সাত জেলার পাসপোর্ট অফিসে দুদকের অভিযান

মুন্সিগঞ্জ পাসপোর্ট অফিস এক দালালকে গ্রেপ্তার করে দুদক দল। ছবি: সংগৃহীত
মুন্সিগঞ্জ পাসপোর্ট অফিস এক দালালকে গ্রেপ্তার করে দুদক দল। ছবি: সংগৃহীত

পাসপোর্ট অফিসে দালাল সিন্ডিকেটের বিষয়ে অভিযোগ পেয়ে দেশের সাত জেলার পাসপোর্ট অফিসে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ বৃহস্পতিবার একযোগে এই অভিযান চালানো হয় বলে সংস্থাটি জানিয়েছে।

দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, পাসপোর্ট অফিস ঘিরে ঘুষ–দুর্নীতির মাধ্যমে দালালেরা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে সিন্ডিকেট তৈরি করেছে—দুদকের অভিযোগ কেন্দ্রে এমন অভিযোগ আসে। অভিযোগ পেয়ে সাতটি এনফোর্সমেন্ট টিম গঠন করা হয়। এ দলগুলো দিনাজপুর, বরিশাল, কুমিল্লা, টাঙ্গাইল, সিলেট, মেহেরপুর ও মুন্সিগঞ্জ জেলায় অভিযান চালায়।

অভিযানকালে মেহেরপুর, মুন্সিগঞ্জ, কুমিল্লা ও দিনাজপুরে চারজন দালালকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করে দুদক। দালালদের সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালতের কাছে সোপর্দ করা হয়। তাদের জরিমানা ও বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

দুদক জানিয়েছে, মুন্সিগঞ্জে অভিযান পরিচালনাকালে দেখা যায়, ওই দপ্তরের সহকারী পরিচালক হালিমা খাতুন এক মাস ধরে হাজিরা খাতা যাচাই করছেন না। এ ছাড়া তাঁর অফিসে সাধারণ পাসপোর্টের ক্ষেত্রে নির্ধারিত ফিয়ের অতিরিক্ত ১ হাজার ৫০০ টাকা এবং জরুরি পাসপোর্টের ক্ষেত্রে চার হাজার টাকা অতিরিক্ত দিতে হয়। ঘুষ না দিলে ইচ্ছাকৃতভাবে পাসপোর্টে বিভিন্ন ধরনের ভুল করা হয় বলে অভিযোগ আছে।

সিলেট পাসপোর্ট অফিসে অভিযানে দেখা যায়, বিভিন্ন ট্রাভেল এজেন্সি পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগসাজশে দালালচক্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছে। টাঙ্গাইল পাসপোর্ট অফিসে দালালেরা বিভিন্ন শ্রেণির গ্রাহকদের কাছ থেকে বিভিন্ন পরিমাণে ঘুষ আদায় করছেন বলে দুদক দল প্রমাণ পায়। এ অফিসে পাঁচ শ থেকে আড়াই হাজার টাকা পর্যন্ত অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হচ্ছে। বরিশাল পাসপোর্ট অফিসে পুলিশ সদস্যরা দালাল সেজে গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা আদায় মর্মে প্রমাণ পায় দুদক দল। এ ছাড়া কুমিল্লা পাসপোর্ট অফিসে চারজন কর্মকর্তাকে অনুপস্থিত পাওয়া যায়।

অভিযান প্রসঙ্গে দুদক এনফোর্সমেন্ট ইউনিটের প্রধান ও মহাপরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মাদ মুনীর চৌধুরী বলেন, পাসপোর্ট অফিসের দুর্নীতি ও হয়রানি বন্ধে দুদকের এ অভিযান। দুর্নীতির প্রমাণের ভিত্তিতে দুদক সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।