সালমা আক্তার খুনের প্রধান আসামি ফোরকান এখনো পলাতক

যাত্রাবাড়ী এলাকায় সালমা আক্তার হত্যার ২০ দিন পেরিয়ে গেলেও মামলার প্রধান আসামি ফোরকানকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। পুলিশের দাবি, অসামাজিক কাজে রাজি না হাওয়ায় ৩৮ বছর বয়সী সালমাকে হাতুড়িপেটা করে হত্যা করে পালিয়ে যান ২০ বছরের যুবক ফোরকান। তবে ফোরকান একা নন, রাবেয়া (৩৫) নামে আরেক নারীও সালমা হত্যায় জড়িত ছিলেন। ঘটনার পর রাবেয়া ও আবুল কালাম (৫০) নামে আরেক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন রাবেয়া।

গত ১০ ফেব্রুয়ারি যাত্রাবাড়ীর উত্তর কুতুবখালী এলাকার পঞ্চম তলার ভবনের একটি ফ্ল্যাট থেকে সালমা আক্তারের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় যাত্রাবাড়ী থানায় হত্যা মামলা করেন সালমার মামা জাহাঙ্গীর হোসেন।

মামলার এজাহারে বাদী জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, তিন বছর আগে বিবাহবিচ্ছেদের পর আবুল কালামের সঙ্গে কুতুবখালীর একটি ফ্ল্যাটে থাকতেন তাঁর ভাগনি সালমা। গত ১০ ফেব্রুয়ারি সালমাকে হত্যার খবর শোনেন তিনি। পরে ঘটনাস্থল সালমার ফ্ল্যাটের বাইরে দরজা বন্ধ দেখতে পান জাহাঙ্গীর। এ সময় ওই বাড়ির মালিকের ছেলেকে নিয়ে দরজা ধাক্কা দিলে ভেতর থেকে রাবেয়া ফ্ল্যাটে সালমার লাশ থাকার কথা জানান। পরে পুলিশ এসে দরজা ভেঙে ওই ফ্ল্যাট থেকে সালমার রক্তাক্ত লাশ এবং আহত অবস্থায় রাবেয়াকে উদ্ধার করে।

সালমা ও রাবেয়াকে দিয়ে ফ্ল্যাটটিতে অসামাজিক কাজ করাতেন আবুল কালাম। এ কথা জানিয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা যাত্রাবাড়ী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জুলফিকার আলী প্রথম আলোকে বলেন, আট মাস আগে কুতুবখালীর ফ্ল্যাটটি স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে ভাড়া নেন আবুল কালাম ও সালমা। কিন্তু সেখানে সালমা ও রাবেয়াকে দিয়ে অসামাজিক কার্যকলাপ চালাতেন আবুল কালাম। এ কাজে সহযোগিতা করতেন ফোরকান।

এসআই জুলফিকার আলী বলেন, ফোরকান ঘটনার দিন রাতে সালমাকে অনৈতিক সম্পর্কের প্রস্তাব দেন। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে ঝগড়া হয়। রাত দুইটার দিকে ফোরকান হাতুড়ি দিয়ে সালমার মাথায় আঘাত করেন। ফোরকানের প্ররোচনায় রাবেয়াও সালমার মাথায় আঘাত করেন। সালমাকে খুন করার পর বাইরে থেকে তালাবদ্ধ করে ফোরকান পালিয়ে যান বলে রাবেয়া আদালতে জবানবন্দিতে জানিয়েছেন। সালমা হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার আবুল কালাম একসময় সদরঘাটে শ্রমিকের কাজ করতেন। ফোরকানের সঙ্গে সেখানে তাঁর পরিচয়। তবে ফোরকানের পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা জানাতে পারেননি এসআই জুলফিকার।
আদালতে দেওয়া পুলিশের প্রতিবেদনে সালমা হত্যায় ফোরকানসহ রাবেয়া ও আবুল কালামের জড়িত থাকার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী ওয়াজেদ আলী প্রথম আলোকে বলেন, সালমা আক্তার খুনের প্রধান আসামি ফোরকানকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।