বহরে ৫২টির বদলে ৮ গাড়ি রাখার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  ফাইল ছবি
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘যাঁরা সিগন্যাল নিয়ন্ত্রণ করেন তাঁদের বলব, বেশি সময় যেন ট্র্যাফিক আটকে রাখা না হয়। ডিজিটাল পদ্ধতিতে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা চালু হলে দুর্ভোগ কিছু কমবে। শিগগিরই ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ বন্ধ করে অটোমেটিক এবং রিমোট কন্ট্রোলের সমন্বয়ে ট্রাফিক সিগন্যাল লাইট অনুযায়ী যানবাহন নিয়ন্ত্রণ শুরু করা হবে।’

আজ বুধবার জাতীয় সংসদে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বৈঠকের শুরুতে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্ব অনুষ্ঠিত হয়।

রাজধানীতে যানজটের প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি বলতে গেলে তো বের হওয়াই ছেড়ে দিয়েছি। আমি বের হলেই ট্রাফিক আটকায়। অফিস এবং কোথাও যদি কর্মসূচি থাকে সেখানে ছাড়া আর কোথাও যাওয়াই হয় না এ জন্যই যে, ট্রাফিক যদি আটকে দেয়।’ শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর প্রধানমন্ত্রীর বহরে ৫২টি গাড়ি ছিল। তিনি মোট ৮টি গাড়ি রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।

বিরোধী দলের মুজিবুল হকের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যানজটের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে ট্রাফিক আইন না মানা। পাশাপাশি রাস্তা-ফুটপাত দখল করে যেখানে-সেখানে গাড়ি থামানো, পার্কিং করাসহ অনেক সমস্যার সৃষ্টি হয়। এটা না করে পরিকল্পিতভাবে সবাই চললে হয়তো এত সমস্যা হতো না।

সরকারি দলের সাংসদ দিদারুল আলমের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঢাকা মহানগরীর যানজট সমস্যা নিরসনে গত ১০ বছরে বেশ কিছু প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। অনেক প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন। চলমান প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন হলে খুব শিগগিরই ঢাকা মহানগরী যানজটমুক্ত হবে।

কুড়িগ্রাম-১ আসনের সাংসদ আছলাম হোসেনের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ ব্যবহার করে বিভিন্ন টিভি চ্যানেল তাদের সম্প্রচার কাজ সম্পন্ন করতে পারছে। এটি ব্যবহার করে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল একাত্তর, সময়, বৈশাখী ও এনটিভি সরাসরি সম্প্রচার করছে। এর সাহায্যে আবহাওয়া পূর্বাভাস প্রাপ্তির সুবিধা গ্রহণ করা হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নতুন কিছু করার জন্য আত্মসমর্পণকারী মাদক ব্যবসায়ীদের আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে।

সরকারি দলের মাহফুজুর রহমানের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, অপরাধবোধের উপলব্ধি থেকেই আত্মসচেতন হয়ে মাদকাসক্ত ব্যক্তি ও মাদক ব্যবসায়ীরা আত্মসমর্পণ করছেন। আত্মসমর্পণকারী ব্যক্তিদের মধ্যে যাঁরা মাদকাসক্ত, তাঁদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পরিবারকে সহায়তা করা হচ্ছে। আর যাঁরা মাদক ব্যবসায় যুক্ত, তাঁরা এই ব্যবসা ছেড়ে যাতে নতুন কিছু করতে পারেন, সে জন্য আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে। আর্থিক সহায়তা পেয়ে তাঁরা যাতে অন্য নতুন ব্যবসা করে ভালোভাবে চলতে পারেন, সেই ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে।

মাহফুজুর রহমানের প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণে সরকারের জিরো টলারেন্স নীতি ও পুলিশের অভিযান অব্যাহত থাকবে। তিনি জানান, মাদকদ্রব্য উদ্ধার ও দমন অভিযানে ২০১৮ সালে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ১ লাখ ১৯ হাজার ৮৭৮টি মামলা করেছে। এ মামলায় ১ লাখ ৬১ হাজার ৩২৩ জনকে আসামি করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী জানান, ২০০৯ থেকে ২০১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত মাদকবিরোধী প্রচারাভিযানে ৩৫ লাখ ৮৫ হাজার ৭৯৬টি লিফলেট, ১ লাখ ৮৩ হাজার ১৪৮টি স্টিকার, ১০ লাখ ১৭ হাজার ১৭১টি পোস্টার, ১ লাখ ২ হাজার ৮০২টি বুলেটিন প্রকাশ ও ৬৪ হাজার ৪৩৬টি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।