আতিকুল নগর নিয়ে বই পড়তে শুরু করেছেন

প্রেসক্লাবে ‘কেন মেয়র হতে চান’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম। ছবি: মোছাব্বের হোসেন
প্রেসক্লাবে ‘কেন মেয়র হতে চান’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম। ছবি: মোছাব্বের হোসেন

উত্তর সিটি করপোরেশনে (ডিএনসিসি) মেয়র পদে উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম নগর নিয়ে বইপত্র পড়তে শুরু করেছেন। আতিকুল আজ নিজেই এ কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, সবাইকে নিয়ে ‘সবার ঢাকা’ গড়তে চান। প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের অসমাপ্ত কাজ শেষ করতে চান।

আজ বুধবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠানে আতিকুল এসব কথা বলেন।

‘কেন মেয়র হতে চান’ শীর্ষক ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে প্রেসক্লাব। এতে গণমাধ্যমের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকেরা আলোচনায় অংশ নিয়ে আতিকুল ইসলামকে বিভিন্ন প্রশ্ন করেন। মেয়র হওয়ার বিষয়ে নিজের প্রস্তুতির কথা জানান তিনি।

এক প্রশ্নের জবাবে আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমি নগর নিয়ে বই পড়তে শুরু করেছি। নগরের সমস্যা নিয়ে কাজ শুরু করেছি। বিভিন্ন স্থান ঘুরে ঘুরে সমস্যা চিহ্নিত করছি। আবর্জনা যাতে ডিজিটাল পদ্ধতিতে ব্যবস্থাপনা করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায়, তা ভাবা হচ্ছে।’

মেয়র নির্বাচনের আগে নিজে বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখেছেন বলে উল্লেখ করে আতিকুল বলেন, ‘রিটের আগে আমি নগর নিয়ে কাজ শুরু করি। এক বছর ধরে আমি ঘুরছি বিভিন্ন স্থানে। সাম্প্রতিক হয়ে যাওয়া সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সাংসদদের নির্বাচনী এলাকা ঘুরে দেখেছি। সেখান থেকে জ্ঞান নিয়েছি।’

আতিকুল ইসলাম বলেন, তিনি সব ধাপ সম্পন্ন করে মেয়র পদের নির্বাচন করছেন। তাঁর মতো আরও ১৮ জন মেয়রের মনোনয়ন চেয়েছিলেন। তাঁদের সবার সাক্ষাৎকার নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁকে দলীয় মনোনয়ন দেন।
আতিকুল বলেন, তিনি সুস্থ, সচল ও আধুনিক ঢাকা গড়তে চান। সবাই মিলে সবার ঢাকা গতে চান। তিনি যেমন উচ্চবিত্তের ঢাকা গড়তে চান, তেমনি দিনমজুরেরও ঢাকা গড়তে চান। তিনি ফুটপাত থেকে হকারদের তুলে দিয়ে তাঁদের পুনর্বাসন করতে চান। প্রয়োজনে একটি স্থানে হকারদের কার্ড দিতে চান। সেখানে একজন হকার যেন সপ্তাহে দুদিন করে বসতে পারেন। সব হকার যেন সমান সুযোগ পান, তার ব্যবস্থা করতে চান।
প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের প্রসঙ্গ তুলে আতিকুল বলেন, ‘আমরা আনিস ভাইকে হারিয়েছি। সবাই জানে তিনি আমাদের জন্য কীভাবে কাজ করে গেছেন। আমি তাঁর অসম্পন্ন কাজ করতে চাই।’
ময়লা নির্দিষ্ট স্থানে ফেলার অনুরোধ জানিয়ে আতিকুল বলেন, ‘আমাদের সবার দায়িত্ব নির্দিষ্ট স্থানে ময়লা ফেলা।’
সুস্থতার জন্য খেলার মাঠের গুরুত্ব সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘এখন মানুষ খেলার মাঠে খেলার সুযোগ পায় না। ঘরে বসে মোবাইলে ভার্চুয়াল খেলা খেলেন। আমি হারিয়ে যাওয়া মাঠ উদ্ধারের উদ্যোগ নেব। মাঠকে আবর্জনামুক্ত করব।’

কাজের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার প্রসঙ্গে আতিকুল বলেন, ‘আমি আমার কাজে স্বচ্ছতা, জবাবদিহি নিশ্চিত করব। নগরের রাস্তার পাশে ড্রেন সংস্কার করব। মশা তাড়াতে কেবল কীটনাশক নয়, অন্য ব্যবস্থার কথা ভাবছি। আমরা দেখেছি ড্রেনে গাপ্পি মাছ থাকলে সেই মাছ মশা খায়। আবার বাদুড় ঘণ্টায় ৬২ হাজার মশা খায়। মশা নিশ্চিহ্ন করতে পারব না। কিন্তু নিয়ন্ত্রণের জন্য কাজ করব।’

আয়ের প্রসঙ্গ এলে মেয়র পদপ্রার্থী বলেন, ‘আমার আয়ের উৎস আমার প্রতিষ্ঠান। সেখান থেকেই আমি সবকিছু নিই।’

অনুষ্ঠানে আলোচনায় অংশ নেন প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান, দেশ টিভির সম্পাদক সুকান্ত গুপ্ত অলক, চ্যানেল ২৪-এর নির্বাহী পরিচালক রাহুল রাহা, ডিবিসি চ্যানেলের সম্পাদক প্রণব সাহা, এটিএন নিউজের বার্তাপ্রধান প্রভাষ আমিন, এটিএন বাংলার প্রধান নির্বাহী সম্পাদক জ ই মামুন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ভোরের কাগজ-এর সম্পাদক শ্যামল দত্ত। সভাপতিত্ব করেন প্রেসক্লাবের সভাপতি সাইফুল আলম।