হলে ভোটকেন্দ্র চায় টিএসসির সংগঠনগুলোও

ডাকসু
ডাকসু

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদের আসন্ন নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র হলেই থাকার বিষয়ে ছাত্রলীগের অবস্থানের সঙ্গে একমত পোষণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রভিত্তিক (টিএসসি) সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলো। নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র হলের বাইরে একাডেমিক ভবনে করার দাবি জানাচ্ছে ছাত্রদল ও বামপন্থী ছাত্রসংগঠনগুলো।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনে ডাকসু নির্বাচন পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে ছাত্রলীগ ও টিএসসিভিত্তিক ২২টি সংগঠনের সমন্বিত প্ল্যাটফর্ম সম্মিলিত শিক্ষার্থী সংসদ। সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রলীগের দাবির সঙ্গে একাত্মতা জানায় টিএসসির সংগঠনগুলো। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিতর্ক সংসদের সভাপতি এস এম রাকিব সিরাজী।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘আমরা আহ্বান করতে চাই যে ভোটের রাজনীতির সুযোগ নিয়ে কেউ যেন শতসহস্র শহীদের রক্তস্নাত পবিত্র এই বিশ্ববিদ্যালয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী কোনো রাজনৈতিক শক্তিকে প্রতিষ্ঠিত করার অপচেষ্টা না করে। ডাকসু নির্বাচনের ভোটকেন্দ্র ঐতিহাসিকভাবেই হলগুলোয় হয়ে আসছে। এর ধারাবাহিকতায় এবারও ভোটকেন্দ্র হলে হওয়ার যে সিদ্ধান্ত হয়েছে, সেটি নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে কোনো আপত্তি নেই। বরং ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে মেনে নিয়ে এ সিদ্ধান্তকে সাধারণ শিক্ষার্থীরা স্বাগত জানিয়েছে।’

সম্মিলিত শিক্ষার্থী সংসদের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, ‘সাধারণ শিক্ষার্থীদের আবেগ ও অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে ভোটের রাজনীতির স্বার্থে অযথা ভোটকেন্দ্র নিয়ে বিতর্ক বাড়িয়ে বহুল কাঙ্ক্ষিত ডাকসু নির্বাচনকে বানচাল করার পাঁয়তারায় পা না দিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠনকে আমরা আহ্বান জানাচ্ছি। নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে আগ্রহী সম্ভাব্য সব প্যানেল সাধারণ শিক্ষার্থীদের চাওয়া-পাওয়া, দাবি-দাওয়া ও তাঁদের আবেগ-অনুভূতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে তাদের ইশতেহারগুলো প্রস্তুত করবে, আমরা সেই প্রত্যাশা করছি। নির্বাচনের আচরণবিধির সঙ্গে সাংঘর্ষিক কোনো কর্মসূচি বা কর্মকাণ্ড না করার জন্য সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আমরা অনুরোধ জানাচ্ছি।’

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী, ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বক্তব্য দেন। টিএসসির সংগঠনগুলোর কয়েকজন নেতাও এতে বক্তব্য দেন। গত ৩০ ডিসেম্বরের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে টিএসসিভিত্তিক সংগঠনগুলোর সঙ্গে এক হয়ে ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী সংসদ’ গঠন করে ছাত্রলীগ।

১১ ফেব্রুয়ারি দীর্ঘ ২৮ বছর পর হতে যাওয়া ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। ডাকসুর সংশোধিত গঠনতন্ত্র ও আচরণবিধি মেনে হবে নির্বাচন। বেশ কয়েকটি ছাত্রসংগঠনের পক্ষ থেকে হলের বাইরে একাডেমিক ভবনে ভোটকেন্দ্র করার দাবি থাকলেও ভোটকেন্দ্র হচ্ছে হলেই।

তফসিলকে স্বাগত জানিয়ে ১১ ফেব্রুয়ারি বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আনন্দ মিছিল করেছে ছাত্রলীগ। অন্যদিকে ছাত্রদল, বামপন্থী ছাত্রসংগঠনগুলোর দুই মোর্চা প্রগতিশীল ছাত্রজোট ও সাম্রাজ্যবাদবিরোধী ছাত্র ঐক্য এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণে আগ্রহী কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সংগঠন সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ হলের বাইরে ভোটকেন্দ্র ও সব ছাত্রসংগঠনের সহাবস্থান নিশ্চিত করার দাবিতে আন্দোলনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।