খাল ভরাটের অভিযোগ

চরঈশ্বরদিয়া গ্রামে খাল ভরাট করে বাড়ি নির্মাণ করা হচ্ছে। সম্প্রতি তোলা ছবি।  প্রথম আলো
চরঈশ্বরদিয়া গ্রামে খাল ভরাট করে বাড়ি নির্মাণ করা হচ্ছে। সম্প্রতি তোলা ছবি। প্রথম আলো

সরকারি নিষেধ না মেনে ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন এলাকায় একটি খাল ভরাটের অভিযোগ উঠেছে। চর ঈশ্বরদিয়া গ্রামের মোশারফ হোসেন নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে। এই খাল ভরাট বন্ধের দাবি জানিয়ে জেলা প্রশাসক ও পরিবেশ অধিদপ্তরে স্থানীয় বাসিন্দারা স্মারকলিপি দিয়েছেন।

তবে অভিযুক্ত মোশারফ হোসেনের দাবি, সরকারিভাবে এখানে কোনো খাল নেই। ওই জমি তিনি কিনেছেন। পাশ দিয়ে পানিনিষ্কাশনের জন্য জায়গা রেখে তিনি ওই জমিতে বাড়ি নির্মাণ করবেন।

চর ঈশ্বরদিয়া গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দা ও প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, চর ঈশ্বরদিয়া গ্রামে ২২ শতক জমি কিনেছেন স্থানীয় মোশারফ হোসেন। ওই জমিতে বাড়ি নির্মাণের উদ্দেশ্যে তিনি মাটি ভরাটের কাজ শুরু করেন। মাটি ভরাটের সময় তিনি ওই জমির পাশে খালটির অংশও ভরাট করছেন। পরে এলাকার বাসিন্দারা পরিবেশ অধিদপ্তর, ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে খাল ভরাট বন্ধের দাবি জানিয়ে লিখিত অভিযোগ করেন। স্থানীয়দের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মহিনুল হাসান পরিদর্শনে গিয়ে খাল ভরাট বন্ধের জন্য বলেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে খাল ভরাট বন্ধের কথা বলা হলেও মোশারফ হোসেন তা মানেননি।

গত রোববার চর ঈশ্বরদিয়া গ্রামের বাসিন্দা আবারও ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক সুভাষ চন্দ্র বিশ্বাসের কাছে খালটির ভরাট বন্ধ ও উদ্ধারের দাবি জানিয়ে একটি স্মারকলিপি দেন। এ সময় জেলা প্রশাসক খালটির ভরাট বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।

গ্রামবাসীর অভিযোগ, ৫০ থেকে ৬০ বছর ধরে চর ঈশ্বরদিয়া গ্রামের ভেতর দিয়ে খালটি প্রবাহিত হচ্ছে। ওই খালটি দিয়ে বর্ষাকালে চর ঈশ্বরদিয়া গ্রামসহ কয়েকটি গ্রামের পানি নিষ্কাশিত হয়। এ ছাড়া খালটি এলাকার কৃষির জন্য উপকারী। এটি ভরাট হয়ে গেলে এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হবে। পাশাপাশি ফসলের ক্ষতি হবে। খালটি বন্ধ হয়ে গেলে এলাকায় পরিবেশ বিপর্যয়ও ঘটতে পারে। ভরাটের শুরুতে গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে বাধা দেওয়া হলেও মোশারফ তা মানছেন না।

জানতে চাইলে অভিযুক্ত মোশারফ হোসেন বলেন, ‘জায়গাটি দেখতে খালের মতো হলেও কাগজপত্রে এখানে কোনো খাল নেই। ওই জমি আমি কিনেছি। তবে ওই অংশ দিয়ে পানি প্রবাহিত হয় বলে আমি অনেকখানি অংশ উন্মুক্ত রেখেছি। ওইটুকু অংশ পানিপ্রবাহের জন্য যথেষ্ট। ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আমার বিরুদ্ধে খাল ভরাটের অভিযোগ আনা হয়েছে।’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মহিনুল হাসান বলেন, ভূমি রেকর্ডে এটি খাল না হলেও বাস্তবে এটি খাল। দীর্ঘ সময় ধরে পানিপ্রবাহ ধরে রেখেছে খালটি। কাজেই এটি ভরাট করার কোনো সুযোগ নেই। খালটি ভরাট না করতে ভরাটকারী ব্যক্তিকে বলা হয়েছে।