ভুয়ার কারণে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের আকাঙ্ক্ষা পূরণ হচ্ছে না

আ ক ম মোজাম্মেল হক
আ ক ম মোজাম্মেল হক

কিছুসংখ্যক ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার কারণে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের আকাঙ্ক্ষা পূরণ হচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে জাতীয় পার্টির মুজিবুল হক চুন্নুর এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন।

এ প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী আরও বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধারা গলায় একটি করে পরিচয়পত্র ঝুলিয়ে ঘুরবেন, তা পারছেন না। তবে দীর্ঘদিনের এই দাবি পূরণের জন্য স্বাধীনতা দিবসের আগে দেওয়ার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা থাকবে আমাদের।’

প্রশ্নোত্তরের আগে ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়ার সভাপতিত্বে সংসদের অধিবেশন শুরু হয়।

মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় পিচ কমিটির সদস্য ও তাঁদের সন্তানদের নাম থাকা সম্পর্কিত শফিকুল ইসলাম শিমুলের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় অমুক্তিযোদ্ধাদের নাম থাকা জাতির জন্য কেবল অগৌরবের নয়, ইতিহাসেরও বিকৃতি। এটা হতে পারে না। এ ধরনের কিছু থাকলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অমুক্তিযোদ্ধা কেউ থাকলে তাঁদের বাদ দেওয়া হবে।

মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা প্রকাশ প্রসঙ্গে আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘আগে ২ লাখের ওপর মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পেতেন। আমরা প্রায় ২০ হাজারের বেশি ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা চিহ্নিত করে তালিকা থেকে বাদ দিয়েছি। বর্তমানে ভাতাপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের সংখ্যা ১ লাখ ৮২ হাজারের কিছু বেশি। নির্ভুল চূড়ান্ত মুক্তিযোদ্ধার তালিকা তৈরির কাজ এখনো চলমান রয়েছে। ভারতীয় তালিকা, লাল মুক্তিবার্তা ও মুজিবনগর সরকারের তালিকাসহ যেসব তালিকার বিষয়ে কোনো আপত্তি নেই, তাঁদের তালিকা আগামী মার্চ মাসের মধ্যে প্রকাশের আশা করছি। আর যেগুলোর বিষয়ে আপত্তি রয়েছে তার যাচাই-বাছাই চলমান থাকবে। যাচাই-বাছাইয়ে যাঁরা টিকবেন, তাঁদের তালিকা আমরা পরে প্রকাশ করব।

আনোয়ারুল আবেদীন খানের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ইউনিয়নের ক্ষেত্রে ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভার ক্ষেত্রে ওয়ার্ডের সামনে মুক্তিযোদ্ধার তালিকা লিখে দৃশ্যমান স্থানে টাঙিয়ে রাখার জন্য সিদ্ধান্ত রয়েছে। তবে এটি এখনো বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি। চূড়ান্ত তালিকা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এটা বাস্তবায়নে যত্নবান হব। মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়ি আলাদাভাবে রং দিয়ে চিহ্নিত করা যায় কি না, তা ভেবে দেখা হবে।

আগামী অর্থবছরে মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা আরেকটু সম্মানজনক হারে বাড়ানো যায়, সেই চিন্তাভাবনা চলছে বলে মন্ত্রী জানান।

মুজিবুল হকের অপর প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, বর্তমানে (জানুয়ারি ২০১৯) দেশে ভাতাপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ১ লাখ ৮৭ হাজার ২৯৩ জন।

ঢাকায় ঘৃণা স্তম্ভ নির্মাণে জায়গা নির্বাচনের কাজ চলছে
কুষ্টিয়া-৪ আসনের সেলিম আলতাফ জজের প্রশ্নের জবাবে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক জানান, স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকার এবং পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয়ভাবে ঘৃণা প্রকাশের জন্য কেন্দ্রীয়ভাবে ঢাকায় একটি ঘৃণা স্তম্ভ নির্মাণের লক্ষ্যে জায়গা নির্বাচনের কাজ চলমান রয়েছে।

নিজাম উদ্দীন হাজারীর প্রশ্নের জবাবে সংসদ কাজে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, সশস্ত্র ও পুলিশ বাহিনীসহ বর্তমানে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা বাহিনীতে ৬ হাজার ৬৮৯ জন সদস্য কর্মরত রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে সেনাবাহিনীর ৫ হাজার ১৯৮ জন, নৌবাহিনীর ৩৪৭ জন, বিমানবাহিনীর ৪৯৮ জন ও পুলিশ বাহিনীর ৬৪৬ জন।

চট্টগ্রাম-৪ আসনের দিদারুল আলমের প্রশ্নের জবাবে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী বলেন, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বিমানের ২০১ কোটি ৪৭ লাখ টাকা লোকসান হয়েছে। মন্ত্রীর তথ্য অনুযায়ী ওই অর্থবছরে বিমানের আয় হয়েছে ৪ হাজার ৯৩১ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। অন্যদিকে ব্যয় হয়েছে ৫ হাজার ১৩৩ কোটি ১১ লাখ টাকা।