বাংলাদেশে কলিঙ্গ ইনস্টিটিউট দুটি শাখা খুলছে

ওডিশার কলিঙ্গ ইনস্টিটিউট অব ইন্ডাস্ট্রিয়াল টেকনোলজি (কিট)।
ওডিশার কলিঙ্গ ইনস্টিটিউট অব ইন্ডাস্ট্রিয়াল টেকনোলজি (কিট)।

বাংলাদেশের দুটি শহরে শাখা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে চলেছে ভারতের অন্যতম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ওডিশার কলিঙ্গ ইনস্টিটিউট অব ইন্ডাস্ট্রিয়াল টেকনোলজির (কিট) সহযোগী প্রতিষ্ঠান কলিঙ্গ ইনস্টিটিউট অব সোশ্যাল সায়েন্স (কিস)। এই দুটির একটি হবে যশোরে, অন্যটি ঢাকায়। গতকাল দুপুরে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার এক অভিজাত হোটেলে সাংবাদিকদের এ কথা জানিয়েছেন কিট ও কিসের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক অচ্যুত সামন্ত।

অচ্যুত সামন্ত বলেছেন, ওডিশায় তাঁর উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বাংলাদেশের প্রচুর ছাত্রছাত্রী আছে। তবে এত দিনে বাংলাদেশে কিছু করার স্বপ্ন সফল হতে চলেছে। নতুন দুটি শাখা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হবে আবাসিক ও অবৈতনিক। প্রথম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্রছাত্রীরা এই দুই প্রতিষ্ঠানে মাতৃভাষাতেই শিক্ষা পাবে। বাংলাদেশের দরিদ্র পরিবারের ছেলেমেয়েরাই এই দুই প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার সুযোগ পাবে।

অচ্যুত সামন্ত জানিয়েছেন, যশোরেরটি হবে শুধু মেয়েদের জন্য। আর ঢাকারটি হবে শুধু ছেলেদের জন্য। আগামী বছরের জানুয়ারি থেকেই এই দুটি প্রতিষ্ঠান চালু হবে। তিনি জানিয়েছেন, ঢাকায় দুই একর এবং যশোরে ৫ একর জমির ওপর এই প্রতিষ্ঠান দুটি তৈরি হচ্ছে। যশোরেরটি তৈরি হচ্ছে বাংলাদেশের বহু পুরোনো স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘বাঁচতে শেখো’র সঙ্গে মিলিতভাবে। তবে কিস এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির আর্থিক দায়ভার বহন করবে। অন্যদিকে ঢাকার প্রতিষ্ঠানটি তৈরি হচ্ছে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যৌথভাবে। তবে এ ক্ষেত্রে আর্থিক দায়ভার ড্যাফোডিলই বহন করবে। তারা শুধু কারিগরি সহায়তা দেবে।

ওডিশার রাজধানী ভুবনেশ্বরে ১৯৯২ সালে অধ্যাপক সামন্ত একক প্রচেষ্টায় গড়ে তোলেন কিট। এরপর গত ২০১৭ সালে তৈরি করেন বিশ্বের প্রথম আদিবাসীদের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কিস। বর্তমানে দুটিই বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা পেয়েছে। অধ্যাপক সামন্ত বলেছেন, কিস প্রতিষ্ঠানে ২৭ হাজার ৫০০ আদিবাসী ছাত্রছাত্রী পড়াশোনা করছে। এই প্রতিষ্ঠানের ৫ হাজার ছেলেমেয়ে ক্রীড়াবিদ হয়েছে।

এক প্রশ্নের উত্তরে অধ্যাপক সামন্ত বলেছেন, ‘আমি খুব দরিদ্র ঘরের সন্তান। তাই গরিবদের জন্য কিছু করার চেষ্টা করে এসেছি শুরু থেকেই। আর আমার সেই মহৎ উদ্যোগই আমাকে এগিয়ে নিয়ে চলেছে।’ তিনি মনে করেন, সমাজের বঞ্চিত মানুষকে মানসম্পন্ন শিক্ষা দিতে পারার অর্থ অন্ধকে দৃষ্টি দেওয়া। উপযুক্ত সুযোগ পেলে দুর্বলেরাও অসাধারণ ফল করতে পারে। তাঁর মতে, অশিক্ষাই দারিদ্র্য তৈরি করে। আর সাক্ষরতা দারিদ্র্যকে দূর করে। সেই লক্ষ্য নিয়েই তিনি এগিয়ে চলতে চান। তিনি আরও বলেছেন, উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে কিট ইতিমধ্যেই বিশ্বে আলাদা স্বীকৃতি পেয়েছে।