স্ত্রীকে আত্মহত্যায় প্ররোচনার দায়ে স্বামীর কারাদণ্ড

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী অনামিকা সোমাকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার মামলায় তাঁর স্বামীকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫-এর বিচারক আখতারুজ্জামান এ রায় দেন।

দণ্ডিত আসামি হলেন মনিরুজ্জামান পলাশ। রায় ঘোষণার আগে আসামি মনিরুজ্জামানকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। রায় ঘোষণার পর তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

২০০৮ সালের ৩ অক্টোবর কদমতলী এলাকায় স্বামী মনিরুজ্জামানের বাসা থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় অনামিকা সোমার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় অনামিকার বাবা কায়সার আহম্মেদ বাদী হয়ে কদমতলী থানায় দণ্ডবিধির ৩০৬ ধারায় মামলা করেন।

মামলার এজাহারে অনামিকার বাবা উল্লেখ করেন, তাঁর মেয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় পড়ার সময় একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে মনিরুজ্জামানের সঙ্গে পরিচয় হয়। পরে তাঁদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। মনিরুজ্জামান তাঁর মেয়ে অনামিকাকে বিয়ে করেন। ২০০৮ সালের জুলাই মাসে আনুষ্ঠানিকভাবে অনামিকাকে তাঁর স্বামী মনিরুজ্জামান ঘরে তোলেন। তাঁরা দক্ষিণ দনিয়া এলাকায় সংসার শুরু করেন। বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে বাবার বাড়ি থেকে ৫ লাখ টাকা এনে দেওয়ার জন্য অনামিকাকে চাপ দিতে থাকেন মনিরুজ্জামান। এর মধ্যে তাঁর মেয়ে ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন।

এজাহারে বাদী আরও বলেন, ২০০৮ সালের ৩ অক্টোবর মুঠোফোনে সংবাদ পান তাঁর মেয়ে অনামিকা মারা গেছেন। পরে থানায় গিয়ে মেয়ের লাশ দেখতে পান।

এ ঘটনা তদন্ত করে পুলিশের অপরাধ ও তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) পরিদর্শক আনোয়ার হোসেন ভূঁইয়া অনামিকাকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে স্বামী মনিরুজ্জামানের বিরুদ্ধে ২০১১ সালের ৭ আগস্ট অভিযোগপত্র দেন। অভিযোগপত্রে বলা হয়, বিয়ের পর মনিরুজ্জামান বিদেশে যাবেন, ব্যবসা করবেন—এ জন্য অনামিকাকে একসঙ্গে ৫ লাখ টাকা এনে দেওয়ার কথা বলেন। এত টাকা একসঙ্গে এনে দিতে অপারগতা প্রকাশ করার পর মনিরুজ্জামান অনামিকার ওপর নির্যাতন শুরু করেন। মনিরুজ্জামান নানাভাবে নির্যাতন করে অনামিকাকে আত্মহত্যা করাতে বাধ্য করেছেন।

অভিযোগপত্রভুক্ত ১৬ জন সাক্ষীর মধ্যে ৮ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়।