বিতর্কিত বই মেলায় না আনার জন্য প্রকাশকদের প্রতি বাংলা একাডেমির আহ্বান

বিতর্কিত বই মেলায় না আনার জন্য প্রকাশকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবিবুল্লাহ সিরাজী। তিনি বলেছেন, বিতর্কিত বই মেলায় আনা হলে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আজ বৃহস্পতিবার বাংলা একাডেমিতে নিজ কার্যালয়ে প্রথম আলোকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক এসব কথা বলেন।

হাবিবুল্লাহ সিরাজী বলেন, ‘অভিযোগ আছে, মেলায় ভালো বই কিনতে গেলে কিংবা উন্নত মুদ্রণের একটা বই কিনতে গেলে দাম বেশি পড়ে যায়। দামের ব্যাপারে বাংলা একাডেমির কিছু বলার থাকে না। প্রকাশকদের কাছে বিনীত অনুরোধ করি, আপনারা মুনাফার দিকে না চেয়ে মানুষের দিকে চাইবেন, যাতে বইগুলো মানুষের হাতে পৌঁছায়।’

বই প্রকাশের ব্যাপারে প্রকাশকদের যত্নবান হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক বলেন, ‘মেলার প্রধান আকর্ষণ বই, প্রধান উপাদান। আমরা চাচ্ছি, বইয়ের প্রতি প্রকাশকেরা যত্নবান হোক, বাংলা একাডেমিও সচেতন, যাতে এমন বই মেলায় না আসে যাতে বিতর্ক সৃষ্টি করে, যা খুবই নিম্নমানের।’

এত বড় মেলায় একদিনে সবকিছু করা সম্ভব না মন্তব্য করে হাবিবুল্লাহ সিরাজী বলেন, ‘এ বছর পারা যায়নি, তবে আগামী বছর মৌসুমি প্রকাশকদের ব্যাপারে নজর দেব। এ বছরও কিছু মৌসুমি প্রকাশক মেলায় এসে যাবে। মেলা উপলক্ষে তাঁরা বই প্রকাশ করেছেন সে কারণে এসে গেছেন।’

বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক আরও বলেন, ‘বাংলা একাডেমির প্রধান উদ্দেশ্যে, ভালো বই পাঠকের হাতে পৌঁছানো। সে জন্য নিত্যদিন আমরা চাইব, একটা বইয়ের ওপর ব্রিফিং করতে। সাত দিন পরপর একটা সংবাদ সম্মেলন করতে। সেখানে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা থাকবেন, আমিও থাকব।’

দর্শনার্থীরা এবার বই মেলা ভিন্নতর ভাবে দেখতে পাবেন আশা প্রকাশ করে হাবিবুল্লাহ সিরাজী বলেন, ‘একটি চেতনা আমরা দেব, ৫২ কী,৭১ কী। আমাদের সন্তানেরা, আমাদের শিশুরা, আমাদের মায়েরা, আমাদের বোনেরা ৫২ এবং ৭১ সম্পর্কে আবার নতুন করে ভাববেন। আবার নতুন ভাবে কেউ জানবেন।’

বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক বলেন, ‘স্বাধীনতার ৪৭ বছর পরেও যে সংকটটি আমি অনুভব করি তা হলো, অনেকে জানেন না,৫২-র ভাষা আন্দোলনে কারা শহীদ হয়েছিলেন, ৫২-র ভাষা আন্দোলন কেন হয়েছিল। ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধ কেন হয়েছিল। ৩০ লাখ শহীদ, ২ লাখের অধিক মা-বোন কেন নির্যাতিত হয়েছিলেন। অন্তত তাঁদের চেতনায় এই শব্দ দুটো ঢুকে যাক। এর পরিপ্রেক্ষিতে এবার মেলার আয়োজন।’

হাবিবুল্লাহ সিরাজী জানান, এবার মেলায় তিন শর বেশি ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা থাকবে। পুলিশ বাহিনীর সদস্য থাকবেন, র‍্যাবের দল থাকবেন। পাশাপাশি আনসার বাহিনীর সদস্যরা থাকবেন। আগুন নেভানোর জন্য থাকবে দমকল বাহিনী।