পলো বাওয়া উৎসব

মরা পদ্মা নদীর মাখন রায়পাড়া এলাকায় গতকাল পলো দিয়ে মাছ শিকার করেন সৌখিন শিকারীরা l প্রথম আলো
মরা পদ্মা নদীর মাখন রায়পাড়া এলাকায় গতকাল পলো দিয়ে মাছ শিকার করেন সৌখিন শিকারীরা l প্রথম আলো

আগের দিন মাইকে মাছ ধরার ঘোষণা শুনে গতকাল রোববার সাতসকালেই দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে এসেছে পলো দিয়ে মাছ শিকার করতে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শৌখিন মাছ শিকারিদের সঙ্গে উৎসুক দর্শকদের ভিড় বাড়ে নদীর দুই পাড়ে। অনেকটা উৎসব উদ্যাপনের মতো পলো দিয়ে মাছ ধরে অন্য রকম আনন্দ উপভোগ করল তারা। এমন দৃশ্য রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের মাখন রায়পাড়ার মরা পদ্মা নদীর খালে।
শুষ্ক মৌসুম হওয়ায় নদী ও খাল-বিলের পানি কমতে শুরু করেছে। বর্ষায় উপচে পড়া পানি কমে অনেক নিচে নেমে যাওয়ায় দেশীয় প্রজাতির নানা মাছ কম পানিতে গিয়ে জমেছে। পলো দিয়ে সেই মাছ ধরতে সবাই নেমেছে খালে। এভাবে মাছ ধরার আনন্দই আলাদা।
গতকাল সকালে দেখা যায়, দেশীয় নানা প্রজাতির মাছের মধ্যে শোল, রুই, বোয়াল, কাতলা মাছ পলোতে আটকা পড়ছে। উৎসবে অংশ নেওয়া অনেকেই রুই-কাতলা মাছ ধরতে পেরে যেন আনন্দে আত্মহারা। আবার কেউ কেউ মাছ না পেয়ে খালি হাতে ফিরে যাচ্ছে। উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের দেবগ্রাম থেকে আসা সেন্টু প্রামাণিক বলেন, ‘শনিবার সাপ্তাহিক হাটের দিনে গোয়ালন্দ বাজারে মাইকে পলো দিয়ে মাছ শিকারের কথা শুনে সাতসকালেই এসেছি একটি ধার করা পলো নিয়ে। একটি রুই ও একটি শোল মাছ ধরতে পেরে খুবই আনন্দ লাগছে।’ আরেক শৌখিন মাছ শিকারি মজিবর রহমান বলেন, ‘শখের বসে পলো বাইতে এসে একটি বোয়ালও পেয়েছি। মাছটি কত বড়, এটা বড় কথা নয়। উৎসবে অংশ নিয়ে একটি বোয়াল পেয়েছি, এটিই সবচেয়ে বড় আনন্দের কথা।’
উৎসুক দর্শকদের মধ্যে উপস্থিত একজন গোয়ালন্দ পৌরসভার দ্বিতীয় প্যানেল মেয়র নাসির উদ্দিন বলেন, ‘মাইকে পলো দিয়ে মাছ ধরার ঘোষণা শুনে দেখতে এসেছি। তবে অনেকে বিষয়টি জানতে না পারায় গতবারের চেয়ে লোকজনের উপস্থিতি এবার কিছুটা কম।’