'দেরি করে এলেও আমি প্রথম ভোটার'

সকাল ১০টায় মিরপুর সেনপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র। ছবি: কমল জোহা খান
সকাল ১০টায় মিরপুর সেনপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র। ছবি: কমল জোহা খান

বৃষ্টির কারণে আজ বৃহস্পতিবার একটু দেরি করে ঘুম ভাঙে আদিবা হাসানের। ১০টার দিকে ভোট দিতে রওনা দেন বাসা থেকে। মিরপুর সেনপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে যাওয়ার সময় ভেবেছিলেন হয়তো লম্বা লাইন থাকবে। ঘণ্টাখানেক সময় লাগবে ভোট দিতে। কিন্তু ভাবনার সঙ্গে বাস্তবতার একেবারেই মিল ছিল না।

মাত্র ৫ মিনিটে ভোট দেওয়ার কাজ সেরে প্রবেশপথে দাঁড়িয়ে ছিলেন আদিবা হাসান। কেন্দ্রের প্রধান ফটকে দাঁড়িয়ে কথা হলো তাঁর সঙ্গে। আদিবা বলেন, ভেতরে গিয়ে যখন ভোট দিচ্ছিলাম, তখন বলা হচ্ছিল আপনিই প্রথম ভোটার। বাড়ি ফিরে অন্য যাঁরা ভোটার আছেন, তাঁদের একটু পাঠিয়ে দেবেন।
এরপর আদিবা হাসিমুখে বলেন, ‘দুই ঘণ্টা দেরি করে এলেও আমি প্রথম ভোটার।’

আদিবা ফিরে যাওয়ার পর সেনপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রটি একেবারেই ফাঁকা হয়ে যায়। অথচ ওই কেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা সাড়ে পাঁচ হাজার।
ভেতরে গিয়ে দেখা গেল, আনসার সদস্যরা অলস বসে আছেন। প্রিসাইডিং অফিসার নিজ কক্ষে চুপ করে বসে আছেন। পোলিং এজেন্টরা নিজেদের মধ্যে খোশগল্পে ব্যস্ত। প্রিসাইডিং অফিসার এম এ কালাম আজাদ প্রথম আলোকে বলেন, বৃষ্টির কারণে ভোটাররা আসছেন না। হয়তো বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটার উপস্থিতি বাড়বে।

কিন্তু ঘণ্টা দুয়েক পর ওই কেন্দ্রের সামনে গিয়ে দেখা গেল একই অবস্থা। একেবারে সুনসান নীরবতা। বাইরে কেবল রয়েছেন আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের ব্যাজ পরে থাকা কর্মী-সমর্থকেরা। অন্যান্য দলের মেয়র প্রার্থীদের কোনো সমর্থক, পোলিং এজেন্ট কিংবা নির্বাচনী ক্যাম্প অফিস কিছুই ছিল না।

তবে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর একটি ক্যাম্প থাকলেও সেখানে ভোটার তালিকা দেখতে, অথবা নিজের সিরিয়াল নম্বরটি যাচাই করতে একজন ভোটারও আসেননি।
পাশের মিরপুর শহীদ আবু তালেব উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রের মোট ভোটার সংখ্যা আড়াই হাজার। কিন্তু বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত সেখানে পাঁচটি ভোটও পড়েনি। তবে কেন্দ্রের ভেতরে-বাইরে নৌকা প্রতীকের সমর্থকদের ঘোরাফেরা ছিল।