চট্টগ্রামে সাত কেন্দ্রে ভুল প্রশ্নপত্র, উদ্বেগ পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের

পরীক্ষা শেষে ডা. খাস্তগীর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে বেরিয়ে আসছে পরীক্ষার্থীরা। বাইরে অভিভাবকদের ভিড়। চট্টগ্রাম, ০২ ফেব্রুয়ারি। ছবি: সৌরভ দাশ
পরীক্ষা শেষে ডা. খাস্তগীর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে বেরিয়ে আসছে পরীক্ষার্থীরা। বাইরে অভিভাবকদের ভিড়। চট্টগ্রাম, ০২ ফেব্রুয়ারি। ছবি: সৌরভ দাশ

চট্টগ্রামে এসএসসি পরীক্ষার সাতটি কেন্দ্রে অনিয়মিত শিক্ষার্থীদের জন্য প্রণীত বহু নির্বাচনী প্রশ্ন (এমসিকিউ) সরবরাহ করা হয় নিয়মিত পরীক্ষার্থীদের। পরীক্ষা শেষে ভুল প্রশ্নে পরীক্ষা দেওয়া শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকেরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। যদিও এসব কেন্দ্রের সব পরীক্ষার্থীই এই ভুলের শিকার হয়নি।

আজ শনিবার পরীক্ষা শুরুর প্রথম দিনেই বাংলা প্রথম পত্রের পরীক্ষায় এ ঘটনা ঘটে। তবে এ ঘটনার কারণে শিক্ষার্থীরা কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত হবে না বলে জানিয়েছে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ড।

চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ড সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম নগরের ডা. খাস্তগীর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, মিউনিসিপ্যাল মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, পতেঙ্গা উচ্চবিদ্যালয়, গরীবে নেওয়াজ উচ্চবিদ্যালয় এবং কক্সবাজারের পেকুয়া বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, উখিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও পালং উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে ভুল প্রশ্নপত্র সরবরাহ করা হয়েছে। তবে কত জন পরীক্ষার্থী এই ভুলের শিকার হয়েছে তা নিশ্চিত করতে পারেনি শিক্ষা বোর্ড।

শনিবার দুপুরে ডা. খাস্তগীর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে দেখা যায়, পরীক্ষার্থীদের অনেকেই কান্নাকাটি করছিল। তাদের অভিভাবকেরা উদ্বিগ্ন। মূলত কেন্দ্র থেকে বেরিয়ে অন্য সহপাঠীর সঙ্গে প্রশ্ন মেলাতে গিয়ে শিক্ষার্থীরা ভুল প্রশ্নে পরীক্ষা দেওয়ার বিষয়টি ধরতে পারে।

এরপর এ কেন্দ্র পরিদর্শন করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিনা আক্তার। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ডা. খাস্তগীর বালিকা সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের দুটি কক্ষে ১৯ জন নিয়মিত পরীক্ষার্থী ২০১৮ সালের সিলেবাস অনুযায়ী তৈরি করা প্রশ্নে পরীক্ষা দিয়েছে। কেন্দ্র সচিবের কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে—তিনি ভুলে এটি হয়ে গেছে বলে জানান। এরপর ভুল প্রশ্নে পরীক্ষা দেওয়া শিক্ষার্থীদের ক্রমিক নম্বরগুলো শিক্ষাবোর্ডের কাছে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে জানানো হয়েছে—শিক্ষার্থীরা কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত হবে না।
ডা. খাস্তগীর বালিকা সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কেন্দ্র সচিব শাহেদা আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, ‘এটি একেবারেই অনাকাঙ্ক্ষিত ভুল ছিল। এত আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করার পরেও এটি কীভাবে হয়ে গেল মানতে পারছি না। আমি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই।’
যেসব কেন্দ্রে ভুল প্রশ্নপত্র সরবরাহ করা হয়েছে সেসব কেন্দ্রের সচিব ও কক্ষ পর্যবেক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ মাহবুব হাসান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এবার বাংলা পরীক্ষা ২০১৬,২০১৮ এবং ২০১৯ সালের সিলেবাস অনুযায়ী তৈরি করা হয়েছে। এর মধ্যে সাতটি কেন্দ্রে কেন্দ্র সচিব ও কক্ষ পর্যবেক্ষকদের ভুলে ২০১৯ সালের সিলেবাসে যাদের পরীক্ষা দেওয়ার কথা, তাদের ২০১৮ সালের সিলেবাস অনুসারে প্রণীত প্রশ্নপত্র বিতরণ করা হয়েছে।
শিক্ষার্থীরা কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত হবে না জানিয়ে মোহাম্মদ মাহবুব হাসান বলেন, আমরা ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের ক্রমিক নম্বর সংগ্রহ করছি। উত্তরপত্র মূল্যায়নের সময় তাদের বিষয়টি দেখা হবে।

তবে এমন আশ্বাসেও শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের ‘ভয়’ কাটছে না। মিউনিসিপ্যাল মডেল উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে পরীক্ষা দেওয়া এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক তন্ময় দাশ প্রথম আলোকে বলেন, শিক্ষার্থীদের জানানো হয়েছে তাদের বিষয়টি বিবেচনা করা হবে। কিন্তু প্রথম পরীক্ষাতেই ভুল প্রশ্নে পরীক্ষা দেওয়ায় পরবর্তী পরীক্ষাগুলোতে তাদের ওপর নেতিবাচক পড়তে পারে।