নির্যাতনের পর সেতুর নিচে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ

নোয়াখালীতে এক গৃহকর্মীকে বাসায় আটকে রেখে নির্যাতনের পর চট্টগ্রামের কালুরঘাট সেতুর নিচে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

তাঁর নাম রাহেলা বেগম (১৯)। পরে খবর পেয়ে স্বজনেরা তাঁকে উদ্ধার করে গতকাল সোমবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন।

রাহেলার গ্রামের বাড়ি হাতিয়া উপজেলার চরনঙ্গলিয়া এলাকায়। পুলিশ রাহেলার প্রাথমিক অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে মো. সাহাব উদ্দিন (৩৮) ও মিজানুর রহমান ওরফে সুমন (৩৮) নামে দুজনকে আটক করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রাহেলা বেগম বলেন, তাঁর প্রতিবেশী রিনা আক্তার চার মাস আগে তাঁকে নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদীতে নিয়ে যান। এরপর শহরের আলেয়া বেগম নামে একজনের বাসায় কাজের ব্যবস্থা করে দেন ওই প্রতিবেশী।

রাহেলা বেগম বলেন, মাসখানেক আগে গৃহকর্ত্রী তাঁকে অসামাজিক কাজ করার জন্য চাপ দেন। এতে রাজি না হওয়ায় তাঁকে রড দিয়ে পিটিয়ে আহত এবং ৮-১০ দিন আগে রাতের বেলায় তাঁর শরীরে অ্যাসিড ঢেলে দেওয়া হয়। এতে তাঁর বুক, পেট, পিঠসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ ঝলসে যায়।

রাহেলা বলেন, অ্যাসিডে ঝলসে যাওয়া শরীরের বিভিন্ন অংশে পচন ধরলে তিন দিন আগে বাসযোগে তাঁকে চট্টগ্রাম নিয়ে যাওয়া হয় এবং কালুরঘাট ব্রিজের নিচে ফেলে দেওয়া হয়। গত রোববার সকালে ওই এলাকায় একটি ট্রাকের নিচে চাপা পড়তে গেলে এক পথচারী তাঁকে উদ্ধার করেন। খবর পেয়ে ওই দিন বিকেলে পরিবারের লোকজন গিয়ে তাঁকে বাড়িতে নিয়ে আসেন।

রাহেলার মা সামছুন নাহার প্রথম আলোকে বলেন, রাহেলার শরীরের পচা-ক্ষতস্থানগুলো পরিষ্কার করে গতকাল বিকেলে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শ্যামল কুমার দেবনাথ প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল বিকেলে রাহেলাকে স্বজনেরা হাসপাতালে ভর্তি করেন। তাঁর পুরো শরীরেই আংশিকভাবে শুকানো ক্ষত রয়েছে। অবস্থা সংকটজনক হওয়ায় তাঁকে দ্রুত ঢাকা অথবা কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

সুধারাম থানার ওসি আনোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনায় জড়িত অন্যদের আটকের জন্য পুলিশের একাধিক দল কাজ করছে।