গাইবান্ধায় পাওয়া চাল 'প্লাস্টিকের' নয়: ডিসি

‘প্লাস্টিকের চাল’ জব্দের ঘটনার ব্যাখ্যা দিতে সংবাদ সম্মেলন করেন গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. আবদুল মতিন। জেলা প্রশাসক কার্যালয়, গাইবান্ধা, ৫ ফেব্রুয়ারি। ছবি: শাহাবুল শাহীন
‘প্লাস্টিকের চাল’ জব্দের ঘটনার ব্যাখ্যা দিতে সংবাদ সম্মেলন করেন গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. আবদুল মতিন। জেলা প্রশাসক কার্যালয়, গাইবান্ধা, ৫ ফেব্রুয়ারি। ছবি: শাহাবুল শাহীন

‘প্লাস্টিকের চাল’ জব্দ করার ঘটনার ব্যাখ্যা দিয়েছেন গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. আবদুল মতিন। গাইবান্ধায় ‘প্লাস্টিক চাল’ সন্দেহে জব্দ করা নিয়ে আজ মঙ্গলবার বিভিন্ন মিডিয়া ও পত্রিকায় খবর প্রকাশিত হয়। এ সম্পর্কে জানাতে মঙ্গলবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন তিনি। সম্মেলনে জেলা প্রশাসক চাল সম্পর্কে ব্যাখ্যা দেন। 

মো. আবদুল মতিন বলেন, গাইবান্ধা শহরের নতুন বাজারের একটি দোকান থেকে প্লাস্টিকের চাল সন্দেহবশত আটক করার পর তা প্রাথমিক পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষায় চাল ভিজে ও রান্না করে প্রতীয়মান হয়, চালের ভাত স্বাভাবিক চালের মতো। উদ্ধার করা চাল প্লাস্টিকের চাল নয়। এ চাল নিম্নমানের কিংবা ভেজাল হতে পারে। এ নিয়ে আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য জনসাধারণকে আহ্বান জানান তিনি।

জেলা প্রশাসক আরও বলেন, জব্দ করা চাল প্লাস্টিকের কি না, তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য ভোক্তা সংরক্ষণ ঢাকা প্রধান কার্যালয়ের পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে।

এ সময় গাইবান্ধার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রোকসানা বেগম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. তোফায়েল হোসেন, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক জহিরুল ইসলাম, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক মো. শওকত ওসমান, জেলা মার্কেটিং কর্মকর্তা মো. মোয়াজ্জেম হোসেন, সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা উত্তম কুমার রায় প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

পুলিশ জানায়, গাইবান্ধা শহরের মুন্সিপাড়ার রনি মিয়া গত রোববার শহরের নতুন বাজারের রুবান দেওয়ানের দোকান থেকে ছয় কেজি চাল কেনেন। ওই দিন রাতে বাড়িতে ওই চালের ভাত রান্না করা হয়। কিন্তু ভাত খেতে গিয়ে পরিবারের লোকজন কেমন একটা গন্ধের স্বাদ পান। এতে সন্দেহের সৃষ্টি হয়। এরপর গতকাল সোমবার সকালে ওই চাল ভাজলে সেগুলো কুঁচকে ও পুড়ে-গলে গেলে সন্দেহ আরও গভীর হয়। তখন রনি মিয়া ওই চাল নিয়ে গাইবান্ধা সদর থানায় উপস্থিত হয়ে পুলিশকে বিষয়টি জানান। রনি মিয়ার অভিযোগের ভিত্তিতে গাইবান্ধা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উত্তম কুমার রায় ও জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মাছুম আলীকে অবগত করেন। এরপর সদর ইউএনও উত্তম কুমার রায়ের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত গঠন করে সোমবার ওই দোকানে অভিযান চালানো হয়। এ ছাড়া সোমবার শহরের ডিবি রোডসহ আরও কয়েকটি চালের দোকানে অভিযান চালানো হয়।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গাইবান্ধা সদর থানার ওসি খান মো. শাহরিয়ার মোবাইলে জানান, জব্দ করা চাল পরীক্ষার জন্য ঢাকায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত রিপোর্ট পাওয়া যায়নি। তবে ঢাকা থেকে রিপোর্ট আসার পর বিষয়টি পরিষ্কার হবে। তখন এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

চাল কোথায় পেলেন? জানতে চাইলে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রুবান দেওয়ান বলেন, এ চাল মূলত দিনাজপুরের। কয়েক দিন আগে পলাশবাড়ী উপজেলার ঢোলভাঙ্গা বাজার হয়ে গাইবান্ধায় এ চাল আনা হয়েছে।