তিন ম্যাচে ৩৪৯ রান করেও ইমরুল তৈরি থাকেন বাদ পড়তে!

ইমরুল আবারও বাদ পড়েছেন জাতীয় দল থেকে । ছবি: প্রথম আলো
ইমরুল আবারও বাদ পড়েছেন জাতীয় দল থেকে । ছবি: প্রথম আলো
>ইমরুল কায়েস গত অক্টোবরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে করলেন ৩৪৯ রান। সর্বশেষ নিউজিল্যান্ড সফরে ওয়ানডে সিরিজেও বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ রান ছিল। তবু এবারের সফরে দলে ঠাঁই পাননি। বারবার বাদ পড়ে ইমরুল ক্লান্ত

বিপিএলে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস যেভাবে খেলছে, অধিনায়ক ইমরুল কায়েসের মুখ খুশিতে ঝলমল করারই কথা। পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষে উঠে আজ সংবাদ সম্মেলনে ইমরুল যেমন এলেন হাসিমুখেই। কিন্তু এ খুশির মধ্যেও মনের ভেতর জমে থাকা কষ্টগুলো যেন দলা পাকিয়ে উঠে এল বারবার।

গত অক্টোবরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজটা স্বপ্নের মতো কাটালেন। সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে আর ১০ রান করতে পারলে ওই সিরিজে নামের পাশে হ্যাটট্রিক সেঞ্চুরি দেখতে পেতেন। ১৪৪, ৯০ ও ১১৫—টানা তিন ম্যাচে করলেন ৩৪৯ রান। ডিসেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দুই ওয়ানডের বেশি খেলার সুযোগ পেলেন না। জায়গাই মিলল না নিউজিল্যান্ড সফরের ওয়ানডে দলে।

ইমরুলকে না নেওয়ার পেছনে যুক্তি দেখাতে গিয়ে প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন সান্ত্বনার বাণী দিয়েছেন বাঁহাতি ওপেনারকে, ‘এমন না ওকে দূরে ঠেলে দিয়েছি। আশা করি সে ফিরে আসবে।’

ইমরুল এই সান্ত্বনা অতীতে কতই তো পেয়েছেন। তাঁর মধ্যে এখন আফসোস কাজ করে না বলেই দাবি করলেন, ‘গত ১০ বছর ধরে তো এভাবেই খেলে আসছি। খেলতে হচ্ছে। নিজেও জানি না যে, ভালো খেলার পর পরের সিরিজে খেলতে পারব কি না। নিজেও সেটা (ভালো খেলেও স্কোয়াডে জায়গা নিশ্চিত) আশা করি না।’ নিয়মিত সুযোগ পাবেন না, ভালো খেলেও বাদ পড়ে যেতে পারেন, এটাও নাকি মানসিকভাবে এখন তৈরিই করে রেখেছেন, ‘ওভাবেই মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকি। যখনই সুযোগ পাই, সেভাবেই খেলার চেষ্টা করি। ১০ বছর খেলে ফেলেছি, ওই আফসোস আর নেই।’

এই যে বাদ পড়া আর ফেরা, নির্বাচকেরা কখনো বলেছেন না সমস্যাটা কোথায়, কিংবা তাঁর কোন কোন ব্যাপারগুলো বদলাতে হবে। ইমরুল বলছেন, ‘এটা যদি পরিষ্কার করে, তাহলে তা নিয়ে কাজ করতে পারি। আরও বেশি পরিশ্রম করতে পারি। এটা পরিষ্কার হলে বুঝতে পারতাম, কেন দলে থাকছি না, বা কেন বাদ পড়ছি। নিজেও জানি না, হয়তো দলের সমন্বয়ের চিন্তা করেছেন, একই পজিশনে অনেক ব্যাটসম্যান থাকায় আমাকে দরকার নেই। এই জায়গায় হয়তো আমি তাঁদের (নির্বাচকেরা) ভাবনায় নেই।’

সংবাদ সম্মেলন শেষে ড্রেসিংরুমে ফেরার পথে ইমরুলের কণ্ঠে আরও হতাশা ঝরে পড়ল, ‘আচ্ছা বলেন তো, ২০১৬ সালে সর্বশেষ নিউজিল্যান্ড সফরের ওয়ানডে সিরিজে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সর্বোচ্চ রান কার ছিল?’

ইমরুলেরই। ৩ ওয়ানডেতে ১১৫ রান। তাঁর পরে তামিম, ১১৩ রান। সাকিব-সাব্বিররা পুরো সিরিজে ১০০ রানও করতে পারেননি সেবার। ক্যারিয়ারের এতবার বাদ পড়া, আর ফেরা, ইমরুল ভীষণ ক্লান্ত। ড্রেসিংরুম ফেরার পথে বিড় বিড় করে বলে যান, ‘এভাবে চালিয়ে যাওয়া সত্যি কঠিন।’