পূর্ণ প্যানেলে ছাত্রলীগ জয়ী

ফরিদপুরে সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের ছাত্র সংসদ নির্বাচনে গতকাল উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দেন শিক্ষার্থীরা। সকালে কলেজের শহর শাখায়।  প্রথম আলো
ফরিদপুরে সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের ছাত্র সংসদ নির্বাচনে গতকাল উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দেন শিক্ষার্থীরা। সকালে কলেজের শহর শাখায়। প্রথম আলো

ফরিদপুরে গতকাল বুধবার সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ ছাত্র সংসদের নির্বাচনে শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। এতে পূর্ণ প্যানেলে জয়লাভ করেছে ছাত্রলীগ। তবে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ তুলে নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছে ছাত্রদল।

গতকাল সকাল সাড়ে আটটায় ভোট গ্রহণ শুরু হয়। বিরতিহীনভাবে বেলা তিনটায় ভোট গ্রহণ শেষ হয়। এর পরপরই শুরু হয় ভোট গণনা। সন্ধ্যায় ফল ঘোষণা করা হয়। নির্বাচন কমিশনার কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম বলেন, নির্বাচনে ছাত্রলীগ সমর্থিত প্যানেলের ১৭ জনই নির্বাচিত হয়েছেন। নির্বাচন শান্তিপূর্ণ, অবাধ ও নিরপেক্ষ পরিবেশে সম্পন্ন হয়েছে। বেলা তিনটায় ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার পর কক্ষেই গণনা করা শুরু হয়। এই নির্বাচনে ভোটার ছিলেন ২৮ হাজার ৪৮০ জন। এর মধ্যে ভোট দিয়েছেন ৬ হাজার ৪৫০ জন। ভোট পড়ার হার ২২ দশমিক ৬৪ শতাংশ। সকালে বিরূপ আবহাওয়ার কারণে শুরুতে ভোটার
উপস্থিতি কম ছিল। সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ভিড় হয়।

বিজয়ী ব্যক্তিরা হলেন নূর হোসেন মারুফ (সহসভাপতি—ভিপি), আসিফ ইমতিয়াজ সজল (সাধারণ সম্পাদক—জিএস), গোপাল রায় (সহসাধারণ সম্পাদক—এজিএস), ফাহিম বিন হাদ্ (সম্পাদক ক্রীড়া), নাভিদ হাসান (সম্পাদক ছাত্র মিলনায়তন), হুমায়ন কবির (সম্পাদক, সহ-ছাত্র মিলনায়তন), রাবেয়া আক্তার (সম্পাদক ছাত্রী মিলনায়তন), রুকাইয়া বিনতে জাফর (সহসম্পাদক ছাত্রী মিলনায়তন), এম এম হাবীবুন নবী (সম্পাদক, সাহিত্য ও সংস্কৃতি), চিরঞ্জিত কুমার ঘোষ (সম্পাদক, বার্ষিকী), মশিউর রহমান (সম্পাদক ধর্ম ও সমাজকল্যাণ)। এ ছাড়া কার্যকরী সদস্যপদে শাহারিয়ার ইসলাম, ছাব্বির মোল্লা, রবিউল ইসলাম রাশেদ, মোহাম্মদ রিয়াজ, চয়ন মোল্লা ও মীর তাসনীম আনজুম জয়লাভ করেছেন।
এই নির্বাচনে ১৭টি পদের জন্য ৬৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এর মধ্যে ছাত্রলীগ, ছাত্রদল ও ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন পূর্ণ প্যানেলে প্রার্থী দিয়েছে। এ ছাড়া বাংলাদেশ ছাত্রমুক্তি জোট ১৩টি পদে, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন ১টি পদে ও স্বতন্ত্রভাবে দুই প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।

নূর হোসেন ,আসিফ ইমতিয়াজ
নূর হোসেন ,আসিফ ইমতিয়াজ

গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজেন্দ্র কলেজের শহর ক্যাম্পাসে গিয়ে দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দিচ্ছেন। কলেজের প্রধান ফটকের সামনে বিভিন্ন দলের প্রার্থী ও সমর্থকেরা ভোটারদের কাছে সমর্থন ও ভোট চাইছেন। একটি কেন্দ্রে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সেখানে ভোটার ৪০০ জন। কিন্তু ভোট গ্রহণ শুরু হওয়ার তিন ঘণ্টা পার হলেও ভোট পড়েছে ৭৮টি। আরেকটি কেন্দ্রে ভোটার ১ হাজার ৩৩৮ জন। ওই সময় পর্যন্ত ভোট দিয়েছেন ৮৫ জন।

নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ এনে ফল বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে ছাত্রদল। ফরিদপুর মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি শাহরিয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, নির্বাচনে ভোটের আগেই ব্যালট বাক্স ভরে রাখা হয়েছিল। তাঁদের নেতা-কর্মীদের ভোট দিতে বাধা দেওয়া হয়েছে। এজেন্টদের ভয়ভীতি দেখিয়ে স্বাক্ষর আদায় করা হয়েছে। ব্যালট বাক্স স্বচ্ছ ছিল না। নির্বাচনের নামে প্রহসন হয়েছে।
এসব অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে কলেজের অধ্যক্ষ মোশার্রফ আলী বলেন, নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হয়েছে। কোনো ভয়ভীতি বা অনিয়মের ঘটনা ঘটেনি। নির্বাচন কেমন অবাধ হয়েছে, তা সবাই দেখেছেন। সাংবাদিকেরা নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেছেন। কেউ অনিয়মের কোনো অভিযোগ করেননি। ব্যালট বাক্স আগে ভরে রাখা হলে ভোট পড়ার হার মাত্র ২২ দশমিক ৬৪ শতাংশ হতো না।