সালমান সম্পর্ককে অসম্মান করেছে: জেসিয়া

জেসিয়া ইসলাম ও সালমান মুক্তাদির
জেসিয়া ইসলাম ও সালমান মুক্তাদির

এক ইট ছয়বার ছুড়লেন তরুণী। তারপর অন্য একটি ইটের টুকরো, তারপর আরও একটি। মধ্যরাতে প্রেমিক সালমান মুক্তাদিরের বাড়ির প্রবেশমুখে ইটপাটকেল ছুড়ছিলেন যিনি, ধারণা করা হচ্ছে, তিনি জেসিয়া ইসলাম। কিন্তু মধ্যরাতে কী এমন হয়েছিল যে জেসিয়া এমন কাণ্ড ঘটিয়েছেন।

বছরখানেকের বেশি প্রেম করছেন ভিডিও ব্লগার ও অভিনয়শিল্পী সালমান মুক্তাদির ও মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ জেসিয়া ইসলাম। এরই মধ্যে তাঁদের ঘনিষ্ঠ কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দুজনের সম্পর্কের কথা সবাই জানতে পারেন। সম্প্রতি সালমানের বাড়ির প্রবেশমুখে এক তরুণীর ইটপাটকেল ছোড়ার একটি ভিডিও নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানা জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়েছে। সবাই ধরে নিয়েছেন, সেটি জেসিয়া ইসলাম। কিন্তু মধ্যরাতে কেন তিনি গিয়েছিলেন ওই বাড়িতে? কেনই বা তাঁকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি?

জেসিয়া ইসলাম বলেন, ‘আমাদের প্রেমের সম্পর্কের বয়স দেড় বছরের। কিছুদিন ধরে সে আমার কাছে কিছু বিষয় লুকাচ্ছিল। আর সেদিন আমার সঙ্গে সালমান একটা বিষয়ে মিথ্যা বলে, বিষয়টি বুঝতে পেরে আমি ওর বাসায় যেতে বাধ্য হই। সে ভাবতে পারেনি, এত রাতে আমি যাব। কিন্তু আমার আর কোনো উপায় ছিল না।’

বাড়ির প্রধান ফটকে ধাক্কা ও ইট ছুড়ে কাচ ভাঙার কারণ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জেসিয়া বলেন, ‘আমি তো শুরুতে এমনটা করিনি। আমি যখন সালমানের বাড়ি যাই তখন রাত দুইটার কাছাকাছি। প্রথমে কলবেল দিয়েছিলাম। এরপর ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করি। কোনোভাবেই কেউ আমাকে ভেতরে ঢুকতে দেয়নি। প্রধান ফটক খোলার অনুরোধ করলেও গ্যারেজে থাকা তাঁর পরিবারের কেউ তা করেনি। সালমান ও তাঁর পরিবারের লোকজন আমার ধৈর্য্যের বাঁধ ভাঙতে বাধ্য করে। আমি ভেবেছিলাম, জোরে নক করলে হয়তো তারা গেট খুলবে। আমাকে দু্ই ঘণ্টার মতো বাইরে দাঁড় করিয়ে রাখে।’

মিরপুর ডিওএইচএসের বাড়িতে গভীর রাতে গিয়ে ভাঙচুর ও চিৎকার করার কারণে জেসিয়ার মায়ের সঙ্গে কথা বলেন সালমান মুক্তাদিরের মা। জেসিয়া জানান, সালমান আমার বিশ্বাসের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। আমার সম্পর্ককে অসম্মান করেছে, অমর্যাদা দিয়েছে। আমার মা–ও তাই জানিয়ে দিয়েছে।

সালমান মুক্তাদিরের মায়ের সঙ্গে প্রথম আলোর কথা হয় দুই দফা। প্রথম দফায় তিনি বলেন, ‘জেসিয়া আমার ছেলের ভালো বন্ধু এমনটাই জানতাম। আমাদের বাসায় যাওয়া–আসা ছিল। কিন্তু হঠাৎ সেদিনের আচরণ আমাদের কাছে ছিল একেবারে অচেনা। আমার ছেলে সালমান ও মেয়ের বন্ধুরা টেলিভিশন দেখছিল। হঠাৎ জেসিয়ার শব্দ শুনি। এত রাতে তার আসার খবরে ঘাবড়ে যাই। এভাবে কোনো মেয়ে ভাঙচুর করতে পারে না। আমরা ভালো দেখে হয়তো বিষয়টাতে বেশি জটিলতা করিনি। চাইলে কিন্তু অনেক কিছুই করতে পারতাম।’

দ্বিতীয় দফায় সালমান মুক্তাদিরের মায়ের সঙ্গে কথা বলার শুরুতে কিছু জানতে চাইতেই তিনি মুঠোফোন আরেকজনের কাছে দিয়ে দেন। নিজেকে সালমানের খালাতো ভাই পরিচয় দেওয়া মানুষটির কাছে সোমবার রাতে ঘটে যাওয়া ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। তাঁর কাছে অনুরোধ করি, সালমান মুক্তাদিরের মায়ের কাছে ফোনটি দেওয়া যাবে? জানালেন, তিনি এখন ব্যস্ত, পরে কথা বলতে হবে। এখন তিনি কথা বলতে পারবেন না।

তিন দিন আগে সালমান মুক্তাদিরদের ফ্ল্যাটের বিপরীত পাশের একটি ফ্ল্যাট থেকে করা ওই ভিডিওটি ভাইরাল হয়। সেখানে দেখা গেছে, গভীর রাতে একটি মেয়ে (সবার ধারণা সেটি জেসিয়া) তাঁদের বাড়ির প্রবেশমুখের লোহার ফটকে এলোপাতাড়ি বাড়ি দিয়ে দরজা খুলতে বলছিলেন। ভেতর থেকে সালমানের মা তাঁর সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলেও তরুণী ছিলেন অনড় এবং ভেতরে প্রবেশের জন্য মরিয়া। চিৎকার করে সালমানকে দরজা খুলতে বলছিলেন তিনি। এরই মধ্যে একটি ইটের টুকরো তুলে নিয়ে ছয়বার ছুড়ে মেরেছেন ফটকের দেয়ালে।

সালমান মুক্তাদিরের সঙ্গে দেড় বছরের প্রেমের সম্পর্ক একটা বড় শিক্ষা বলে মনে করছেন জেসিয়া। তিনি বলেন, ‘এই অধ্যায় আপাতত বন্ধ। আমি এখন থেকে কাজ নিয়ে থাকতে চাই। আমার অনেক কাজের সুযোগ থাকলেও করা হয়নি। আমি এখন কাজ আর পড়াশোনায় মন দেব। নিজেকে সময় দেব। নিজেকে ভালোবাসতে শিখব।’

সালমান মুক্তাদিরের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।

২০১৭ সালে সুন্দরী প্রতিযোগিতা ‘মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ’-এ বিজয়ী হয়েছিলেন জেসিয়া ইসলাম। পরে শুরুর দিকে মিস ওয়ার্ল্ডের মূল প্রতিযোগিতায় সেরা ৪০-এ ঠাঁই পেয়েছিলেন তিনি। প্রতিযোগিতা থেকে ফিরে এসে জানিয়েছিলেন বড় পর্দায় কাজের আগ্রহের কথা। তবে সেটি পড়াশোনা শেষে। তারপর থেকে বিনোদন অঙ্গনের সঙ্গে সম্পৃক্ততা ক্রমশ কমতে শুরু করে জেসিয়ার। বরং সালমান মুক্তাদিরের প্রেমিকা পরিচয়ে আলোচনায় আসেন তিনি।

সালমানের সঙ্গে প্রেমের প্রসঙ্গে জেসিয়া প্রথম আলোকে বলেছিলেন, মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ প্রতিযোগিতার আগে থেকেই তাঁদের সম্পর্ক। বলেছিলেন, ‘পড়াশোনা শেষ হলে কিংবা তার আগেও বিয়ে করতে ফেলতে পারি।’