দুদকের ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ: স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ২৩ কর্মকর্তাকে বদলি

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে ‘দুর্নীতির বলয়’ ভাঙতে সংস্থাটির ২৩ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে চিঠি দিয়েছিল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের ওই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে ২৩ কর্মকর্তাকে বদলি করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

আজ বৃহস্পতিবার মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের যুগ্মসচিব (পার-২) এ কে এম ফজলুল হক খান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বদলির প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। চিঠিতে বলা হয়, আগামী ৭ দিনের মধ্যে তাঁরা বদলিকৃত কর্মস্থলে যোগ না দিলে বর্তমান কর্মস্থল থেকে তাৎক্ষণিক অব্যাহতি পেয়েছেন বলে গণ্য হবে।

বদলির আদেশ পাওয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে ঢাকার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালকের (স্বাস্থ্য) কার্যালয়ের সহকারী প্রধান (পরিসংখ্যানবিদ) মীর রায়হান আলীকে বরিশালে, প্রশাসনিক কর্মকর্তা ফারুক হাসানকে রাঙামাটি, প্রধান সহকারী আশরাফুল ইসলামকে খাগড়াছড়ি, প্রধান সহকারী সাজেদুল করিমকে সিরাজগঞ্জ এবং উচ্চমান সহকারী তৈয়বুর রহমানকে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও সাইফুল ইসলামকে হাতিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বদলি করা হয়েছে।।

চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালকের (স্বাস্থ্য) কার্যালয়ের উচ্চমান সহকারী ফয়জুর রহমানকে সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, প্রধান সহকারী মাহফুজুল হককে নেত্রকোনা সিভিল সার্জন কার্যালয়, কম্পিউটার অপারেটর আজমল খানকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ, ময়মনসিংহ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালকের (স্বাস্থ্য) কার্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমানকে রংপুর সিভিল সার্জন কার্যালয়, প্রধান সহকারী-কাম হিসাবরক্ষক আব্দুল কুদ্দুসকে ভোলার চরফ্যাশন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, সিলেটের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালকের (স্বাস্থ্য) কার্যালয়ের প্রধান সহকারী নুরুল হককে জামালপুর সিভিল সার্জন কার্যালয়, প্রশাসনিক কর্মকর্তা গৌস আহমেদকে সিরাজগঞ্জ সিভিল সার্জন কার্যালয়, উচ্চমান সহকারী আমান আহমেদকে কুড়িগ্রামের চিলমারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও অফিস সহকারী-কাম কম্পিউটার অপারেটর নেছার আহমেদ চৌধুরীকে নেত্রকোনার বারহাট্টা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বদলি করা হয়েছে।
খুলনা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালকের (স্বাস্থ্য) কার্যালয়ের ব্যক্তিগত সহকারী ফরিদ হোসেনকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, অফিস সহকারী মো. মাসুমকে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, প্রধান সহকারী আনোয়ার হোসেন নওগাঁ সিভিল সার্জন অফিস, বরিশাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালকের (স্বাস্থ্য) কার্যালয়ের প্রধান সহকারী মো. রাহাত খান মানিকগঞ্জের সিভিল সার্জন অফিস, উচ্চমান সহকারী মো. জুয়েল কক্সবাজারের মহেশখালী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, রংপুর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালকের (স্বাস্থ্য) কার্যালয়ের উচ্চমান সহকারী আজিজুর রহমান শেরপুরের সিভিল সার্জন কার্যালয়, স্টেনোগ্রাফার সাইফুল ইসলাম গোপালগঞ্জের শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং প্রশাসনিক কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম সুনামগঞ্জের সিভিল সার্জন অফিসে বদলি হয়েছে।
গত ২৩ জানুয়ারি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে ওই চিঠি পাঠিয়েছিল দুদক। চিঠিতে বলা হয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অধীন বিভিন্ন কার্যালয়ে কিছু দুর্নীতিবাজ, স্বেচ্ছাচারী ও ক্ষমতার অপব্যবহারকারী কর্মকর্তা-কর্মচারী দীর্ঘদিন ধরে একই কর্মস্থলে চাকরি করার সুবাদে দুর্নীতির শক্তিশালী বলয় তৈরি হয়েছে। এদের কারণে অধিদপ্তরের সুশাসন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
চিঠিতে দুদক আরও বলেছে, ‘দুর্নীতির বলয়’ তৈরি করা এসব কর্মকর্তা-কর্মচারী ক্ষমতার অপব্যবহার করে অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন। দুদকে তাঁদের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে অনেক অভিযোগ জমা হয়েছে, যা দুদকের গোয়েন্দা ইউনিটের অনুসন্ধান পর্যায়ে রয়েছে।
সংস্থাটি বলেছে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দুর্নীতিবাজ ও স্বেচ্ছাচারী এই ২৩ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে চিহ্নিত করেছে দুদক।