কূটনীতিকদের সরকারের পরিকল্পনা জানালেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী

নবনিযুক্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের ব্রিফ করেন। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মা, ঢাকা, ১৭ জানুয়ারি। ছবি: বাসস
নবনিযুক্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের ব্রিফ করেন। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মা, ঢাকা, ১৭ জানুয়ারি। ছবি: বাসস

সমৃদ্ধি অর্জনে কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন লক্ষ্য পূরণে বাংলাদেশের নতুন সরকারকে সম্ভাব্য সব উপায়ে সব ধরনের সহায়তা অব্যাহত রাখার আশ্বাস দিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতেরা।

নবনিযুক্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের ব্রিফ করেন। এ সময় তাঁরা এ আশ্বাস দেন। দায়িত্ব গ্রহণের পর পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই প্রথম ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশে বিভিন্ন দেশের পররাষ্ট্র মিশনের রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনার, কাউন্সেল জেনারেল এবং ঢাকায় জাতিসংঘ কার্যালয়ের প্রতিনিধিরাসহ ৫৫টি দেশের কূটনীতিকেরা অংশ নেন।

বাংলাদেশে ভ্যাটিকানের কূটনৈতিক কোরের ডিন ও রাষ্ট্রদূত আর্চবিশপ জর্জ কোচেরি বিফ্রিং থেকে বের হয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা (পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে) বাংলাদেশের উন্নয়ন এবং অগ্রগতি, সমৃদ্ধি ও শান্তির জন্য আমাদের সমর্থন, সহায়তা ও সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছি।’

নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী সব কূটনীতিক এবং এখানে অবস্থানরত বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধিদের রোহিঙ্গা ইস্যু ও অর্থনৈতিক কূটনীতিসহ তাঁর মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনা শেয়ার করার আমন্ত্রণ জানান।

রাষ্ট্রদূত কোচেরি বলেন, ‘আমি বলব পরস্পরকে জানার জন্য এটি ছিল একটি বন্ধুত্বপূর্ণ আলাপচারিতা। তিনি (মোমেন) তাঁর পরিকল্পনা এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের নাম-সুনাম কীভাবে বাড়ানো যায়, সে সম্পর্কে কথা বলছিলেন।’ তিনি বলেন, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক কূটনীতির ওপর অধিকতর গুরুত্ব আরোপ করছে। ব্রিফিংয়ে অন্যান্য বিষয় ছাড়াও এই ইস্যু উঠে আসে।

ব্রিফিংকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার বাস্তবায়নে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতা কামনা করেন।

রোহিঙ্গা ইস্যুতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে তাদের সহায়তার জন্য ধন্যবাদ জানান এবং প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে নিরাপদ, টেকসই ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনে গঠনমূলক ভূমিকা পালন অব্যাহত রাখবে। এ কে মোমেন গত এক দশকে দারিদ্র্য প্রশমন, মাতৃ ও শিশুস্বাস্থ্য উন্নয়ন, বৈদেশিক মুদ্রার মজুত ও অবকাঠামো উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের অর্জন সম্পর্কে কূটনীতিকদের ব্রিফ করেন।

নবনিযুক্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, বাংলাদেশ সরকার অর্থনৈতিক কূটনীতির সফল প্রয়োগের মাধ্যমে রূপকল্প-২০২১ অ্যাজেন্ডা ২০৩০ ও রূপকল্প-২০৪১-এ বর্ণিত উন্নয়ন কর্মসূচির বাস্তবায়নের দিকে তার অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখবে। তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে ব্রিফিংয়ে উপস্থিত সব কূটনীতিকের সমর্থন, সহায়তা, সহযোগিতা ও অংশীদারত্ব কামনা করেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় জোরালো জিরো টলারেন্স নীতি বজায় রাখার মাধ্যমে ‘দুর্নীতি’ নির্মূলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্ব এবং যুব ও নারী ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রেও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতা কামনা করেন।

কূটনৈতিক কোরের ডিন সবার পক্ষ থেকে ফ্লোর নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীকে নির্বাচনে তাঁদের সাফল্যের জন্য অভিনন্দন জানান।

এ সময় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, পররাষ্ট্রসচিব মো. শহীদুল হক ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন।