'আমি সাজাপ্রাপ্ত আসামি আমাকে অ্যারেস্ট করেন'

>
  • চার বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেপ্তারের আবেদন জানালেন
  • তিনি ছিনতাই মামলার আসামি
  • দীর্ঘদিন পলাতক ছিলেন

‘স্যার, আমি আর বুঝা বহন করবার পারতাছি না। আমি সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি। আমাকে অ্যারেস্ট করেন।’ গত শুক্রবার রাতে সাভার মডেল থানায় উপস্থিত হয়ে চার বছরের সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি অছিল উদ্দিন এভাবেই তাঁকে গ্রেপ্তারের অনুরোধ জানান। পরে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। গতকাল শনিবার তাঁকে আদালতে হাজির করা হয়।

অছিল উদ্দিন সাভার পৌর এলাকার ইমান্দিপুর মহল্লার জালাল উদ্দিনের ছেলে। তিনি সবজির ব্যবসা করতেন। তাঁর এক মেয়ে ও দুই ছেলে রয়েছে।

সাভার মডেল থানার পুলিশ জানায়, অছিল উদ্দিন ২০০৭ সালে দিনাজপুরের কোতোয়ালি থানার একটি ছিনতাই মামলার আসামি। দ্রুত বিচার আইনে দায়ের হওয়া ওই মামলায় আদালতের পরোয়ানা থাকায় সাভার মডেল থানার পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তারে চেষ্টা চালাচ্ছিল। দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর স্বেচ্ছায় তিনি থানায় এসে ধরা দেন।

পুলিশ হেফাজতে অছিল উদ্দিন বলেন, ছিনতাইয়ের ঘটনায় তিনি জড়িত ছিলেন না। তিনি ওই সময় সাভারের একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন। তিনি কখনো দিনাজপুর যাননি। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে যাঁরা গ্রেপ্তার হয়েছিলেন, তাঁরা তাঁর নাম বলেছিলেন। এভাবেই তিনি ওই মামলার আসামি হয়েছেন। তিনি বলেন, মামলায় তাঁকে জড়ানোর বিষয়টি প্রথম দিকে তাঁর জানা ছিল না। ২০০৮ সালে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করার পর তিনি প্রথম ঘটনা জানতে পারেন। প্রায় তিন বছর কারাগারে থেকে ২০১০ সালের অক্টোবর মাসে জামিনে মুক্তি পান। মুক্তি পাওয়ার পর তিনি সবজির ব্যবসা করতেন। টাকার অভাবে তিনি আদালতে হাজিরা দিতে পারেননি। তাঁর অনুপস্থিতিতে আদালত তাঁকে চার বছরের সাজা দেন। পরোয়ানা পেয়ে সাভার মডেল থানার পুলিশ কয়েক মাস আগে তাঁকে গ্রেপ্তার করতে বাড়িতে অভিযান চালায়। ওই দিন বাড়িতে না থাকায় পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। এরপর থেকে তিনি পলাতক জীবন যাপন করছিলেন। পুলিশের ভয়ে ব্যবসা করতে না পেরে তিনি বেকার হয়ে পড়েন।

অছিল উদ্দিন বলেন, ‘গ্রেপ্তারের টেনশনে আমার ঘুম হইতো না, খাইতে পারতাম না। এই বোঝা আমি আর বহন করবার পারতাছিলাম না। তাই থানায় আইসা ধরা দিছি।’

সাভার মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সওগাতুল আলম বলেন, গত শুক্রবার রাত নয়টার দিকে অছিল উদ্দিন থানায় উপস্থিত হয়ে তাঁর অফিস কক্ষে ঢোকেন। এরপর নিজেকে সাজাপ্রাপ্ত আসামি দাবি করে তাঁকে গ্রেপ্তারের অনুরোধ জানান। তাঁর অনুরোধে নথি ঘেঁটে সত্যতা যাচাইয়ের পর তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। গতকাল তাঁকে ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিমের আদালতে হাজির করা হলে আদালত তাঁকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।