এবার গাইবান্ধায় পাঁচ মিনিটে নতুন বিদ্যুৎ-সংযোগ

>

• গাইবান্ধা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জিএম মো. পানা উল্যাহ উদ্যোগ নিয়েছেন
• গ্রাহকেরা খুশি

ঝিনাইদহের পর এবার গাইবান্ধায় পাঁচ মিনিটেই বিদ্যুৎ–সংযোগ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। গতকাল সোমবার সকালে গাইবান্ধা সদর উপজেলার কুপতলা ইউনিয়নের পশ্চিম কুপতলা গ্রামে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়। গাইবান্ধা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহাব্যবস্থাপক (জিএম) পানা উল্যাহ এই উদ্যোগ নিয়েছেন।

মহাব্যবস্থাপক পানা উল্যাহ গতকাল বেলা ১১টায় রিকশা-ভ্যানে করে পশ্চিম কুপতলা গ্রামে যান। রিকশা-ভ্যানের সামনে ছিল সাইনবোর্ড। সেখানে লেখা, ‘শেখ হাসিনার উদ্যোগ ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ, আলোর ফেরিওয়ালা, মানুষের দ্বারে সহজে বিদ্যুৎ–সুবিধা পৌঁছে দিতে পাঁচ মিনিটেই বিদ্যুৎ–সংযোগ দেওয়া হচ্ছে।’ নিচে লেখা, ‘গাইবান্ধা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি’। রিকশা-ভ্যানে বসা ছিলেন জিএম পানা উল্যাহসহ সমিতির সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) মো. শাহিদুর রহমান খান এবং সমিতির অন্য কয়েকজন কর্মকর্তা।

ভ্যানে ছিল বৈদ্যুতিক মিটার, তার এবং আবেদন ফরমসহ প্রয়োজনীয় অন্যান্য কাগজপত্র। জিএম পানা উল্যাহ দিনব্যাপী ঘুরে ঘুরে গ্রাহক শনাক্ত করেন। বিদ্যুৎ–সংযোগ নিতে আগ্রহী লোকজনের কাছ থেকে তিনি আবেদন গ্রহণ করেন। আবেদনে গ্রাহকের সই নেওয়ার পর মাত্র পাঁচ মিনিটের মধ্যে বিদ্যুৎ–সংযোগ দেওয়া হয়। এভাবে সকাল থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত প্রায় ৮০টি সংযোগ দেন তিনি। এ সময় গাইবান্ধা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) মো. শাহিদুর রহমান খান উপস্থিত ছিলেন।

পাঁচ মিনিটে সংযোগ পেয়ে পশ্চিম কুপতলা গ্রামের নজরুল ইসলাম (৭৬) গতকাল সোমবার বলেন, ‘আগে বিদ্যুৎ–সংযোগ নিতে দালালদের পাঁচ থেকে ছয় হাজার টাকা দিতে হতো। তারপরও মাসের পর মাস অপেক্ষা করতে হতো। সকালে বিদ্যুতের লোকজন বাড়িতে এসে আবেদন করার জন্য বলেন। আবেদন ফি ১১৫ টাকা, সদস্য ফি ৫০ টাকা, মিটার জামানত বাবদ ৪০০ টাকা মোট ৫৬৫ টাকা দিয়ে পাঁচ মিনিটেই বিদ্যুৎ–সংযোগ পেয়েছি। খুব ভালো লাগছে।’

একই গ্রামের মাসুদ মিয়া বলেন, ‘যেখানে ঘুষ ছাড়া সংযোগ পাওয়া যেত না, গাড়িভাড়া দিয়ে অফিসে গিয়েও মাসের পর মাস ঘুরতে হতো। আজ অফিসে না গিয়েই বিদ্যুৎ পেলাম। কর্মকর্তারা বাড়িতে এসে সংযোগ দিলেন। আমরা খুশি হয়েছি।’

গাইবান্ধা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জিএম মো. পানা উল্যাহ বলেন, বিদ্যুৎ–সংযোগ দেওয়ার ক্ষেত্রে হয়রানি ও দুর্নীতি রোধ করতেই এ কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। পাঁচ মিনিটের মধ্যে আবেদন নেওয়াসহ সংযোগ স্থাপন করা হচ্ছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করায় গ্রাহকদের মুখে হাসি ফুটে ওঠে। এ উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে।

এর আগে ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) শেখ আবদুর রহমান এই উদ্যোগ নেন। এ নিয়ে গত ৩ জানুয়ারি প্রথম আলোতে ‘৫ মিনিটেই নতুন বিদ্যুৎ-সংযোগ’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ব্যতিক্রমী এ উদ্যোগের নাম দেওয়া হয় আলোর ফেরিওয়ালা।