নাটোরে যুবলীগ নেতা অপহরণ, শহরজুড়ে বিক্ষোভ

জামিল হোসেন ওরফে মিলন। ছবি: সংগৃহীত
জামিল হোসেন ওরফে মিলন। ছবি: সংগৃহীত

নাটোর সদর উপজেলার যুবলীগ নেতা জামিল হোসেন ওরফে মিলনকে (৩৮) অপহরণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন দলীয় নেতা-কর্মীরা। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে নাটোর শহরের হাফরাস্তা তালতলা এলাকার মিলনের বাড়ির পাশের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে সাদা পোশাকে কিছু লোক তাঁকে মাইক্রোবাসে করে তুলে নিয়ে গেছে। পুলিশ ও র‌্যাব কর্মকর্তারা তাঁর সন্ধান পাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন।

মিলনকে উদ্ধারের দাবিতে শত শত নেতা-কর্মী আজ শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে শহরের সব সড়ক বন্ধ করে দেন। এতে নাটোরের সঙ্গে ঢাকাসহ সব জেলার যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। মিলন নাটোর জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক (প্রস্তাবিত) ও সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী।

নাটোর থানা সূত্রে জানা যায়, গতকাল রাত ১২টার দিকে তাঁর বাড়ির পাশের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে কিছু লোক তাঁকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে গেছে। এর পর থেকে তাঁর সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। মিলনের বিরুদ্ধে এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে জমি-জলাশয় দখল করার অভিযোগ রয়েছে। কয়েক মাস আগে র‌্যাব লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁর কয়েকজন সহযোগীকে আটক করে থানায় সোপর্দ করেছিল।

জামিল হোসেন ওরফে মিলনকে (৩৮) অপহরণের অভিযোগে দলীয় নেতা কর্মীদের বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধ। ছবি: মুক্তার হোসেন
জামিল হোসেন ওরফে মিলনকে (৩৮) অপহরণের অভিযোগে দলীয় নেতা কর্মীদের বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধ। ছবি: মুক্তার হোসেন

মিলনের পরিবার সূত্রে জানা যায়, অন্যান্য দিনের মতো বৃহস্পতিবার রাতে মিলন বাড়ির অদূরে তাঁর ব্যক্তিগত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বসে ছিলেন। রাত ১২টার দিকে সাদা পোশাকের কিছু লোক তাঁকে জোর করে একটি সাদা (সিলভার কালার) হাইস মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে চলে যায়। এর পর থেকে তাঁর মুঠোফোন বন্ধ রয়েছে।

মিলনের বাবা এমদাদুল হক বলেন, ঘটনার পর পরই তিনি বিষয়টি পুলিশ ও দলীয় নেতাদের অবহিত করেন। ব্যক্তিগতভাবে র‌্যাব, পুলিশসহ প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করেও তিনি তাঁর ছেলের সন্ধান পাননি। তিনি তাঁর ছেলেকে সুস্থ শরীরে ফেরত চান।

টায়ার জ্বেলে বিক্ষোভ করেন দলীয় নেতা-কর্মীরা। ছবি: মুক্তার হোসেন
টায়ার জ্বেলে বিক্ষোভ করেন দলীয় নেতা-কর্মীরা। ছবি: মুক্তার হোসেন

মিলনের অপহরণের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর তাঁর শত শত অনুসারী ও দলীয় নেতা-কর্মীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে আজ সকাল থেকেই শহরের কানাইখালি পুরোনো বাসস্ট্যান্ডে জড়ো হতে থাকেন। সকাল ১০টার দিকে তাঁরা মিছিল করে মাদ্রাসা মোড়ে অবস্থান নিয়ে বগুড়াগামী যানবাহন বন্ধ করে দেন। পরে তাঁরা হরিশপুর বাইপাস মোড়ে গিয়ে নাটোরের সঙ্গে যোগাযোগের সব কটি মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেন। সড়কে শুয়ে সড়ক অবরোধ করেন। টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করছেন। এ সময় তারা বিভিন্ন স্লোগান দেন। এখন পর্যন্ত সড়ক অবরোধ অব্যাহত আছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ অবস্থান করছে।

নাটোর র‌্যাব ক্যাম্পের কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার যায়েদ শাহরিয়ার জানান, মিলনের ব্যাপারে তাঁরা কিছুই জানেন না। ঘটনাটি শোনার পর তাঁরা অনুসন্ধান শুরু করেছেন।

নাটোরের পুলিশ সুপার সাইফুল্লাহ আল মামুন জানান, তাঁরা মিলনের সন্ধানের জন্য সব রকম চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে শুক্রবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত এ ব্যাপারে কোনো অগ্রগতি হয়নি। তিনি সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানান।