প্রচারে জমজমাট সৈয়দপুর

সৈয়দপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রচারণা চালাচ্ছেন বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান মোখছেদুল মোমিন। গতকাল শহরের শহীদ ডা. জিকরুল হক সড়কে।  ছবি: প্রথম আলো
সৈয়দপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রচারণা চালাচ্ছেন বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান মোখছেদুল মোমিন। গতকাল শহরের শহীদ ডা. জিকরুল হক সড়কে। ছবি: প্রথম আলো

প্রথম দফা উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১০ মার্চ। মাঠে বিএনপি নেই। তবু প্রতিদ্বন্দ্বিতা আছে। প্রার্থীদের প্রচার–প্রচারণায় তাই সরব নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার হাটবাজারসহ বিভিন্ন এলাকা।

উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সৈয়দপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন তিনজন। তাঁদের মধ্যে বর্তমান চেয়ারম্যান মো. মোখছেদুল মোমিন নৌকা প্রতীক, জাতীয় পার্টির জয়নাল আবেদীন লাঙ্গল ও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির রুহল আলম হাতুড়ি প্রতীক নিয়ে লড়ছেন।

গতকাল রোববার উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের সাতপাই গ্রামের সবুর চৌধুরী বলেন, ‌‘ভোট আর কাক দেমো, লওকার (নৌকা) জমানা চলেছে। মার্কাটাত ভালো ভোট পড়িবে।’

চওড়া বাজারে চায়ের দোকানে কথা হয় চিত্ত পালের সঙ্গে। তিনি বললেন, ‘ধানের শীষ থাকিলে ভোটটা আরও জুত হইল হ্যায়।’ তাঁর কথায়, তবু প্রচারণা জোরেশোরে চলছে। রাতদিন সমানতালে প্রার্থীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট চাইছেন, ভোটারদের বিরক্ত করছেন।

আগের রাতে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সৈয়দপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোখছেদুল মোমিন সৈয়দপুর শহরে গণসংযোগ করেছেন। তাঁর সমর্থনে শহরের রসুলপুরে এক পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে এলাকার বিপুলসংখ্যক মানুষ জমায়েত হয়। তিনি জানান, ভোট হচ্ছে গণতান্ত্রিক চর্চার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। জনগণ যাঁকে চাইবেন, তিনিই নির্বাচিত হবেন। তিনি দাবি করে বলেন, ‘সৈয়দপুরে নৌকার জোয়ার চলছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমরা এই গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা উপহার দিতে চাই।’

হাতুড়ি প্রতীকের রুহুল আলম বেশির ভাগ সময় একা একা প্রচার চালাচ্ছেন। তবে মাঝেমধ্যে কিছু নেতা-কর্মীকে তাঁর সঙ্গে প্রচার চালাতে দেখা যাচ্ছে। সৈয়দপুর শহরের একটি পত্রিকার দোকানে কথা হয় রুহুল আলমের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘মানুষ পরিবর্তন চায়, সৎ ও যোগ্য ব্যক্তিকে বেছে নিতে চায়। আমি মনে করি, সততার জয় হবে। হাতুড়ি জিতবে।’

এই বিষয়ে জাতীয় পার্টির প্রার্থী জয়নাল আবেদীন বলেন, সৈয়দপুর হচ্ছে এরশাদের ঘাঁটি। এখানে লাঙ্গলের বিকল্প নেই। তাঁরা জয়ের লক্ষ্যে প্রচারণা চালাচ্ছেন।

গতকাল উপজেলার কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, মাইকে বিভিন্ন প্রার্থীর পক্ষে ভোট প্রার্থনা করে গান বাজানো হচ্ছে। হাটবাজারগুলোতে শিশুদের দিয়ে প্রচার চালানো হচ্ছে। প্রচারকাজে শিশুদের ব্যবহারের কারণ জানতে চাইলে কয়েকজন প্রার্থী বলেন, ভালোবাসার টানে ওরা আসে। শিশুকণ্ঠে স্লোগান শুনতে কার না ভালো লাগে।

সৈয়দপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীদের পাশাপাশি জনসংযোগে ব্যস্ত সময় পার করছেন ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীরা। এসব পদে দলীয়ভাবে ভোট হচ্ছে না বলা হলেও স্থানীয়ভাবে দলই মনোনয়ন দিয়েছে বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান আজমল হোসেন ও সংরক্ষিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে সানজিদা বেগম লাকীকে (পদ্মফুল প্রতীক)। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে আরও একজন প্রার্থী আছেন। তিনি দলীয় সমর্থন না পেলেও বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট চাচ্ছেন। ওই প্রার্থী হলেন সৈয়দপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য হাসিনা বেগম (কলস প্রতীক)। পরোক্ষভাবে স্থানীয় বিএনপির সম্মতি নিয়ে নির্বাচন করছেন বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রওনক আফজাল (সেলাই মেশিন প্রতীক)।

এ ছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করছেন জাহাঙ্গীর সরকার (উড়োজাহাজ প্রতীক), মনোয়ার হোসেন মন্টু (টিউবওয়েল প্রতীক) ও সুরত আলী (লাঙ্গল প্রতীক)।