বিয়ের মাস না পেরোতেই থামল জীবন

মাহবুবুর রহমান রাজু ও তাঁর স্ত্রী আফরোজা সুলতানা স্মৃতি। ছবি: সংগৃহীত
মাহবুবুর রহমান রাজু ও তাঁর স্ত্রী আফরোজা সুলতানা স্মৃতি। ছবি: সংগৃহীত

বিয়ে করার এক মাস না পেরোতেই ভাইসহ ঢাকার চকবাজারে আগুনে পুড়ে মারা গেছেন যুবক ব্যবসায়ী মাহবুবুর রহমান রাজু (৩০)। গতকাল বুধবার বিয়ের ২৪তম দিনে রাজু তাঁর বড় ভাই মাসুদ রানার সঙ্গে নিজেদের দোকানে আগুনে পুড়ে মারা যান। বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) মর্গের সামনে আহাজারি করে এই কথা বলেন রাজুর শ্বশুর আবুল খায়ের।

স্বজন ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চকবাজারে ওয়াহেদ ম্যানসনের নিচতলায় রাজু ও রানা দুই ভাই মিলে রানা টেলিকম সার্ভিস নামে একটি দোকান পরিচালনা করতেন। বুধবার রাতে আকস্মিকভাবে যখন আগুন লাগার ঘটনা ঘটে তখন দুই ভাই দোকানেই ছিলেন। আগুন থেকে বাঁচতে একপর্যায়ে তাঁরা দোকানের শাটার নামিয়ে দেন। পরে সেই দোকানেই দুই ভাই একসঙ্গে পুড়ে মারা যান। বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢামেক মর্গে দুই ভাইয়ের লাশ শনাক্ত করেন তাঁদের পরিবার।

রাজু ও স্মৃতি দম্পতি। ছবি: সংগৃহীত
রাজু ও স্মৃতি দম্পতি। ছবি: সংগৃহীত

রাজুর শ্বশুর আবুল খায়ের প্রথম আলোকে বলেন, গত ২৮ জানুয়ারি বকশীবাজার এলাকায় একটি কমিউনিটি সেন্টারে তাঁর মেয়ে আফরোজা সুলতানা স্মৃতির সঙ্গে মাহবুবুর রহমান রাজুর বিয়ে হয়। বিয়ের মাস না পেরোতেই রাজু পুড়ে মারা গেলেন। তিনি বলেন, অগ্নিকাণ্ডের আধা ঘণ্টা আগে রাজুর মা দোকানে এসেছিলেন, আর ১৫ মিনিট পর তাঁর বাবা এসে টাকা নিয়ে যান।

নিহত মাসুদ ও রাজুর বাড়ি নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী এলাকায়। তাঁরা সপরিবারে চকবাজার এলাকায় বসবাস করেন। ওই দুই ভাই পরিবারের প্রধান কর্মক্ষম ছিলেন। তাঁদের ছোট ভাই মিরাজ এখনো পড়ালেখা করেন। তাঁদের বাবার নাম শাহেব উল্লাহ। তিনিও ব্যবসায়ী ছিলেন।

প্রসঙ্গত, চকবাজার এলাকার হাজি ওয়াহেদ ম্যানশন ভবনে গতকাল রাতে আগুন লাগে। পরে এই আগুন আশপাশেও ছড়িয়ে যায়। আগুনের ঘটনায় অন্তত ৭০ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) জাবেদ পাটোয়ারী। লাশের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলেও জানান তিনি। আগুনে দগ্ধ হয়ে অনেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

আরও পড়ুন: