

তথ্যমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল অব বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাচন–সম্পর্কিত একটি প্রতিবেদনের কড়া সমালোচনা করেছেন। এই প্রতিবেদনকে একপেশে, মনগড়া ও দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য যথেষ্ট বলে মন্তব্য করেছেন।

আজ বুধবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে চট্টগ্রাম নগরের দেওয়ানজি পুকুরপাড়ের বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে হাছান মাহমুদ এই সমালোচনা করেন।

ভোটে ব্যাপক অনিয়মের তথ্য তুলে ধরে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ ও ত্রুটিপূর্ণ বলে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) মঙ্গলবার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বিচার বিভাগীয় তদন্তের পক্ষে মত দেয় সংস্থাটি। ‘একাদশ সংসদ নির্বাচন–প্রক্রিয়া পর্যালোচনা’ শীর্ষক গবেষণার প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে টিআইবির ধানমন্ডি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব পর্যবেক্ষণ তুলে ধরা হয়। দৈবচয়নের ভিত্তিতে করা গবেষণা প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এসব তথ্য তুলে ধরে টিআইবি। এই প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে হাছান মাহমুদ সংবাদ সম্মেলন করেন।

হাছান মাহমুদ বলেন, কয়েকটি সংগঠন ও সংস্থা আছে, দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করা নয়, ক্ষুণ্ন করাই যেন তাদের উদ্দেশ্য। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালও অনুরূপ কাজ করে যাচ্ছে। সংস্থাটি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে এবং বলে এটা তাদের গবেষণাপ্রসূত কাজ। আমরা অতীতেও দেখেছি, গবেষণার কথা বলে সংস্থাটি যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল তা প্রকৃতপক্ষে সঠিক গবেষণা নয়।

হাছান মাহমুদ বলেন, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের বেশির ভাগ প্রতিবেদন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, ত্রুটিপূর্ণ, একপেশে এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। পদ্মা সেতু নিয়েও ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল একটি কল্পকাহিনি সাজিয়েছিল। সংস্থাটি বলেছিল, পদ্মা সেতু নির্মাণে নাকি ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। এতে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে সংস্থাটি। পরে বিশ্বব্যাংকের করা মামলায় কানাডার আদালত দুর্নীতির কোনো প্রমাণ পাননি। আসলে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের কাজ কল্পকাহিনি তৈরি করে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা। এখন সংস্থাটি নির্বাচন নিয়ে নাকি একটি গবেষণা প্রতিবেদন তৈরি করেছে।

হাছান মাহমুদ বলেন, ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত অপেক্ষাকৃত শান্তিপূর্ণ নির্বাচন প্রশংসিত হয়েছে। নির্বাচনের পর পৃথিবীর বিভিন্ন রাষ্ট্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও মহাজোটকে অভিনন্দন জানিয়েছে। বিদেশি রাষ্ট্রদূতরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে অভিনন্দন জানিয়েছেন এবং প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাজ করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছেন। অথচ টিআইবি যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, তা ইতিপূর্বে দেওয়া বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের বক্তব্যের সঙ্গে তুলনা করলে কোনো পার্থক্য নেই। যদিও অপেক্ষাকৃত শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হয়েছে। এরপরও প্রচারণার পর থেকে আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা-কর্মী নিহত হন। টিআইবির প্রতিবেদনে তা উল্লেখ নেই।

টিআইবির সমালোচনা করে হাছান মাহমুদ বলেন, অতীতে দেশে ৩০০ আসনে ৮০০ জনকে মনোনয়ন দেওয়ার কোনো নজির নেই। বিএনপি লজ্জাজনকভাবে ৮০০ জনকে মনোনয়ন দেয়। এই মনোনয়ন–বাণিজ্য নিয়ে টিআইবির প্রতিবেদনে কিছুই উল্লেখ নেই। এ থেকে প্রমাণিত, টিআইবির বক্তব্য একপেশে ও মনগড়া। বরং প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলকে কথা বলার সুযোগ করে দিতে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।

হাছান মাহমুদ বলেন, টিআইবিকে অনুরোধ জানব, সময়-সময় রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার লক্ষ্যে প্রতিবেদন প্রকাশ না করে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করুন। উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত এবং দেশে-বিদেশে প্রশংসিত শান্তিপূর্ণ নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করবেন না। অতীতে পদ্মা সেতু নিয়ে একপেশে ও মনগড়া প্রতিবেদন প্রকাশ করে আপনারা দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছেন। এসব মনগড়া প্রতিবেদন প্রকাশ থেকে বিরত থাকুন।

আরও পড়ুন: