তৃতীয় দিনে বুড়িগঙ্গার তীরে ১৩০টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ

তৃতীয় দিনের মতো বুড়িগঙ্গার তীরে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান চালিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ। প্রথম আলো ফাইল ছবি
তৃতীয় দিনের মতো বুড়িগঙ্গার তীরে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান চালিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ। প্রথম আলো ফাইল ছবি

ঢাকার কামরাঙ্গীরচর থানাধীন হুজুরপাড়া, আশ্রাফাবাদ ও সিরাজনগর এলাকায় ‍উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে ১৩০টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। উচ্ছেদ অভিযানের তৃতীয় দিনে আজ বৃহস্পতিবার এসব উচ্ছেদ অভিযান চালান বিআইডব্লিউটিএর কর্মকর্তারা।

এর আগে উচ্ছেদ অভিযান শুরুর প্রথম দিন গত মঙ্গলবার বুড়িগঙ্গার তীর দখল করে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ১৬৪টি অবৈধ স্থাপনা এবং দ্বিতীয় দিন গতকাল বুধবার কামরাঙ্গীরচর থানাধীন নবাবচর মৌজার দক্ষিণ মুন্সিহাটি এলাকায় বুড়িগঙ্গার তীরে অভিযান চালিয়ে ১৪৫টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে বিআইডব্লিউটিএ।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে বিআইডব্লিউটিএর কর্মকর্তারা কামরাঙ্গীরচরের আশ্রাফাবাদ এলাকায় মজিবর ভূঁইয়ার মালিকানাধীন আধা পাকা ভবনের একটি বিস্কুটের কারখানা অপসারণের মাধ্যমে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেন। এ সময় বিস্কুটের কারখানার পরিচালক আনোয়ার মিয়া অভিযোগ করেন, পাঁচ বছর আগে সাড়ে সাত কাঠা জমিতে আধা পাকা স্থাপনা নির্মাণ করে সেখানে বিস্কুট তৈরির কারখানা বানান তিনি। বিআইডব্লিউটিএর লোকজন তাঁদের কারখানার জায়গা নদীর জায়গা দাবি করে গুঁড়িয়ে দিয়েছে।

আজকের উচ্ছেদ অভিযানে নেতৃত্ব দেন বিআইডব্লিউটিএর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমান। অবৈধভাবে নদীর জায়গা দখল ও ভরাট করার অভিযোগে মোস্তাফিজুর রহমান (৩৮) ও রুস্তম আলীকে (৪০) ২৫ হাজার টাকা করে জরিমানা এবং অনাদায়ে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন বিআইডব্লিউটিএর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমান।

সিরাজনগর এলাকার বাসিন্দা মো. আলাউদ্দিন উচ্ছেদ অভিযানের বিষয়ে অভিযোগ করেন, প্রায় ২০ বছর আগে তিনি তাঁর মেয়ে রোকেয়া বেগম ও আরেক মেয়ে রেহানা বেগমের স্বামীকে ২৩/৮ সিরাজনগর এলাকায় ১০ কাঠা জমি কিনে দিয়েছিলেন। সেখানে একটি দ্বিতীয় তলা ভবন এবং কণিকা ফুড প্রডাক্টসের একটি কারখানাসহ চারটি পাকা দোকান নির্মাণ করে দিয়েছিলেন। বিআইডব্লিউটিএর লোকজন তাঁদের কোনো নোটিশ না দিয়ে তাঁদের কেনা সম্পত্তির জায়গার দুটি ভবন ও চারটি দোকান উচ্ছেদ করেছে।

উচ্ছেদ অভিযানকারীরা আজ সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কামরাঙ্গীরচর থানার হুজুরপাড়া, আশ্রাফাবাদ ও সিরাজনগর এলাকার একটি ছয়তলা ভবনসহ ৩০টি পাকা ভবন, ৬০টি আধা পাকা ভবন ও ৪০টি ছোট বড় টিনশেডের ছাপরা, টংঘরসহ ১৩০টি স্থাপনা উচ্ছেদ করে।

উচ্ছেদ অভিযান বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, মানুষ ও মালামালের নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হচ্ছে। কোনো রকমের দুর্ঘটনা ও ক্ষয়ক্ষতি যাতে না ঘটে, সে বিষয়ে দৃষ্টি রাখা হচ্ছে। নদীর জায়গা দখল করে অবৈধভাবে ভরাট ও স্থাপনা নির্মাণ করার অভিযোগে দুই ব্যক্তিকে আটক করে প্রত্যেককে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

বিআইডব্লিউটিএর ঢাকা নদীবন্দরের যুগ্ম পরিচালক এ কে এম আরিফউদ্দিন, উপপরিচালক মিজানুর রহমান, সহকারী পরিচালক নুর হোসেন, আসাদুজ্জামানসহ পুলিশ ও আনসার সদস্যরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।