শীতবস্ত্র পেলেন ৩৮৫ জন

ভোলার দৌলতখান উপজেলার দুর্গম মদনপুর ইউনিয়নের মদনপুর আলোর পাঠশালা মিলনায়তনে বৃহস্পতিবার মা সমাবেশে প্রথম আলো ট্রাস্টের অর্থায়নে ১২৫ মাকে শীতবস্ত্র পরিয়ে দেওয়া হয়েছে। একই দিন রাজশাহী ও ফেনীতে প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে ১৬০ জন দরিদ্র শীতার্ত ব্যক্তি ও শিক্ষার্থীর মধ্যে কম্বল এবং শেরপুরে সিটি ব্যাংক এনএর সহযোগিতায় আরও ১০০ জনের মধ্যে কম্বল ও মশারি বিতরণ করা হয়েছে।

মদনপুর আলোর পাঠশালা, চরপদ্মা মকবুল আহমেদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও চর টবগী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ১২৫ জন মায়ের গায়ে শীতবস্ত্র জড়িয়ে দেন বন্ধুসভার সদস্যরা। দৌলতখান, ভোলা, ২৪ জানুয়ারি। ছবি: প্রথম আলো
মদনপুর আলোর পাঠশালা, চরপদ্মা মকবুল আহমেদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও চর টবগী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ১২৫ জন মায়ের গায়ে শীতবস্ত্র জড়িয়ে দেন বন্ধুসভার সদস্যরা। দৌলতখান, ভোলা, ২৪ জানুয়ারি। ছবি: প্রথম আলো

ভোলায় মদনপুর আলোর পাঠশালা মিলনায়তনে বেলা ১১টায় শুরু হয় মা সমাবেশ। এ সময় মদনপুর ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান আবদুল খালেক, জেলা নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব এস এম বাহাউদ্দিন, আলোর পাঠশালার প্রধান শিক্ষক আক্তার হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে বক্তাদের সঙ্গে মায়েরাও তাঁদের সন্তানদের বাল্যবিবাহ না দিয়ে বিদ্যালয়ে পাঠানোর অঙ্গীকার করেন। বক্তব্য দেওয়ার পর মদনপুর আলোর পাঠশালা, চরপদ্মা মকবুল আহমেদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও চর টবগী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ১২৫ জনের মায়ের গায়ে বন্ধুসভার সদস্য ও শিক্ষার্থীরা শীতবস্ত্র জড়িয়ে দেন।

প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে ও সিটি ব্যাংকের সহযোগিতায় সিলভার জুবলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে কম্বল বিতরণ করা হয়। রাজশাহী, ২৪ জানুয়ারি। ছবি: শহীদুল ইসলাম
প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে ও সিটি ব্যাংকের সহযোগিতায় সিলভার জুবলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে কম্বল বিতরণ করা হয়। রাজশাহী, ২৪ জানুয়ারি। ছবি: শহীদুল ইসলাম

রাজশাহী নগরের কুমারপাড়ায় সিলভার জুবলি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুপুর ১২টায় ১০০ জনকে কম্বল দেওয়া হয়। কম্বল পেয়ে আশা ঘোষ (৪৮) বলেন, ‘আগে কেউ কম্বল দেয়নি। এখানে কম্বল পেয়ে পুরস্কার পাওয়ার মতো আনন্দ লাগছে।’ শ্যামলী খাতুন (৩০) বলেন, ‘ভাবতেই পারিনি এভাবে কম্বল বিতরণ করা হয়। কম্বল পেয়ে খুব খুশি হয়েছি।’

শীতার্ত বিধবা নারীর গায়ে কম্বল জড়িয়ে দিচ্ছেন বন্ধুসভার সদস্যরা। পূর্ব রূপারপাড়া গ্রাম, শ্রীবরদী, শেরপুর, বৃহস্পতিবার। ছবি: দেবাশীষ সাহা রায়
শীতার্ত বিধবা নারীর গায়ে কম্বল জড়িয়ে দিচ্ছেন বন্ধুসভার সদস্যরা। পূর্ব রূপারপাড়া গ্রাম, শ্রীবরদী, শেরপুর, বৃহস্পতিবার। ছবি: দেবাশীষ সাহা রায়

শেরপুরের শ্রীবরদীর মৃগিনদী-সংলগ্ন খড়িয়া কাজিরচর ইউনিয়নের চারটি গ্রামের ৫০ পরিবারসহ সদর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের ১০০ জনকে দুপুরে কম্বল ও মশারি দেওয়া হয়েছে। এসব বিতরণে সহযোগিতা করেন বন্ধুসভার সদস্যরা। শ্রীবরদীর পূর্ব রূপারপাড়া গ্রামের প্রয়াত ফজলুর রহমানের বাগানবাড়ি প্রাঙ্গণে পূর্ব রূপারপাড়া, পশ্চিম রূপারপাড়া, মাদারপুর ও পোড়াগড় গ্রামের ৫০ জনের হাতে কম্বল ও মশারি তুলে দেন লঙ্গরপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. হারুন-অর-রশীদ। কম্বল ও মশারি পেয়ে পূর্ব রূপারপাড়া গ্রামের জমেলা খাতুন (৭০) বলেন, ‘শীতে কষ্ট পাইলেও আমগরে কেউ কম্বল দেয় নাই। আপনারাই আমগরে প্রথম কম্বল দিলেন। এই কম্বলে একটু হইলেও আমগরে কষ্ট কমবো।’

এ ছাড়া শেরপুর সদরের পশ্চিমশেরী, শেরীপাড়া, খরমপুর, বাগরাকসা, মাধবপুর ও গোপালবাড়ী এলাকার আরও ৫০ দুঃস্থ ও ছিন্নমূল মানুষের মধ্যে কম্বল ও মশারি বিতরণ করা হয়।

প্রথম আলো ফেনী বন্ধুসভার উদ্যোগে সোনাগাজী উপজেলার বকুলতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তিনটি প্রতিষ্ঠানের ৬০ জন দরিদ্র শিক্ষার্থীর মধ্যে কম্বল বিতরণ করা হয়। ২৪ জানুয়ারি। ছবি: আমজাদ হোসাইন
প্রথম আলো ফেনী বন্ধুসভার উদ্যোগে সোনাগাজী উপজেলার বকুলতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তিনটি প্রতিষ্ঠানের ৬০ জন দরিদ্র শিক্ষার্থীর মধ্যে কম্বল বিতরণ করা হয়। ২৪ জানুয়ারি। ছবি: আমজাদ হোসাইন

ফেনীর সোনাগাজীতে দুপুরে কুঠিরহাট ও বকুলতলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পূর্ব বাতদুরিয়া নুরানী মাদ্রাসার অসহায় ৬০ শিক্ষার্থীর মধ্যে কম্বল বিতরণ করা হয়। বগাদানা ইউনিয়নের বকুলতলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এসব কম্বল বিতরণ করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সোহেল পারভেজ। কম্বল পেয়ে খুশি হয়ে শিক্ষার্থী তাসপিয়া সুলতানা জানায়, এ বছর খুব শীত পড়ছে। তাঁর বাবা দিনমজুরি করে সংসার চালান। পরিবারে অনেক সদস্য। ঘরে যে কম্বল আছে তা দিয়ে সবার হয় না। নতুন কম্বলটি রাতে ঘুমানোর সময় সে আর তাঁর মা দুজনে গায়ে দিয়ে ঘুমাবে।

(প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছেন: নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী, প্রতিনিধি, ভোলা, শেরপুর ও সোনাগাজী, ফেনী)