'নিউইয়র্ক টাইমস'কে রাষ্ট্রদূত জিয়াউদ্দিনের চিঠি

মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন।
মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন।
>

• ১৬ জানুয়ারি একটি সম্পাদকীয় প্রকাশ করে নিউইয়র্ক টাইমস
• সম্পাদকীয়টির শিরোনাম ছিল ‘বাংলাদেশে প্রহসনের নির্বাচন’
• সম্পাদকীয়টির জবাব দিয়েছেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত জিয়াউদ্দিন
• নিউইয়র্ক টাইমস শুক্রবার রাষ্ট্রদূতের চিঠিটি প্রকাশ করেছে
• রাষ্ট্রদূতের চিঠিটির শিরোনাম ‘বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন’

যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী পত্রিকা দ্য নিউইয়র্ক টাইমস-এ গত ১৬ জানুয়ারি ‘বাংলাদেশে প্রহসনের নির্বাচন’ শিরোনামে প্রকাশিত সম্পাদকীয়র জবাব দিয়েছেন দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন। চিঠিতে তিনি বলেছেন, নিবন্ধে ঠিকভাবেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুনর্নির্বাচিত হওয়ার কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে: অর্থনৈতিক অগ্রগতি, নাটকীয়ভাবে দারিদ্র্য হ্রাস ও মানব উন্নয়ন সূচকগুলো বাংলাদেশের দ্রুত ধাবমান প্রবৃদ্ধিকেও ছাড়িয়ে গেছে।

নিউইয়র্ক টাইমস তাদের চিঠিপত্র বিভাগে গত শুক্রবার রাষ্ট্রদূত জিয়াউদ্দিনের চিঠিটি প্রকাশ করেছে। ‘বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন’ শিরোনামের ওই চিঠিতে রাষ্ট্রদূত বলেন, কিন্তু পত্রিকাটি এই ইঙ্গিত দিয়ে ভুল করেছে যে তাঁর (শেখ হাসিনার) দল আওয়ামী লীগকে ভোট দিতে ভোটারদের ভয়ভীতি দেখানো হয়েছে। নির্বাচনের আগে সহিংসতা নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী শুধু যে রাজনৈতিক কারণে শক্তি প্রয়োগ করেনি তা নয়, বরং তা ছিল শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ ভোট গ্রহণ নিশ্চিত করার স্বার্থে। অধিকাংশ নির্বাচন পর্যবেক্ষকও এটাই বলেছেন।

রাষ্ট্রদূত জিয়াউদ্দিন আরও বলেন, গণগ্রেপ্তারের কোনো ঘটনাও ঘটেনি। আগের নির্বাচনগুলোর সঙ্গে তুলনা করলে নিশ্চিতভাবেই ২০১৮ সালের নির্বাচন ছিল শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদ। ভোটাররা সরকারের কাছে নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক অগ্রগতি চায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের উভয়ই দিয়েছেন। আর এ জন্যই তাঁর দল নিরঙ্কুশভাবে জয়ী হয়েছে।

উল্লেখ্য নিউইয়র্ক টাইমস তাদের ওই সম্পাদকীয়তে বলেছিল, পরপর দুই মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা শেখ হাসিনার সরকারের সাফল্য গত নির্বাচনেও তাদের নির্বাচনী জয়ের ইঙ্গিত দিচ্ছিল। কিন্তু নির্বাচনের আগে বিরোধী দলের সদস্যদের নানাভাবে চাপে রাখা এবং তাঁর দলের একচেটিয়া জয় সে অর্জনকে মলিন করেছে। পত্রিকাটি আশঙ্কা করে, বাংলাদেশ ব্যাপকভাবে কর্তৃত্ববাদী শাসনের শিকার হতে পারে।

পত্রিকাটি তাদের সম্পাদকীয়তে আরও বলেছিল, ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের আগের সপ্তাহ ও মাসগুলোতে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো বিরামহীন ভীতি প্রদর্শন, সহিংসতা, বিরোধীদলীয় প্রার্থীদের গ্রেপ্তারের ঘটনা থেকে শুরু করে নজরদারি ও কঠোর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রয়োগ লক্ষ করে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ‘আক্রমণাত্মক বা ভীতি উদ্রেককারী’ লেখা প্রকাশের জন্য কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। নির্বাচনী সহিংসতায় নিহত হয়েছেন অন্তত ১৭ জন। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের একটি প্রতিবেদনে ‘সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তি থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্কের পরিবেশের’ উল্লেখ করা হয়। কিন্তু ‘ভীত’ বিচার বিভাগ বা নির্বাচন কমিশনকে কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি।

আরও পড়ুন: 

বাংলাদেশে ‘প্রহসনের নির্বাচন’