এপ্রিলে ঢাকায় গ্যাস সংকট কমবে?

আগামী এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ থেকে ঢাকায় গ্যাসের চলমান সংকট কমে যেতে পারে। জাতীয় গ্রিডে আরও গ্যাস যুক্ত হওয়ার কারণে তিতাসের গ্রাহকদের জন্যও গ্যাসের বরাদ্দ বাড়বে। তাই বর্তমানে গ্যাসের যে ঘাটতি, তা অনেকটা পূরণ হবে বলে আশাবাদ কর্তৃপক্ষের।

তিতাস গ্যাস সঞ্চালন ও বিতরণ কোম্পানি লিমিটেডের দায়িত্বশীল সূত্রে এ তথ্য জানা যায়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) গোলাম মোস্তফা প্রথম আলোকে বলেন, এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে জাতীয় গ্রিডে আরও ৫০ কোটি ঘনফুটের বেশি তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) যোগ হবে। তখন তিতাসের জন্য অন্তত ২০ কোটি ঘনফুট গ্যাসের বরাদ্দ বাড়ানো হবে বলে আশ্বাস পাওয়া গেছে। ওই সময় ঢাকায় গ্যাসের সংকট অনেক কমে যাবে।

গোলাম মোস্তফা আরও বলেন, তিতাস সিস্টেমের জন্য বর্তমানে ১৭০ কোটি ঘনফুট গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে। চাহিদা রয়েছে ২০০ কোটি ঘনফুটের কিছু বেশি। এপ্রিল থেকে এই ঘাটতি অনেক কমে যাবে।   

এ বিষয়ে পেট্রোবাংলা ও তিতাসের সূত্র জানায়, আগে দুই দফায় ৫০ কোটি ঘনফুট এলএনজি জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়েছে। দেশের বিভিন্ন গ্যাসক্ষেত্র থেকে উৎপাদন হয় ২৭০ কোটি ঘনফুট। মোট গ্যাস আছে ৩২০ কোটি ঘনফুট। আগামী এপ্রিলে আরও ৫০ কোটি ঘনফুট এলএনজি আসবে। তিতাসের সূত্রমতে, পাইপলাইন সমস্যার কারণে ২৫ কোটি ঘনফুটের বেশি এলএনজি গ্রহণ করা যাবে না। সে ক্ষেত্রে ঢাকায়ও প্রত্যাশিত গ্যাস পাওয়া নিয়ে শঙ্কা রয়েছে।   

এলএনজি আসার পর বিভিন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্র, সার কারখানা, বাখরাবাদ ও জালালাবাদ সিস্টেমে এবং পশ্চিমাঞ্চলে গ্যাস দিতে হয়েছে। এবার নতুন গ্যাস যোগ হওয়ার পর তিতাসের জন্য বরাদ্দ করা গ্যাস নিয়ে টানাহেঁচড়া কমে যাবে।   

এদিকে বর্তমানে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় গ্যাস–সংকট আরও বেড়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বাসিন্দারা। আগের মতোই রাতের বেলায়ও রান্না করার জন্য গ্যাসের চুলায় পর্যাপ্ত গ্যাস থাকছে না বলে জানিয়েছেন তাঁরা। বংশাল থানার কাজী আলাউদ্দিন রোড, সিদ্দিক বাজার, হাজী ওসমান গণি রোড (আলুবাজার), কোতোয়ালি থানার জিন্দাবাহার, তাঁতীবাজার, গোয়ালনগর, রাধিকামোহন বসাক লেন, সূত্রাপুরের রাজার দেউড়ি, মালাকার টোলা, বানিয়ানগর, গোপীবাগ, কে এম দাস লেন, গেন্ডারিয়ার এস কে দাস রোড, কে বি রোড, লালবাগের সোয়ারীঘাট, কালামবাগ, শহীদবাগ, জিগাতলা হাজারীবাগের ট্যানারি রোড ইত্যাদি এলাকা থেকে গ্যাস-সংকটের খবর পাওয়া যাচ্ছে। এ ছাড়া মোহাম্মদপুর, মিরপুরের ইব্রাহিমপুর এলাকায় গ্যাস–সংকট রয়েছে।

তবে গণমাধ্যমে গ্যাস–সংকট বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয় বলে জানিয়েছেন বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা। কাজী আলাউদ্দিন রোডের বাসিন্দা মেহেরুন নেসা প্রথম আলোকে বলেন, ৮ ফেব্রুয়ারি প্রথম আলোয় গ্যাস–সংকটের বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের পরপরই এলাকায় গ্যাসের সমস্যা কিছুটা কমে যায়। গ্যাসের চুলায় আঁচ বেড়ে যায়। আগে যেখানে রান্না করতে এক ঘণ্টা সময় লাগত, সেখানে ৪০ মিনিটে সম্ভব হচ্ছে। তিনি বলেন, এতে এলাকার কিছু মানুষের মনে প্রশ্ন জেগেছে, গ্যাসের সংকট ইচ্ছাকৃত কি না?

এ বিষয়ে তিতাস গ্যাস কোম্পানির পরিচালক (অপারেশন) মো. কামরুজ্জামান বলেন, পত্রপত্রিকায় ছাপা হলে অনেক সময় সংকটের খবরটি তাঁরা জানতে পারেন। এর ফলে এলাকার ফুটো পাইপলাইন মেরামত করাও সহজ হয়। ইতিমধ্যে ঢাকার অনেক এলাকার পাইপলাইন মেরামত করা হয়েছে বলে জানান তিনি।