এক কোটি টাকার জমি ছাড়ল হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীর পরিবার

প্রয়াত স্পিকার হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীর ভাতিজা ইমরান রশীদ চৌধুরীকে নিয়ে সড়ক বড় করার জন্য দেয়াল ভাঙছেন মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। গতকাল সকালে আম্বরখানায়।  প্রথম আলো
প্রয়াত স্পিকার হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীর ভাতিজা ইমরান রশীদ চৌধুরীকে নিয়ে সড়ক বড় করার জন্য দেয়াল ভাঙছেন মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। গতকাল সকালে আম্বরখানায়। প্রথম আলো

সিলেট নগরের কেন্দ্রস্থলের হজরত শাহজালাল (রহ.)-এর দরগাহ গেট থেকে আম্বরখানা পর্যন্ত সড়ক বর্ধিত করতে প্রায় এক কোটি টাকা মূলের জমি ছাড় দিয়েছে প্রয়াত স্পিকার হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীর পরিবার। 

সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর আহ্বানে জনস্বার্থে বাড়ির জমি ছাড় দিতে সম্মত হওয়ায় গতকাল রোববার সকাল থেকে সড়ক বড় করার কাজ শুরু হয়েছে। এর আগে নগরের ধোপাদীঘির পূর্বপার এলাকায় অবস্থিত সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের পরিবারের বাড়ি ‘হাফিজ কমপ্লেক্স’ প্রায় এক কোটি টাকার জমি মেয়রের আহ্বানে ছাড় দেওয়ায় সেখানেও সড়ক বর্ধিত করার কাজ শুরু হয়েছে।

সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ দপ্তর জানায়, গতকাল সকালে মেয়র দরগাহ গেট এলাকায় প্রয়াত স্পিকারের বাড়ি রশীদ মঞ্জিলে গিয়ে তাঁর ভাতিজা ইমরান রশীদ চৌধুরীর কাছে জনস্বার্থে সড়ক বড় করার জন্য জমি ছাড় দেওয়ার প্রস্তাব করেন। মেয়র সিটি করপোরেশনের সড়ক বর্ধিত করার প্রকল্পের নকশা উপস্থাপন করলে ইমরান রশীদ চৌধুরী বাড়ির ৫ ফুট করে ১১০ ফুট জমি ছেড়ে দিতে সম্মত হন। পরে তাঁকে সঙ্গে নিয়েই মেয়র বাড়ির প্রধান ফটকের দেয়াল ভাঙার কাজের সূচনা করেন। এ সময় সিটি করপোরেশনের স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর সৈয়দ তৌফিকুল হাদী, প্রধান প্রকৌশলী নুর আজিজুর রহমান, উপসহকারী প্রকৌশলী মো. তানভীর আহমদসহ স্থানীয় বিশিষ্টজনেরা উপস্থিত ছিলেন।

সিলেট নগরের আম্বরখানা কেন্দ্রস্থলের একটি এলাকা। আম্বরখানা মোড়টি একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান। সুনামগঞ্জ সড়ক, তামাবিল মহাসড়ক, বিমানবন্দর সড়কসহ নগরের কেন্দ্রস্থলের অন্যান্য সড়ক আম্বরখানা মোড়ের সঙ্গে সংযুক্ত হয়েছে। রশীদ মঞ্জিল সড়কের জন্য জায়গা ছেড়ে দেওয়ায় আম্বরখানা মোড়ের সঙ্গে সংযোগ হওয়া সব রাস্তা সম্প্রসারণ করার ক্ষেত্রে অবকাঠামোগত অসুবিধা দূর হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিটি করপোরেশনের সড়ক বর্ধিতকরণ প্রকল্পসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

জনস্বার্থে হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীর পরিবারের সদস্যরা তাঁদের মূল্যবান জমি ছেড়ে দেওয়ায় তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানিয়ে আরিফুল হক চৌধুরী প্রকল্প এলাকায় অবস্থানকালে প্রথম আলোকে বলেন, এ পরিবার সিলেটের একটি সম্ভ্রান্ত পরিবার। তাঁদের প্রতি সিলেটের সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা রয়েছে। বাড়ির যে জমি তাঁরা ছাড় দিয়েছেন, তা এককথায় অমূল্য। এ রকম পজিশনে জমি কিনতেও পাওয়া যায় না। জনস্বার্থে তাঁরা মূল্যবান জমি ছেড়ে দিয়ে অনন্য এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন। এভাবে নগরবাসীর সহযোগিতায় অচিরেই সিলেট হবে একটি আধুনিক ও তিলোত্তমা নগরী। সে লক্ষ্য নিয়েই নগরীর সর্বত্র কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে।

হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী একজন খ্যাতনামা কূটনীতিবিদ ছিলেন। তিনি ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত জাতীয় সংসদের স্পিকারের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৬ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৪১ তম অধিবেশনে সভাপতিত্বও করেন তিনি। সিলেট-১ (মহানগর-সদর) আসন থেকে তিনবার সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০০১ সালের ১০ জুলাই তিনি মৃত্যুবরণ করেন।