এলাকা ছাড়ার নির্দেশ থাকলেও ছাড়েননি সাংসদ

উপজেলা নির্বাচনী এলাকায় আলোচনা সভায় বক্তৃতা করছেন সাংসদ ওমর ফারুক চৌধুরী। তানোর, রাজশাহী, ২৮ ফেব্রুয়ারি। ছবি: প্রথম আলো
উপজেলা নির্বাচনী এলাকায় আলোচনা সভায় বক্তৃতা করছেন সাংসদ ওমর ফারুক চৌধুরী। তানোর, রাজশাহী, ২৮ ফেব্রুয়ারি। ছবি: প্রথম আলো

নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগে রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী) আসনের সাংসদ ওমর ফারুক চৌধুরীকে নির্বাচন কমিশন থেকে নির্বাচনী এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হলেও তিনি এলাকা ছাড়েননি। বৃহস্পতিবার বিকেলে তিনি তানোরের একটি আলোচনা সভায় বক্তব্য দিয়েছেন।

তানোর উপজেলার মুন্ডুমালা সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও শহীদ দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করে উপজেলা আওয়ামী লীগ। এতে সাংসদ ওমর ফারুক চৌধুরী প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে এই মঞ্চে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী লুৎফর রশিদ হায়দার বক্তব্য দেন। অবশ্য তখনো ফারুক চৌধুরী সভামঞ্চে গিয়ে পৌঁছাননি। প্রার্থী বক্তব্য দিয়ে চলে যাওয়ার পর সাংসদ মঞ্চে যান।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লায়েব উদ্দীন। সভাপতিত্ব করেন তানোর উপজেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি খাদেমুন নবী চৌধুরী।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দলীয় প্রার্থীসহ অনুষ্ঠানের অন্য বক্তারা চেয়ারম্যান প্রার্থীর জন্য নৌকায় ভোট চেয়েছেন। সাংসদ ওমর ফারুক চৌধুরী সবশেষে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সরাসরি ভোট চাননি। তিনি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ওপর আলোচনা করেন। শেষে অনুষ্ঠানের অন্য নেতাদের বক্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করে তাঁর বক্তব্য শেষ করেন।

আগামী ১০ মার্চ প্রথম দফা উপজেলা নির্বাচনে তাঁর সংসদীয় এলাকা গোদাগাড়ী ও তানোরে উপজেলায় নির্বাচন হচ্ছে। সাংসদ ওমর ফারুক চৌধুরী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের অনুষ্ঠানে ব্যানারে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। সর্বশেষ গত সোমবার তিনি গোদাগাড়ীতে একই বিষয়ের অনুষ্ঠানে নির্বাচনী বক্তব্য দেন।

এ বিষয়ে একজন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাচন কমিশন গত বুধবার সাংসদ ওমর ফারুক চৌধুরীকে নির্বাচনী এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দেন। এরপরও তিনি নির্বাচনী এলাকায় অবস্থান করছেন।

নির্বাচন কমিশনের চিঠি ওমর ফারুক চৌধুরীর কাছে পৌঁছানো হয়েছে কি না, জানতে চাইলে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজশাহী জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, চিঠি পাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই তা সাংসদ ওপর ফারুক চৌধুরীর ব্যক্তিগত সহকারীর হাতে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে তানোর উপজেলা নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জুলকার নায়ন প্রথম আলোকে বলেন, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি সাংসদকে ফোনেও বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে। এরপরও তিনি (সাংসদ) নির্বাচনী এলাকায় গিয়েছেন, এটা তাঁদের জানা নেই। তিনি তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিষয়টি খোঁজ নেওয়ার জন্য বলবেন। ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে বিষয়টি নির্বাচন কমিশনকে জানানো হবে।

এ বিষয়ে সাংসদ ওমর ফারুক চৌধুরীর বক্তব্য নেওয়ার চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি।