মধুর ক্যানটিনে ছাত্রদলের নির্বিঘ্ন সোয়া দুই ঘণ্টা

প্রায় নয় বছর পর দ্বিতীয় দিনের মতো মধুর ক্যানটিনে গিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজিব আহসান। ছবি: প্রথম আলো
প্রায় নয় বছর পর দ্বিতীয় দিনের মতো মধুর ক্যানটিনে গিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজিব আহসান। ছবি: প্রথম আলো

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে প্রায় নয় বছর পর গতকাল বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যানটিনে গিয়েছিল জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা। ক্যানটিনে গতকাল প্রায় দুই ঘণ্টা অবস্থানকালে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের ঘিরে বিরতিহীন স্লোগান দেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরাও পাল্টা স্লোগান দেন। তবে আজ বৃহস্পতিবার প্রায় সোয়া দুই ঘণ্টা মধুর ক্যানটিনে নির্বিঘ্নে সময় কাটিয়েছে ছাত্রদল। আজ কোনো স্লোগান-পাল্টা স্লোগানের ঘটনা ঘটেনি।

গতকাল মধুর ক্যানটিনে গিয়ে ছাত্রদলের নেতারা সাংবাদিকদের বলেছিলেন, এখন থেকে তাঁরা নিয়মিত ক্যাম্পাসে ও মধুর ক্যানটিনে যাবেন। এর অংশ হিসেবে আজ বেলা ১১টার দিকে নেতা-কর্মীদের নিয়ে মধুর ক্যানটিনে যান ছাত্রদলের বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখার সভাপতি আল মেহেদী তালুকদার ও সাধারণ সম্পাদক আবুল বাসার সিদ্দিকী। পরে সেখানে যান সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজিব আহসান ও সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান।

গতকাল ছাত্রদল যে টেবিলে বসেছিল, আজও সেই টেবিলেই বসেন সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা। পাশের টেবিলেই ছাত্রলীগ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রভিত্তিক (টিএসসি) সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর জোট সম্মিলিত শিক্ষার্থী সংসদের সংবাদ সম্মেলন হয়। মধুর ক্যানটিনে চা পান ও নিজেদের মধ্যে আলাপেই মগ্ন ছিলেন ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা। সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।

আবারও হলের বাইরে ভোটকেন্দ্র ও প্রার্থিতার ক্ষেত্রে নির্ধারিত বয়সসীমা ৩০ বছর বাতিলসহ সাত দফা দাবি জানায় ছাত্রদল। এর সঙ্গে উপযুক্ত পরিবেশ নির্মাণের জন্য ডাকসু নির্বাচন তিন মাস পিছিয়ে দেওয়ার দাবিও জানায় সংগঠনটি। দাবি আদায়ে আন্দোলনের পরিকল্পনার সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা নির্বাচনের প্রস্তুতিও নিচ্ছেন বলে জানান ছাত্রদলের নেতারা।

ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি, সবার সঙ্গে কথা বলছি। আমাদের মূল দাবি, ভোটকেন্দ্র হলের বাইরে করা। শুধু আমাদের নয়, অন্য অনেক সংগঠনও একই দাবি জানিয়েছে। ছাত্রদের ওপর আমাদের পূর্ণ আস্থা আছে। ডাকসুর সর্বশেষ নির্বাচনে ছাত্রদল প্রায় দ্বিগুণ ভোটের ব্যবধানে জিতেছিল। এবারও ছাত্ররা যদি নির্ভয়ে-নিঃসঙ্কোচে ভোট দিতে পারে, তাহলে ছাত্রদলের বিজয় সুনিশ্চিত।’

নির্বাচন তিন মাস পেছানোর দাবির বিষয়ে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘অন্য সংগঠনগুলো মার্চের মধ্যে নির্বাচন চাইছে। তারা যেহেতু এত দিন ক্যাম্পাসে ছিল, তাদের আস্থার জায়গাটা একটু বেশি। কিন্তু নির্বাচন পেছানোর দাবিতে তারাও একমত। তারাও মনে করে, পুরো প্রক্রিয়াটা তড়িঘড়ি করে হয়েছে।’

ছাত্রলীগ অভিযোগ করছে, ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা অছাত্র। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমরা হয়তো জ্যেষ্ঠ শিক্ষার্থী, কিন্তু অছাত্র নই। আমাদের অনেকেই কোনো না কোনো কোর্সে ভর্তি আছেন। প্যানেল দেওয়ার মতো পর্যাপ্ত কর্মী-সমর্থক আমাদের আছে। এখন পর্যন্ত এককভাবে নির্বাচন করার সিদ্ধান্তে আছি। কেউ যদি আমাদের সঙ্গে আসতে চায়, আলোচনার ভিত্তিতে সেটি হবে।’