চবি ছাত্রলীগের সিক্সটি নাইন ও উল্কা গ্রুপে মারামারি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে রাতভর ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। ছবি: প্রথম আলো
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে রাতভর ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। ছবি: প্রথম আলো

এক নেতাকে মারধরের অভিযোগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) রাতভর ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এতে সরকারদলীয় ছাত্রসংগঠনটির ১৩ কর্মী আহত হয়েছেন।

শুক্রবার রাত দেড়টা থেকে চারটা পর্যন্ত ক্যাম্পাসের শাহজালাল, শাহ আমানত ও সোহরাওয়ার্দী হলে এই ঘটনা ঘটে। এখন ক্যাম্পাসে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। দুই পক্ষই এখন হলে অবস্থান নিয়েছে।

বিবাদমান পক্ষ দুটি হলো সিক্সটি নাইন ও উল্কা। উভয় পক্ষই সিটি মেয়র আ জ ম নাছিরের অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত। এ ঘটনায় আহতরা হলেন, সাংবাদিকতা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ইশতিয়াক হোসাইন শামীম, পদার্থবিদ্যা চতুর্থ বর্ষের আনিস মাহমুদ, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী অর্ণব ইসলাম, আরবি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ঈমাম উদ্দিন, লোকপ্রশাসন বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মাহমুদ ইসলাম, একই বিভাগ ও বর্ষের মো. মামুন ইসলাম, অ্যাকাউন্টিং বিভাগের ২০১৩-১৪ শিক্ষা বর্ষের মিলন মাহমুদ, লোকপ্রশাসন বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী সৌরভ তালুকদার, অর্থনীতি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের রাহুল সাহা, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ২০১১-১২ শিক্ষা বর্ষের সাইদুল ইসলাম, প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী অভয় দাশ, তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ধ্রুব, একই বর্ষের সাদ্দাম হোসেন।

আহতরা সবাই সিক্সটি নাইন পক্ষের কর্মী। আহতদের মধ্যে ধ্রুব ও অর্ণবকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

ছাত্রলীগ ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাত দেড়টায় বিলুপ্ত কমিটির সহসভাপতি ও উল্কা পক্ষের নেতা গোলাম রসুলকে নগরের লালখান বাজার এলাকায় মারধর করে দুর্বৃত্তরা। এর প্রতিবাদে তার অনুসারীরা রাত দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক বন্ধ করে বিক্ষোভ করেন। গোলাম রসুলের অনুসারীদের অভিযোগ, সিক্সটি নাইনের নেতা ইকবাল টিপুর অনুসারীরা মারধরের সঙ্গে জড়িত। বিক্ষোভ চলাকালে সিক্সটি নাইনের নেতা-কর্মীরা উল্কার নেতা-কর্মীদের ধাওয়া দিয়ে ছত্রভঙ্গ করে দেন। পরে উল্কার পক্ষে এসে যোগ দেয় ভার্সিটি এক্সপ্রেস ও একাকার নামে আরও দুই সংগঠন। এ সময় দুই পক্ষই একে অপরকে ইট পাটকেল ও কাচের বোতল নিক্ষেপ করে। এ ছাড়া দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেয়। পরে পুলিশ ও প্রক্টোরিয়াল বডির সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবু তৈয়ব প্রথম আলোকে বলেন, আহতদের মধ্যে তিনজনের মাথায়, চোখে ও হাতে বেশি আঘাত থাকায় তাঁদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রেই চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
সংঘর্ষের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির উপদপ্তর সম্পাদক মিজানুর রহমান বলেন, ইকবাল টিপুর অনুসারীরা গোলাম রসুলকে মারধর করেছেন। এর প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করতে গেলে তাঁরা আবার হামলা করে।

তবে গোলাম রসুলকে কারা মারধর করেছে তা জানেন না উপগ্রন্থনা ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক ইকবাল টিপু। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, শহরে কে কোথায় কীভাবে মারধর করেছে তার কিছুই জানি না। গোলাম রসুল নগরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। নগরে তাঁর শত্রু থাকতে পারে।

জানতে চাইলে হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বেলাল উদ্দিন জাহাংগীর প্রথম আলোকে বলেন, পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে।