রাঙামাটির কাপ্তাইয়ে দুর্বৃত্তদের গুলিতে দুজন নিহত

ছবিটি প্রতীকী
ছবিটি প্রতীকী

পাহাড়ে স্থানীয় বিববদমান রাজনৈতিক দলগুলোর সংঘাতে প্রাণ গেল দুজনের। নিহত দুজনের মধ্যে একজন জনসংহতি সমিতির (এমএন লারমা) কর্মী। অন্যজন স্থানীয় বাঙালি বাসিন্দা। রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার রাইখালী ইউনিয়নে কারিগড়পাড়ায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে তাঁরা নিহত হন। আজ সোমবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনার জন্য পাহাড়ের আঞ্চলিক দল জনসংহতি সমিতি (এমএন লারমা) পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতিকে (জেএসএস) দায়ী করেছে। তবে জেএসএস অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি জেলায় বিবদমান এসব গোষ্ঠীর সংঘাতে গত ১৪ মাসে ৪৯ জন নিহত হলেন। সর্বশেষ গত ২৯ জানুয়ারি রাঙামাটির লংগদু উপজেলার লংগদু সদর ইউনিয়নের ভুইয়োছড়া গ্রামে ইউপিডিএফের কর্মী পবিত্র চাকমা নিহত হন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আজ বেলা তিনটার দিকে রাইখালীর কারিগড়পাড়ার ফরেস্ট অফিস এলাকায় একটি চা–দোকানে বসে জেএসএসের (এমএন লারমা) কর্মী মংসানু মারমা কয়েক বন্ধুর সঙ্গে গল্প করছিলেন। এ সময় হঠাৎ করে ৮ থেকে ১০ জন দুর্বৃত্তের দল তাঁদের ঘেরাও করে। পরে পালানোর চেষ্টা করলে এলোপাতাড়ি ব্রাশফায়ার করা হয়। মংসানু মারমা (৪০) ও ট্রাকচালকের সহকারী মো. জাহিদুল ইসলাম (৩২) গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান। নিহত জাহিদুলের বাড়ি নোয়াখালীতে। তিনি রাইখাল ইউনিয়নের নারানগিরি গ্রামে থাকতেন। ঘটনার পর কারিগড়পাড়ার এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে যান।

রাইখালী এলাকাবাসী জানান, দীর্ঘ সময় ধরে কাপ্তাই উপজেলায় জনসংহতি সমিতির ( জেএসএস) আধিপত্য ছিল। গত একাদশ সংসদ নির্বাচনের পর জনসংহতি সমিতির (এমএন লারমা) কিছু নেতা-কর্মী রাইখালী এলাকায় এসে দলীয় কর্মকাণ্ড শুরু করেন। তাঁরা সেখান থেকে রাজস্থলীর বাঙালহালিয়া বাজারেও দলীয় কাজ করতেন। আজ সকালে সাংগঠনিক কাজে জনসংহতি সতিমির (এমএন লারমা) কর্মী মংসানু মারমা কারিগড়পাড়ায় যান। মংসানু মারমার বাড়ি একই ইউনিয়নের নারানগিরিমুখ গ্রামে। ঘটনাস্থল থেকে তাঁর বাড়ি চার থেকে পাঁচ কিলোমিটার।

জনসংহতি সমিতির (এমএন লারমা) কেন্দ্রীয় কমিটির তথ্য ও প্রচার সম্পাদক সুধাকর ত্রিপুরা প্রথম আলোকে বলেন, ‘পরিকল্পিতভাবে কাপ্তাইয়ে জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) সশস্ত্র সদস্যরা এ হামলা চালিয়েছে। ঘটনায় আমাদের একজন সক্রিয় কর্মী ও একজন সাধারণ বাঙালি নিহত হয়েছেন।’ এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়ে ও প্রকৃত অপরাধীকে আইনে আওতায় এনে শাস্তি দাবি করেন তিনি।

এ অভিযোগের বিষয়ে জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) তথ্য ও প্রচার বিভাগের সদস্য দীপায়ন খীসা প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনায় জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) সম্পৃক্ততার প্রশ্নই আসে না এটা তাদের বিরোধের ফসল।
কাপ্তাইয়ের চন্দ্রঘোনা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশরাফ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, গুলিতে নিহত দুইজনের লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। দুজনের মধ্যে একজন আঞ্চলিক দল এমএন লারমা কর্মী ও অন্যজন ট্রাক চালকের সহকারী হিসেবে কাজ করতেন। এ বিষয়ে প্রতিবেদন সংগ্রহ করা হচ্ছে। এখনো কেউ মামলা করতে আসেননি।