ভুল প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা, ভিন্নভাবে খাতা দেখা হবে: শিক্ষামন্ত্রী

শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি
শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি

শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, এসএসসি পরীক্ষায় যে ১৮টি কেন্দ্রে ভুল প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা হয়েছে, সেই উত্তরপত্রগুলো ভিন্নভাবে দেখা হবে, যাতে কেউ কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। আর তদন্ত করে এ ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জাতীয় সংসদে রোববার এক প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী এ কথা বলেন।

চট্টগ্রাম, জামালপুর, নওগাঁ, শেরপুর, সাতক্ষীরা, মুন্সিগঞ্জ, গাইবান্ধা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, বাগেরহাট ও মাদারীপুরে গতকাল শনিবার মোট ১৮টি কেন্দ্রে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের ভুল প্রশ্নপত্র দেওয়া হয়। সেদিন ছিল বাংলা প্রথম পত্রের পরীক্ষা। এসব প্রশ্নপত্র ছিল পুরোনো পাঠ্যক্রমের ভিত্তিতে অনিয়মিত শিক্ষার্থীদের জন্য।

রোববার জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তর পর্বে সম্পূরক প্রশ্নে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সদস্য মুজিবুল হক শিক্ষামন্ত্রীর কাছে জানতে চান, কার ভুলে এ ঘটনা ঘটেছে এবং শিক্ষার্থীদের কী হবে?

জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, কয়েকটি কেন্দ্রে এ সমস্যা হয়েছে। পরীক্ষায় কিছুসংখ্যক অনিয়মিত পরীক্ষার্থী থাকে। তাদের প্রশ্নপত্র তাদের সময়কার সিলেবাসে করা হয়। যারা নিয়মিত, তাদের নতুন সিলেবাস অনুযায়ী হয়। নিয়মিত ও অনিয়মিতদের প্রশ্নপত্র আলাদাই পাঠানো হয়। যে কেন্দ্রগুলোতে এই সমস্যা হয়েছে, সেখানকার কেন্দ্রসচিবসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ভুলের কারণে এই ঘটনাটি ঘটেছে। ওই সব কেন্দ্রে নিয়মিত শিক্ষার্থী যারা অনিয়মিতদের প্রশ্নে পরীক্ষা দিয়েছে, তাদের চিহ্নিত করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরীক্ষার্থীদের খাতা ভিন্নভাবেই দেখা হবে, যাতে কোনোভাবেই তারা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। আর যাদের ভুলের কারণে এই ঘটনা ঘটেছে, ইতিমধ্যে তাদের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অপর এক সম্পূরক প্রশ্নে বিরোধী দলের সদস্য ফখরুল ইমাম বলেন, কীভাবে মানদণ্ড ঠিক করা হবে? ওই শিক্ষার্থীদের আরেক দিন পরীক্ষা নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
জবাবে দীপু মনি বলেন, অনিয়মিতদের সিলেবাস পুরোপুরি ভিন্ন নয়। সিলেবাসে খানিকটা জায়গায় ভিন্নতা আছে। পরীক্ষায় যে প্রশ্ন এসেছে তার সবকিছু নিয়মিত শিক্ষার্থীদের সিলেবাসের বাইরে ছিল না। খুবই অল্প জায়গায় ভিন্নতা আছে।
মন্ত্রী বলেন, আবার পরীক্ষার ব্যবস্থা নিলে ভিন্ন প্রশ্নে তাদের পরীক্ষা দিতে হবে। সেখানেও কিন্তু সমান মানদণ্ড দেওয়া যাবে না। ঘটনার বাস্তবতায় সব থেকে ভালো সমাধানটিই তাঁরা বেছে নেওয়ার চেষ্টা করেছেন। এর থেকে ভালো, যুক্তিযুক্ত ও একই মানদণ্ডে বজায় রেখে অন্য কিছু করার পরামর্শ থাকলে তাঁরা সেটা বিবেচনা করবেন।

স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনের শুরুতে প্রশ্নোত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হয়।

প্রাথমিকে ঝরে পড়ার হার ১৮.৬ শতাংশ
সরকারি দলের সাংসদ ইসরাফিল আলমের প্রশ্নের জবাবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন বলেন, ২০১৮ সালের শুমারি অনুযায়ী প্রাথমিক স্তরে ঝরে পড়ার হার ১৮ দশমিক ৬০ শতাংশ। এর মধ্যে প্রথম শ্রেণিতে ২ দশমিক ২, দ্বিতীয় শ্রেণিতে ২ দশমিক ৮, তৃতীয় শ্রেণিতে ২ দশমিক ৯, চতুর্থ শ্রেণিতে ৭ দশমিক ৬ ও পঞ্চম শ্রেণিতে ৩ দশমিক ৩ শতাংশ। সরকারি দলের নিজাম উদ্দিনের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী জানান, ২০১৮ সালের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শুমারি অনুযায়ী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মোট শিক্ষার্থী ১ কোটি ৭৩ লাখ ৩৮ হাজার ১০০ জন।