থলেতে মোড়ানো নবজাতক

রাস্তার পাশে নবজাতকের কান্না শুনে ঘুম ভেঙে যায় মিজানুর রহমান দম্পতির। ঘরের বাইরে বেরিয়ে খুঁজতে থাকেন কান্নার উৎস। শেষে কাপড়ের থলেতে মোড়ানো এক নবজাতক কন্যাকে পান তাঁরা। এ সময় হই-চই করে আশপাশের লোকজনকে ডাকেন। অনেকে ছুটে গিয়ে নবজাতককে দেখেন। লোকজন চলে গেলেও নবজাতককে ফেলে যেতে পারেননি তাঁরা। উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে যান। পরে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যানের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) জানানো হলে প্রশাসনের পক্ষে নবজাতককে উদ্ধার করা হয়। ঘটনাটি রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার নাগপাড়া এলাকার।

যোগীপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল বলেন, গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে নাগপাড়া-সাখিদার পাড়া রাস্তার পাশে নবজাতকের কান্নার আওয়াজ পান মিজানুর রহমান ও তাঁর স্ত্রী নাজমিন আক্তার। ঘটনাস্থলে গিয়ে থলেতে মোড়ানো নবজাতককে দেখতে পান তাঁরা। এই দম্পতি নবজাতককে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে যত্ন করেন। আজ বুধবার সকালে তিনি জানার পর বিষয়টি ইউএনওকে জানান। ইউএনও জাকিউল ইসলামের নির্দেশে দুপুরে সমাজসেবা দপ্তরের কর্মকর্তারা শিশুকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে নবজাতকের চিকিৎসার পর পুলিশের হেফাজতে দেওয়া হয়।

মিজানুর রহমান বলেন, তাঁদের একটি কন্যা সন্তান আছে। চিকিৎসকের পরামর্শে বাজার থেকে শিশুখাদ্য কিনে নবজাতককে খাওয়ানো হচ্ছে। প্রশাসন অনুমতি দিলে তাঁর ছোট বোন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নবজাতককে লালন-পালন করবেন। তাঁর ছোট বোনের কোনো সন্তান নেই।

বাগমারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক হাসান আলী প্রথম আলোকে বলেন, নবজাতক কন্যার বয়স এখনো ২৪ ঘণ্টা হয়নি। ওজন তিন কেজি। সে সুস্থ রয়েছে। ভূমিষ্ঠ হওয়ার পরেই তাকে ফেলে যাওয়া হয়েছে।

উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আবদুল মমিন বলেন, নবজাতকটি সুস্থ রয়েছে। থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। পুলিশ নবজাতকের পরিচয় উদ্ধারের চেষ্টা করবে। এর সুরক্ষার জন্য সমাজসেবা অধিদপ্তর প্রস্তুত। ইউএনওর নির্দেশনা পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।