সর্বজনীন স্বাস্থ্য নিরাপত্তা অর্জনে জোর দিলেন প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মিউনিখে নিরাপত্তা সম্মেলনে ‘হেলথ ইন ক্রাইসিস-ডব্লিউএইচও কেয়ার্স’ বিষয়ক গোলটেবিল আলোচনায় বক্তব্য দেন। জার্মানি, ১৫ ফেব্রুয়ারি। ছবি: পিআইডি
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মিউনিখে নিরাপত্তা সম্মেলনে ‘হেলথ ইন ক্রাইসিস-ডব্লিউএইচও কেয়ার্স’ বিষয়ক গোলটেবিল আলোচনায় বক্তব্য দেন। জার্মানি, ১৫ ফেব্রুয়ারি। ছবি: পিআইডি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বের সব নাগরিকের জন্য সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে ডব্লিউএইচও-কে আরও বেশি সম্পৃক্ত হওয়ার ওপর জোর দিয়েছেন। তিনি বলেন, বিশ্বের শীর্ষ প্রতিষ্ঠান হিসেবে ডব্লিউএইচওর স্বাস্থ্যবিষয়ক এসডিজি অর্জনে আরও সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ত হওয়া প্রয়োজন।

প্রধানমন্ত্রী আজ শুক্রবার মিউনিখে নিরাপত্তা সম্মেলনের ৫৫তম সংস্করণে ‘হেলথ ইন ক্রাইসিস-ডব্লিউএইচও কেয়ার্স’ বিষয়ক গোলটেবিল আলোচনায় বক্তব্য দিচ্ছিলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের সরকার সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম সম্প্রসারণে একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে এবং এ বছরের কম বয়সী শিশু ও ৬৫ বছরের অধিক বয়সের লোকদের জন্য বিনা খরচে স্বাস্থ্যসেবার ব্যবস্থা করেছে।’

প্রধানমন্ত্রী টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য-৩ ও অন্যান্য স্বাস্থ্যসংশ্লিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে একটি কার্যকর, ফলদায়ক আন্তর্জাতিক সমন্বয় ও সহযোগিতার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘ইবোলা, কলেরা ও যক্ষ্মার মতো সংক্রামক রোগ পুনরায় বিশ্বব্যাপী দেখা দিয়েছে, ফলে বর্তমান স্বাস্থ্য ব্যবস্থার আধুনিকায়ন ও পরিবর্তন প্রয়োজন।’

শেখ হাসিনা উন্নয়নশীল ও স্বল্পোন্নত দেশগুলোর স্বাস্থ্য নিরাপত্তা কার্যক্রমে ভবিষ্যৎ ও জরুরি অর্থায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘ডব্লিউএইচও সংকটের বিশালতা, পুঁজি সংকট ও সক্ষমতার অভাবের কারণে প্রায়ই ভুল পদক্ষেপ নিয়েছে। কিন্তু আমাদের প্রধান মানবিক সংস্থা হিসেবে ডব্লিউএইচও সঠিকভাবেই সবার স্বাস্থ্য ও সুখের নিশ্চয়তার জন্য সরকারগুলোর কাছ থেকে উচ্চ পর্যায়ের রাজনৈতিক সহযোগিতা পাওয়ার যোগ্য।’

শেখ হাসিনা তাঁর বক্তৃতায় বলেন, ‘স্বাস্থ্যসেবা মানুষের অন্যতম মৌলিক চাহিদা। এ কারণেই এটিতে আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া প্রয়োজন।’ তিনি বলেন, ‘এটা দুর্ভাগ্যজনক যে আমরা আমাদের জনগণের জন্য যথাযথ স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে পারছি না। অথচ এসডিজি-৩-তে স্বাস্থ্যের অধিকারকে মৌলিক অঙ্গীকার হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্য খাতে তাঁর সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের উল্লেখ করে বলেন, বাংলাদেশের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা উন্নয়নে সামঞ্জস্যপূর্ণ নীতি গ্রহণ করা হয়েছে এবং আর্থিক সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, আর্থসামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি বাংলাদেশ স্বাস্থ্য সেক্টরেও উল্লেখযোগ্য উন্নতি সাধন করেছে। তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের উদ্যোগ আমাদেরকে “কম খরচে ভালো স্বাস্থ্য”-এর রোল মডেল করেছে।’

স্বাস্থ্য খাতে বাংলাদেশের সাফল্যের বিবরণ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতি লাখে মাতৃমৃত্যু ১৭২-এ নেমে এসেছে। শিশুমৃত্যু প্রতি হাজারে ২৪ এবং প্রতি হাজারে ৫ বছরের কম বয়সী শিশুর মৃত্যু ৩১-এ নেমে এসেছে। তিনি বলেন, দেশ বর্তমানে ৮২ দশমিক ৩ শতাংশ টিকার আওতায় এসেছে এবং গড় আয়ু ৭২ দশমিক ৮ বছরেরও বেশি। তিনি আরও বলেন, যক্ষ্মা ও কুষ্ঠ দূরীকরণে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য সাফল্য লাভ করেছে।