হিজড়া সেলিম খুনে জড়িত সাতজন গ্রেপ্তার, দুজনের স্বীকারোক্তি

রাজধানীর খিলক্ষেতে হিজড়া সেলিম ওরফে বৃষ্টি (৫০) হত্যা মামলায় সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁদের মধ্যে দুজন খুনের দায় স্বীকার করে ঢাকার আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন জহিরুল ইসলাম জহির (৩১), শুক্কুর আলী (৩২), ইয়াসিন শুভ ওরফে আশিক (২৩), মাসুদ (২৫), হিজড়া রাসেল ওরফে সজনী (২৪), সাগর ওরফে নূর মোহাম্মদ ওরফে মল্লিকা (২০) ও রফিকুল ইসলাম রফিক (৩৪)।

সন্দেহভাজন খুনির মধ্যে জহিরুল ইসলাম ও হিজড়া মল্লিকা খুনের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ঢাকার আদালতে জবানবন্দি দেন।

পুলিশ ও আদালত সূত্র বলছে, অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জের ধরে গত ২৭ জানুয়ারি রাতে খুন হন হিজড়া সেলিম। কয়েকজন মিলে শ্বাস রোধ করে হত্যা করে তাঁর লাশ ফেলে চলে যান। পরে ২৮ জানুয়ারি খিলক্ষেতের কুড়িল উড়াল সড়কের ঢালে সেলিমের লাশ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় সেলিমের ভাগনি মোহনা বাদী হয়ে ২৮ জানুয়ারি খিলক্ষেত থানায় অজ্ঞাত লোকজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।

মোহনা শনিবার রাতে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর মামা (হিজড়া সেলিম) ভাটারার কুড়িল কাজী বাড়ি আইসক্রিম ফ্যাক্টরি গলির সোহেলের বাসায় ভাড়া থাকতেন। একই বাসায় থাকতেন মাসুদ। মাসুদের সঙ্গে তাঁর মামার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। তবে তাঁর মামা সেলিম খুন হওয়ার তিন দিন আগে মাসুদের সঙ্গে ঝগড়া হয়। ঝগড়া হওয়ার কারণ হিজড়া মল্লিকা। মল্লিকার সঙ্গে মাসুদের প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়, যা কোনোভাবে মেনে নিতে পারেননি তাঁর মামা সেলিম। তাঁর মামার টাকা নিয়ে চলতেন মাসুদ।

সেলিমের ভাগনি মোহনা আরও বলেন, তাঁর মামাকে হিজড়া মল্লিকা নানু বলে ডাকতেন। মল্লিকার সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হওয়ায় মাসুদের সঙ্গে তাঁর মামার সম্পর্কের চরম অবনতি হয়। এর আগে চুরি করার অভিযোগে হিজড়া মল্লিকার চুল কেটে দেওয়ার পাশাপাশি তাঁকে সমাজচ্যুত করা হয়।

পুলিশ সূত্র বলছে, প্রেমের সম্পর্কের বিরোধ ছাড়াও মাদকের টাকা ভাগাভাগি নিয়ে সেলিমের সঙ্গে অন্যদের দ্বন্দ্ব চলছিল। নানা বিরোধের জের ধরে পরিকল্পিতভাবে হিজড়া সেলিমকে নৃশংসভাবে খুন করা হয়।

মামলার বাদী মোহনা বলেন, খিলক্ষেত এলাকার গ্রেপ্তার জহিরুল ও রফিকের সঙ্গে তাঁর মামার ভালো সম্পর্ক ছিল। প্রায় সময় সেলিমের ঘরে তাঁরা আড্ডা দিতে আসতেন। যে রাতে মামা খুন হন, সেদিনও তাঁরা সেলিমের সঙ্গে আড্ডা দেন।

খিলক্ষেত থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাজিরুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, অভ্যন্তরীণ বিরোধের জের ধরে হিজড়া সেলিম খুন হন। মাদকের টাকা ভাগাভাগিসহ নানা বিষয় নিয়ে তাঁদের মধ্যে দ্বন্দ্ব ছিল।