কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ ভবন ব্যবহারের অনুপযোগী

রাকসু ভবন
রাকসু ভবন

প্রায় ২৯ বছর ধরে নির্বাচন হয়নি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (রাকসু)। তবে রাকসু নির্বাচনের লক্ষ্যে এরই মধ্যে ছাত্রসংগঠনগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। রাকসু সচল থাকা অবস্থায় ছাত্র সংসদের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের দাপ্তরিক কাজে ব্যবহার হতো রাকসু ভবন। এখন সেই রাকসু ভবন সংস্কারের অভাবে অনেকটাই ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের উত্তর দিকে রাকসু ভবনের অবস্থান। ভবনটির বাইরে কোনো নামফলক নেই। তাই বছরখানেক আগে ভবনটির দেয়ালে ছাত্র ইউনিয়নের নেতা-কর্মীরা লাল রঙে ‘রাকসু ভবন’ লিখে দিয়েছিলেন। ভবনের ভেতর-বাইরের চুনকাম করা সাদা রংও চটে গেছে। কোথাও উঠে গেছে প্লাস্টার। ভেঙে গেছে জানালার কাচ। ভেতরে রাখা হয়েছে ভাঙাচোরা আসবাব।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন রাকসুর কার্যকারিতা না থাকায় বিভিন্ন সময়ে রাকসু ভবনে ঠাঁই পেয়েছে কয়েকটি সংগঠন। দ্বিতল ভবনটির নিচতলায় আছে সমকাল নাট্যচক্র, রাজশাহী ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং সোসাইটি, রাজশাহী ইউনিভার্সিটি ড্রামা অ্যাসোসিয়েশন, বিশ্ববিদ্যালয় থিয়েটার রাজশাহী, উদীচী সাংস্কৃতিক সংসদ, অরণি সাংস্কৃতিক সংসদ, অ্যাসোসিয়েশন ফর কালচার অ্যান্ড এডুকেশন (এস) ও কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক জোটের কার্যালয়। দ্বিতীয় তলায় কার্যক্রম চালায় অনুশীলন নাট্যদল, সমগীত, তীর্থক নাটক, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার্স ইউনিটি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদের নির্বাচন হবে আগামী ১১ মার্চ। নির্বাচনের দাবি উঠছে, দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের ছাত্র সংসদের। রাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে রাকসু ভবনে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা আবার তাঁদের দপ্তরে এসে বসবেন। তখন ভবনে থাকা সংগঠনগুলোকে অন্য কোথাও সরে যেতে হবে। তবে শহীদ সুখরঞ্জন সমাদ্দার ছাত্র-শিক্ষক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে (টিএসসিসি) যেতে রাজি নয় বেশির ভাগ সাংস্কৃতিক সংগঠন।
রাকসু ভবনে নিয়মিত মহড়া চালায় অনুশীলন নাট্যদল। সংগঠনটির প্রধান উপদেষ্টা বিশিষ্ট নাট্যকার মলয় ভৌমিক প্রথম আলোকে বলেন, ‘চার দশকের পথচলায় কখনো কোনো একটি ভবনের ছাদে, কখনো গাছতলায় কাজ করেছি। তবে আমরা বর্তমান টিএসসিসি নির্মাণের পর এর বিরোধিতা করেছিলাম। ওটা সংস্কৃতি চর্চার উপযোগী স্থান হয়নি।’

রাকসুর কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মীর ইমাম ইবনে ওয়াহেদ জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ স্মৃতি সংগ্রহশালা দুটি পালা করে রাকসু ভবনসহ কয়েকটি ভবনে পাহারার ব্যবস্থা করে। এর বাইরে তেমন কোনো সংস্কারকাজ করা হয়নি। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন রাকসু ভবন সংস্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তখন ভবনটি রং করাসহ ভাঙাচোরা অংশ মেরামত করা হবে।