এক্স-রে টেকনিশিয়ান চেয়ে ১১ বছরে ১৩০ প্রতিবেদন

লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রায় ১১ বছর ধরে এক্স-রে যন্ত্রের টেকনিশিয়ান (মেডিকেল টেকনোলজিস্ট রেডিও) নেই। আর এ কারণে সচল এক্স-রে যন্ত্রটি ১১ বছর ধরে ব্যবহার করা যাচ্ছে না। এক্স-রের টেকনিশিয়ান চেয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ১৩০টি প্রতিবেদন পাঠানো হয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে। এতে স্থানীয় মানুষ চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

জনবল পরিস্থিতির তালিকা করে গতকাল সোমবার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে লক্ষ্মীপুর সিভিল সার্জন ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পাঠানো হয়। ওই প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, ২০০৮ সালের ২২ এপ্রিল থেকে এক্স-রে যন্ত্রের টেকনিশিয়ান নেই। প্রতি মাসেই এ প্রতিবেদন পাঠানো হলেও দীর্ঘ ১১ বছর গুরুত্বপূর্ণ পদটি শূন্য রয়েছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, পৌরসভা ও ১০টি ইউনিয়নের মানুষের চিকিৎসার ভরসা রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। একে ৩১ থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর চিকিৎসা কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। এ জন্য ওই সময় ৪ কোটি ১৪ লাখ টাকা ব্যয়ে আধুনিক ভবন নির্মাণ করা হয়। ২০০৭ সালের জুন মাসে নতুন একটি আধুনিক এক্স-রে যন্ত্র স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে দেওয়া হয়। কিন্তু স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এক্স-রে যন্ত্রটির টেকনিশিয়ান না থাকায় তা ব্যবহার হচ্ছে না। এতে গরিব রোগীরা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। প্রতিদিন হাসপাতালের বহির্বিভাগে গড়ে ৪০০ রোগীকে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়। এর মধ্যে কমপক্ষে ৫০ জন রোগীর এক্স-রের প্রয়োজন হয়। শূন্যপদটি পূরণের জন্য প্রতি মাসে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে প্রতিবেদন পাঠানো হয়। সে হিসাবে এ পর্যন্ত ১৩০টি প্রতিবেদন পাঠানো হয়।

সোনাপুর গ্রামের সালাহ উদ্দিন জানান, তিনি ৪ ফেব্রুয়ারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভাঙার এক্স-রে করতে এসেছেন। পরে তিনি বাধ্য হয়ে বেশি টাকা দিয়ে বেসরকারি ক্লিনিকে গিয়ে এক্স-রে করান।

কেরোয়া গ্রামের সুলতান আহমেদ জানান, পা ভাঙার কারণে ৫ ফেব্রুয়ারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন তিনি। এক্স-রের প্রয়োজন হলে তাঁকে স্বজনেরা ধরাধরি করে বাইরে নিয়ে এক্স-রে করান। এটা একজন রোগীর জন্য অনেক কষ্টকর।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেন বলেন, এক্স-রে টেকনিশিয়ান না থাকায় রোগীদের সেবা দেওয়া যাচ্ছে না। শূন্যপদটি পূরণের জন্য প্রতি মাসে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে প্রতিবেদন পাঠানো হয়। এরপরও কোনো লাভ হচ্ছে না।