সাংসদকে কুদরতি দেখাতে গিয়ে 'জিনের বাদশা' ধরা

তিনি নিজেকে ‘জিনের বাদশা’ বলে পরিচয় দেন। নিজের বিশেষ ক্ষমতা দিয়ে মানুষের ভাগ্যবদল, রোগশোক থেকে মুক্তি সবই করে দেওয়ার আশ্বাস দেন নির্দ্বিধায়। সর্বশেষ কথিত এই জিনের বাদশা স্থানীয় সাংসদকে নিজের কুদরতি শক্তি দিয়ে রাজনীতিকভাবে আরও উন্নতির প্রলোভন দেখান। সাংসদও রাজি হন। সেটা গত বুধবারের ঘটনা।

সাংসদ এই জিনের বাদশা আবদুল গাফ্ফারকে গতকাল বৃহস্পতিবার তাঁর কুদরতি শক্তি দেখতে গুরুদাসপুর থানায় ডেকে পাঠান। থানায় এসে ধ্যানে বসেন জিনের বাদশা। একে একে নানা ক্যারিশমা দেখাতে থাকেন। নানান জায়গা থেকে তাবিজ–কবজ আর ফল বের করতে থাকেন। জিনের বাদশার কারসাজি ধরা পড়ে যায় ওসি সেলিম রেজার কাছে। ওসি দেখেন, সূক্ষ্ম হাতসাফাইয়ের মাধ্যমে জিনের বাদশা নিজের পোশাকের গোপন স্থান থেকে এসব জিনিস বের করছেন। মুহূর্তে আটক করা হয় তাঁকে।

কথিত জিনের বাদশা আবদুল গাফ্ফারের বাড়ি নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার সাহেব বাজার এলাকায়। তাঁর বাবার নাম হোসেন আলী। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে জিনের বাদশা স্বীকার করেন, ১৩ বছর ধরে তিনি এভাবে মানুষকে প্রতারিত করে আসছেন। বিভিন্ন এলাকা থেকে সাধারণ মানুষ তাঁর বাড়িতে আসে কুদরতি ক্ষমতা দেখতে। ঝাড়ফুঁক, তাবিজ-কবজ দিয়ে সর্বরোগের চিকিৎসা করা হতো। এভাবে অনেক সম্পদের মালিক হয়েছেন তিনি। এতে তাঁর আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায়। তাই পুলিশের হাতে ধরা খাবেন, এটা ভাবতে পারেননি তিনি।

সাংসদ আবদুল কুদ্দুস বলেন, প্রতারক আবদুল গাফ্‌ফার বুধবার মুঠোফোনে জিনের বাদশা পরিচয়ে তাঁকে বোকা বানানোর চেষ্টা করেন। বুঝতে পেরে কৌশলে তাঁকে থানায় ডেকে আনা হয়। মানুষকে প্রতারণার হাত থেকে রক্ষা করতেই এই প্রতারককে কৌশলে পুলিশে দেওয়া হয়েছে বলে জানান সাংসদ।

 গুরুদাসপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘আমার সমস্যার কথা শুনে জিনের বাদশা আমাকেও একটি তাবিজ ধরিয়ে দেন। ওই তাবিজ গলায় ঝুলিয়ে রাখলে সব মুশকিল আসান হবে বলে পরামর্শ দেন আমাকে।’

ওসি সেলিম রেজা বলেন, কথিত জিনের বাদশা আবদুল গাফ্ফার একজন প্রতারক। খবরটি আগেই জানা ছিল। সাংসদের পরামর্শে কৌশলে তাঁকে থানায় ডেকে এনে আটক করা হয়েছে।