উচ্ছেদের পর সওজের জায়গা আবার দখল

বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলায় বগুড়া-নাটোর মহাসড়কে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের জায়গায় অবৈধ স্থাপনা জানুয়ারির শেষ দিকে উচ্ছেদ করা হয়। কিন্তু আবার জায়গা দখল করে স্থাপনা নির্মাণ চলছে।

প্রতিকার চেয়ে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে গত বুধবার জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), সওজ বিভাগসহ সরকারের সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে। শাজাহানপুর উপজেলার বীরগ্রাম বাজারের ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে ফুয়াদ হাসান এই আবেদন করেন। এতে উল্লেখ করা হয়, মহাসড়কের জায়গা দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করায় প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। লোকজন হতাহত হচ্ছে। তা ছাড়া অন্যের জায়গা ইজারা নিয়ে কিংবা নিজস্ব জায়গায় ব্যবসা করছেন, এমন ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

সওজ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, শাজাহানপুর উপজেলার বীরগ্রাম বাজারে মহাসড়কের জায়গা দখল করে অবৈধভাবে গড়ে তোলা অন্তত ৩০টি স্থাপনা ২৮ থেকে ৩০ জানুয়ারি উচ্ছেদ করা হয়। কিন্তু এরপর বীরগ্রাম বাজারে উচ্ছেদ করা জায়গা দখল করে আবার অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করছে যুবলীগের ছত্রচ্ছায়ায় থাকা স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল।

জেলা প্রশাসকসহ একাধিক দপ্তরে দেওয়া আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, মহাসড়কের জায়গা দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণে নেতৃত্বে দিচ্ছেন শাজাহানপুর উপজেলার খড়না ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য ও উপজেলা যুবলীগের প্রচার সম্পাদক বিপ্লব হোসেন ওরফে বিপুল। দখলের কৌশল হিসেবে কিছু খালি জায়গায় অস্থায়ী ঘর তুলে উপজেলা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর নির্বাচনী ক্যাম্প নির্মাণ করছেন।

 তবে নির্বাচনী ক্যাম্প নির্মাণের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন উপজেলা যুবলীগের সম্পাদক ও উপজেলা নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সোহরাব হোসেন। তিনি বলেন, ‘বৃহস্পতিবার প্রতীক বরাদ্দ পেয়েছি। এখনো প্রচার শুরু করিনি। আমার জন্য নির্বাচনী ক্যাম্প নির্মাণ হলে অবশ্যই আমাকে জানানো হতো। এটি ভিত্তিহীন অভিযোগ।’

বীরগ্রাম বাজারের একাধিক ব্যবসায়ী বলেন, এখন যাঁরা মহাসড়কের জায়গায় অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করছেন, তাঁরাই এত দিন বাজারে সরকারি জায়গায় অবৈধভাবে ঘর তুলে দখলে রেখেছিলেন। এতে বাজারের বৈধ ব্যবসায়ীরা আর্থিক ক্ষতির শিকার হয়েছেন।

জানতে চাইলে যুবলীগের নেতা বিপ্লব হোসেন বলেন, তিনি বীরগ্রাম বাজার বণিক সমিতির সভাপতি পদেও রয়েছেন। সওজের উচ্ছেদ করা জায়গায় তাঁর ব্যক্তিগত কার্যালয়ও ছিল। তাঁর দাবি, তিনি নতুন করে কোনো স্থাপনা নির্মাণ করেননি। তবে ভেঙে ফেলা ঘরের ইটসহ নির্মাণসামগ্রী এখনো সওজের জায়গায় রয়েছে। এ ছাড়া ভেঙে ফেলা ঘরে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা অস্থায়ীভাবে ঘর তুলে ব্যবসা করছেন। একে কোনোভাবেই দখল বলা যাবে না।

জানতে চাইলে সওজ বিভাগের বগুড়া কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুজ্জামান বলেন, মহাসড়কের জায়গায় অবৈধভাবে গড়ে তোলা স্থাপনা উচ্ছেদ করার পর আবারও তা দখল করা হচ্ছে বলে বীরগ্রাম বাজারের ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। উচ্ছেদ করা জায়গা নতুন করে দখলের প্রমাণ মিললে মামলা দায়েরসহ অবৈধ স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেওয়া হবে।