স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক পরিচালককে জিজ্ঞাসাবাদ

দুদক
দুদক

দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একজন পরিচালককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ বুধবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন দুদকের উপপরিচালক সামছুল আলম।

দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক এবং লাইন ডিরেক্টর (চিকিৎসা শিক্ষা ও স্বাস্থ্য জনশক্তি উন্নয়ন) অধ্যাপক আবদুর রশিদকে ৬ ঘন্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।

জিজ্ঞাসাবাদ শেষে দুদক কার্যালয় ছাড়ার সময় গণমাধ্যমকর্মীরা তাঁর মন্তব্য জানতে চেষ্টা করলে তিনি দ্রুত ওই জায়গা ছেড়ে চলে যান। যাওয়ার সময় তিনি নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেন।

দুদক সূত্র জানায়, তাঁকে আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি আবারও দুদকে আসতে বলা হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ভুয়া টেন্ডারের মাধ্যমে শত কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে দুদক। এ ছাড়া জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগও রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।
এর আগে প্রতিষ্ঠানটির বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে দুদকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

অধিদপ্তরের হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা আবজাল হোসেন ও তাঁর স্ত্রী রুবিনা খানমের সম্পদের তথ্য নিয়ে বেশ আলোড়ন তৈরি হয়েছে। দুদক আবজালকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। রুবিনাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হলেও তিনি সময়ের আবেদন করেছেন।
আগামীকাল বৃহস্পতিবার আবজালের পাঁচ নিকটাত্মীয়কে জিজ্ঞাসাবাদ করার কথা রয়েছে। তাঁরা হলেন আবজালের দুই ভাই, ফরিদপুর টিবি হাসপাতালে ল্যাব অ্যাটেনডেন্ট বেলায়েত হোসেন ও জাতীয় অ্যাজমা সেন্টারে হিসাব রক্ষক লিয়াকত হোসেন। আবজালের স্ত্রী রুবিনা খানমের তিন ভাই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গাড়িচালক রকিবুল ইসলাম, উচ্চমান সহকারী বুলবুল ইসলাম এবং খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অফিস সহকারী শরিফুল ইসলাম।

গত ২৩ জানুয়ারি অধিদপ্তরের অধীন বিভিন্ন কার্যালয়ের কিছু ‘দুর্নীতিবাজ, স্বেচ্ছাচারী ও ক্ষমতার অপব্যবহারকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীর’ বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছে দুদক। চিঠিতে বলা হয়, ‘দুর্নীতির বলয়’ তৈরি করা এসব কর্মকর্তা-কর্মচারী ক্ষমতার অপব্যবহার করে অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন। দুদকে তাঁদের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে অনেক অভিযোগ জমা হয়েছে, যা দুদকের গোয়েন্দা ইউনিটের অনুসন্ধান পর্যায়ে রয়েছে।

যে ২৩ কর্মকর্তা কর্মচারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে তাঁদের মধ্যে আছেন ঢাকার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালকের (স্বাস্থ্য) কার্যালয়ের সহকারী প্রধান (পরিসংখ্যানবিদ) মীর রায়হান আলী, প্রশাসনিক কর্মকর্তা ফারুক হাসান, প্রধান সহকারী আশরাফুল ইসলাম, প্রধান সহকারী সাজেদুল করিম এবং দুই উচ্চমান সহকারী তৈয়বুর রহমান ও সাইফুল ইসলাম।

চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালকের (স্বাস্থ্য) কার্যালয়ের উচ্চমান সহকারী ফয়জুর রহমান, প্রধান সহকারী মাহফুজুল হক, কম্পিউটার অপারেটর আজমল খান, ময়মনসিংহ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালকের (স্বাস্থ্য) কার্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান, প্রধান সহকারী-কাম হিসাবরক্ষক আব্দুল কুদ্দুস, সিলেটের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালকের (স্বাস্থ্য) কার্যালয়ের প্রধান সহকারী নুরুল হক, প্রশাসনিক কর্মকর্তা গৌস আহমেদ, উচ্চমান সহকারী আমান আহমেদ ও অফিস সহকারী-কাম কম্পিউটার অপারেটর নেছার আহমেদ চৌধুরী বিরুদ্ধেও অভিযোগ পাওয়ার কথা জানিয়েছে দুদক।

এ ছাড়া খুলনা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালকের (স্বাস্থ্য) কার্যালয়ের ব্যক্তিগত সহকারী ফরিদ হোসেন, অফিস সহকারী মো. মাসুম, প্রধান সহকারী আনোয়ার হোসেন, বরিশাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালকের (স্বাস্থ্য) কার্যালয়ের প্রধান সহকারী মো. রাহাত খান, উচ্চমান সহকারী মো. জুয়েল, রংপুর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালকের (স্বাস্থ্য) কার্যালয়ের উচ্চমান সহকারী আজিজুর রহমান, স্টেনোগ্রাফার সাইফুল ইসলাম এবং প্রশাসনিক কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছে সংস্থাটি।