বুথে ঢুকেই শামীমের মাথায় হাতুড়ি দিয়ে পেটায় মুখোশধারী

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

রাজধানীর বারিধারা এলাকায় যমুনা ব্যাংকের এটিএম বুথের ভেতর ঢুকে নিরাপত্তারক্ষী শামীম মিয়াকে (৩১) হত্যা করেছে মুখোশধারী এক ব্যক্তি। ওই ব্যক্তি আজ সোমবার ভোর ছয়টার পর শামীমের ওপর হামলা চালিয়ে তাঁর মাথায় উপর্যুপরি আঘাত করে। শামীমের মৃত্যু নিশ্চিত করে বুথে এটিএম মেশিন ভাঙচুর করে ওই ব্যক্তি। কিন্তু টাকা তুলতে না পেরে চলে যায়। এই মুখোশধারীকে খুঁজছে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

ওই এটিএম বুথের সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজের বরাত দিয়ে পুলিশ এ কথা জানিয়েছে।

পুলিশ জানায়, বারিধারা ‘জে’ ব্লকের একটি আসবাবের শোরুমের নিচে যমুনা ব্যাংকের ওই এটিএম বুথের ভেতর শামীমের লাশ পাওয়া যায়। তাঁর মাথায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। ভাটারা থানার পুলিশ তাঁর লাশ উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠায়। শামীম ‘এলিট ফোর্স’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের হয়ে এটিএম বুথের নিরাপত্তারক্ষীর দায়িত্ব পালন করছিলেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি কুড়িগ্রাম জেলায়। এ ব্যাপারে কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে যমুনা ব্যাংক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনাও হয়েছে।


পুলিশের বাড্ডা জোনের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) আশরাফুল করিম প্রথম আলোকে বলেন, এটিএম বুথের সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে, ভোর ছয়টা ২৫ মিনিটের দিকে একজন মুখোশধারী হাতুড়ি নিয়ে বুথের ভেতরে ঢোকে। এ সময় শামীম শুয়েছিলেন। ভেতরে ঢুকেই শামীমের মাথায় হাতুড়ি দিয়ে সরাসরি আঘাত করে ওই লোক। আঘাতের পর শামীমের মৃত্যু নিশ্চিত করে এটিএম মেশিনে আঘাত করতে থাকে মুখোশধারী। কিন্তু মেশিনটি থেকে টাকা বের করতে ব্যর্থ হলে বুথের ভেতর সিসি ক্যামেরায় আঘাত করে চলে যায় সে। অজ্ঞাতপরিচয়ের এই মুখোশধারীকে খোঁজা হচ্ছে। পাশাপাশি এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।

ব্যক্তিগত শত্রুতা অথবা লুট করার উদ্দেশ্যে শামীম মিয়াকে হত্যার ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে ধারণা পুলিশের। পুলিশের একটি সূত্রে জানা গেছে, লুট করার জন্য হলে আরও গভীর রাতে হামলা চালানো হতো। কিন্তু ঘটনা ঘটেছে ভোরের শেষ দিকে, যখন দিনের আলো ফুটতে শুরু করেছিল। তাই ব্যক্তিগত শত্রুতার কারণে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে থাকতে পারে বলে এক তদন্ত কর্মকর্তা জানান। তবে ঘটনা তদন্তে ভাটার থানার পুলিশ ছাড়াও পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) ও র‍্যাব সদস্যরা কাজ করছেন।

এলিট ফোর্সে পাঁচ বছর ধরে চাকরি করে আসছিলেন শামীম—এ কথা জানিয়ে এলিট ফোর্সের মহাব্যবস্থাপক খালেদ মাহমুদ সাইফুল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, ব্যক্তিগত ফাইলে শামীম মিয়ার জন্ম ১৯৮৮ সাল উল্লেখ রয়েছে। যমুনা ব্যাংকের বুথটিতে গতকাল রোববার রাত ১০টায় তাঁর ডিউটি শুরু হয়ে আজ সকাল ছয়টার শেষ হওয়ার কথা ছিল। শামীমের পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ এলিট ফোর্স কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। তবে তদন্তসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছে বিভিন্ন তথ্য দেওয়া হয়েছে। ঢাকা মেডিকেলে এলিট ফোর্সের লোকজন পাঠানো হয়েছে। শামীমের লাশ কুড়িগ্রামে পাঠানোসহ আনুষঙ্গিক সব খরচ এলিট ফোর্স কর্তৃপক্ষ বহন করবে বলে জানান তিনি।

এদিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত শামীমের লাশের সন্ধানে কেউ আসেনি। ঢাকা মেডিকেল কলেজ পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া বলেন, আগামীকাল মঙ্গলবার শামীমের লাশের ময়নাতদন্ত করা হবে।